এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফরে হাজার হাজার মানুষের ভিড়, ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল

মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফরে হাজার হাজার মানুষের ভিড়, ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল


 

2011 সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর অত্যন্ত দক্ষতার সহকারে পাহাড় সমস্যার সমাধান করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কট্টর মমতা বিরোধীরাও সেকথা এক বাক্যে স্বীকার করে নেন। আর পাহাড় সমস্যা সমাধানের পরেই উন্নয়নের ডালি নিয়ে বারবার সেই দার্জিলিঙে পৌঁছে গেছেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।

কিন্তু এবারের লোকসভা নির্বাচনে সেই পাহাড়ে তৃণমূলের ভোটব্যাংক ধ্বসে পড়া এবং বিজেপি প্রার্থীর জয়লাভ প্রবল চিন্তায় ফেলেছে তৃণমূলকে। এত উন্নয়ন করা সত্ত্বেও কেন পাহাড় মুখ ফিরিয়ে নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে! তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাও।

তবে লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর যখন গত সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রীর আসছিলেন, ঠিক তখনই পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছিল। কারণ যেভাবে লোকসভা নির্বাচনে এখানে বিজেপি প্রার্থী জয়লাভ করেছেন, তাতে অতীতে মুখ্যমন্ত্রী আসার সময় যেভাবে পাহাড়বাসী তরফে তাকে স্বাগত জানানো হচ্ছিল, সেটা আবার হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন তারা।

কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ যখন মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি কার্শিয়াং সার্কিট হাউসের দিকে প্রবেশ করল, ঠিক তখনই মুখের হাসি যেন চওড়া হল পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের। দেখা যায়, এদিন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কনভয় যখন শুকনা মিলিটারি ক্যাম্পের রাস্তা ধরে রোহিনীর পথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, সেই সময় শিমুলবাড়ী মোড়ে হাজার হাজার মানুষ সেই মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে আছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

নিজেদের চিরাচরিত পোশাক পড়ে নেপালি ভাষায় হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অনেকে যেমন মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাচ্ছেন, তেমনই অনেকের গলায় আবার শোনা যাচ্ছে, “দিদি, আপনাকে বারবার পাহাড়ে আসতে হবে।” পাহাড়ের গভীর অন্ধকার রাস্তায় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় যাওয়ার সময় তাঁকে এক ঝলক দেখতে পাওয়ার আশা এদিন কম ছিল না পাহাড়বাসীর মধ্যে।

গভীর অন্ধকারে শীতের রাতে নিজেদের মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাচ্ছিলেন তারা। তবে কার্শিয়াং জিরো পয়েন্ট থেকে ডানদিকে যে রাস্তাটা সার্কিট হাউসে দিকে গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীকে দেখার জন্য সেই রাস্তায় এতটাই জনতার ভিড় ছিল যে, সেখানে গাড়ি যাওয়া প্রায় দুঃসহ হয়ে উঠেছিল। পরবর্তীতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে করমর্দন করতে করতে হাসিমুখে নমস্কার জানাতে জানাতে সার্কিট হাউসে প্রবেশ করেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান।

কিন্তু যে পাহাড়বাসী কিছুদিন আগে সমাপ্ত হওয়া লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে সেইভাবে সমর্থন দেয়নি, সেই পাহাড়বাসীর এত ভিড় মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে! তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি! আর তারই প্রতিফলন লোকসভা নির্বাচনের কিছুদিন পরেই সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে আসতেই পাহাড়বাসী প্রমাণ করে দিলেন?

অনেকে বলছেন, আসলে হয়ত বা পাহাড়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের প্রতি রাগের কারণেই লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিঙে তৃণমূলের এরকম ফলাফল হয়েছে। তাই তার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তাকে কোনভাবেই গোলানো উচিত হবে না বলে মনে করছেন একাংশ।

আর তাইতো সেদিক থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ে আসতেই তাকে ঘিরে পাহাড়বাসীর উন্মাদনা এদিন প্রবলভাবে চোখে পড়ল। এদিন এই প্রসঙ্গে দার্জিলিংয়ের জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর জনসম্মোহনী ক্ষমতা একচুলও কমেনি।”

কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মনে এখন একটাই প্রশ্ন, প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে পাহাড়ের মানুষের জন্য উন্নয়নের ডালি নিয়ে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখবার জন্য সাধারণ মানুষ রাস্তায় লাইন দিয়ে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে থাকলেও লোকসভা নির্বাচনে এখানে যেভাবে তৃণমূল ধ্বসের মুখে পড়েছে, সেই ধ্বস কি অব্যাহত থাকবে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে! এখন সেদিকেই লক্ষ্য সকল রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!