এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > সমালোচনায় বিদ্ধ হতেই রাস্তায় নাম বন্ধ করে বড়সড় বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের!

সমালোচনায় বিদ্ধ হতেই রাস্তায় নাম বন্ধ করে বড়সড় বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের!


করোনাকে প্রতিহত করতে প্রথম থেকেই ময়দানে নেমে লড়াই চালাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামাজিক দূরত্ব অবলম্বন করতে বলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা গেছে রাস্তায় নামতে। বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন হোক বা রাস্তায় গন্ডি কাটা, হাসপাতাল পরিদর্শন হোক কিংবা রাস্তা পরিষ্কার করা, বিভিন্ন কর্মসূচিতে শামিল হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান।

তবে বিরোধীদের পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পদক্ষেপ নিয়ে নানা সমালোচনা করা হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, একজন মুখ্যমন্ত্রীর কি এটা কাজ? যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে কেন মুখ্যমন্ত্রী রাস্তায় নেমে এই নিয়ম অমান্য করছেন? তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিন্দুকদের কথার কখনই ধার ধারেন না। কিন্তু এবার সেই নিন্দুকদের সমালোচনায় বিদ্ধ হয়ে কিছুটা সচেতন হতে দেখা গেল পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধানকে।

মঙ্গলবারের মত বুধবারও কলকাতার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে গাড়ির ভেতর থেকেই মাইকিং করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মঙ্গলবার যেভাবে তিনি রাস্তায় নেমেছিলেন, বুধবার আর সেই ভুল করলেন না। সূত্রের খবর, এদিন বিকেল চারটে দশ নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় প্রথমে যায় খিদিরপুর মোড়ে। আর সেখানে গাড়ির ভেতর থেকেই মাইক করে এলাকাবাসীদের উদ্দেশ্যে হিন্দি এবং বাংলায় সচেতন থাকার আবেদন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, “আপনারা আরও কয়েকটা দিন বাড়িতে থাকুন। আপনাদের কষ্ট হবে। কিন্তু পরিবারের জন্য এবং করোনাকে জয় করার জন্য এই লড়াই করতে হবে। দোকানপাট বন্ধ। কাজে যেতে পারছেন না। কিন্তু কি করা যাবে! সামনে রমজান আসছে। আপাতত ঘরই মন্দির, ঘরই মসজিদ, ঘরই গুরুদ্বার। আমরা চাই ঈদের আগে করোনা চলে যাক। দুর্গাপূজার আগে করোনা চলে যাক।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর খিদিরপুর মোড়ে বক্তব্য রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্কসার্কাস 4 নম্বর সেতুর কাছে গিয়ে গাড়ি থামিয়ে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। এখানে রাস্তার ধারে আগে থেকেই মাইক লাগানো ছিল। গাড়ির ভেতরে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এর আগে কখনও শুনিনি লকডাউন। কেমন হয়, দেখিনি। এই প্রথমবার শুনলাম, দেখলাম। কিন্তু করোনাকে জয় করতে হলে আমাদের বাড়িতে থাকতেই হবে।”

তবে লকডাউন নিয়েই শুধু নিজের বক্তব্য নিয়েই থেমে থাকেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে করোনাকে জয় করতে গেলে কি কি করতে হবে, তাও গাড়ি থেকে মাইকের মাধ্যমে বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মাস্ক ব্যবহার করুন। এক জায়গায় জড়ো হবেন না। বাইরে থেকে ঘরে আসার পরে শুধু জামাকাপড় নয়, জুতোও ধুতে হবে।” এদিকে করোনা হলে কেউ যাতে কাউকে দূরে সরিয়ে না দেন, মানসিক দূরত্ব যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য এদিন বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, “করোনা হলে লজ্জা পাওয়ার কারণ নেই। যেভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছি, তাতে আমারও করোনা হতে পারে। ববির হতে পারে। পুলিশ কমিশনারের হতে পারে। হলে ট্রিটমেন্ট করতে হবে। অনেক রোগী ভালো হয়ে গিয়েছে। তবে শ্বাসকষ্ট হলে বেশি অপেক্ষা করবেন না।” আর মোড়ে মোড়ে গাড়ি থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য দেওয়ায় এদিন অনেক বাড়ির ছাদ থেকে তা শুনতে দেখা যায় সাধারণ মানুষদের। অনেকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শোনার পর হাততালিও দেন।

তবে সবটাই গাড়িতে বসেই সেরেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অর্থাৎ আগের দিন তিনি বাইরে বেরিয়ে আসায় তিনি কতটা দায়িত্ব পালন করছেন, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। আর তাই মঙ্গলবার যে ভুল তিনি করেছিলেন, বুধবার সেই ভুলে পা বাড়ালেন না পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাস্তায় নামলে কেউ যদি বলে লকডাউন ভাঙছি। তাই রাস্তায় নামলাম না। আপনাদের কাছে যেতে পারলাম না বলে আমি দুঃখিত।”

একই সঙ্গে তিনি জানান, “ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি লকডাউন ভাঙছি না। আপনারাও লকডাউন ভাঙছেন না। বাড়িতে থাকুন। পরিবারের সঙ্গে থাকুন।” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এতদিন রাস্তায় নেমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করলেও, তিনি কেন প্রশাসনিক প্রধান হয়ে রাস্তায় নামছেন, তা নিয়ে বিরোধিতা প্রশ্ন তুলেছিল। তাই এবার নিজে থেকেই যাতে সচেতনতা তৈরি হয়, তার জন্য গাড়িতে বসে থেকেই সাধারণ মানুষকে বার্তা নিয়ে সচেতন করার চেষ্টা করলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!