বেশি পাকামো মেরো না, নিজেরা এলাকায় গিয়ে সার্ভিস দাও – তীব্র ক্ষোভ উগরে কাকে বললেন মুখ্যমন্ত্রী? বিশেষ খবর মেদিনীপুর রাজ্য December 6, 2018 কার্তিক গুহ, পশ্চিম মেদিনীপুর:- বিভিন্ন এলাকায় বিধায়ক থেকে শুরু করে ব্লক নেতাদের যে জনসংযোগ কমছে তা ভালই জানেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে এ নিয়ে একাধিকবার সতর্কও করেছেন তিনি দলীয়স্তরে। মঙ্গলবার, পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে প্রশাসনের কর্তা থেকে বিধায়ক, সবাইকে ধমক খেতে হলো মুখ্যমন্ত্রীর। শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোকে তো সরাসরি বলেই দিলেন, “বেশি পাকামো মেরো না – নিজেরা এলাকায় গিয়ে সার্ভিস দাও”! কয়েক দিন আগেই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বন্যপ্রাণীর আক্রমণে কারও মৃত্যু হলে সরকার দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে। এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকের মাঝেই শালবনির তৃণমূলের বিধায়ক উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, “সরকার বলেছিল বন্যপ্রাণীর আক্রমণে কারও মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণের সঙ্গে চাকরি দেবে”। তখনই রেগে যান মুখ্যমন্ত্রী -বলেন, “কিচ্ছু জানো না”! তবে, শুধু শালবনির বিধায়ক নন। ধমক খাওয়ার তালিকায় এ দিন নাম উঠেছে কেশিয়াড়ির বিধায়ক পরেশ মুর্মুরও। তাঁকে এ দিন দিদি বলেন, “এত দাও দাও বলো কেন? এত দেওয়ার পরও তো হেরেছ। আগে জেতো তারপর দাও দাও বলবে”। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে কেশিয়ারীতে প্রশাসনিক সভা থেকেই বিজেপিকে নিশানা করে তিনি জানিয়েছিলেন, সাহস ভালো – দুঃসাহস নয়! রাজ্যে কোন অশান্তি তাঁর সরকার বরদাস্ত করবে না। তারপর আজই পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ লাইনে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। পুরোনো মেজাজেই মুখ্যমন্ত্রীর নানা প্রশ্নের সামনে দাঁড়াতে হয় ওই জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের। মানুষের উন্নয়ন যাতে স্তব্ধ না হয় সেই জন্য প্রশাসনিক বৈঠকে কড়া মনোভাব প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিককে তিনি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য পরিষেবায় যাতে কোন দুর্নীতি না হয় – কাউকে যেন সরকারী হাসপাতালে টাকা দিয়ে চিকিৎসা না করতে হয়। কেউ কেউ সরকারী হাসপাতালের বেসরকারীকরণ নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাছে।সেইদিকেও নজর দিতে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, প্রয়োজনে স্থানীয় বিধায়ক, জেলাশাসকের সাথে বৈঠক করে সমস্ত সম্যসার সমাধান করে নিতে হবে। তার পাশাপশি জেলা প্রশাসনের বৈঠকে বালি খাদান নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি পুলিশ সুপারকে জানিয়েছেন, বেআইনি সমস্ত বালি খাদান বন্ধ করে দিতে হবে। প্রশাসনকে আরো কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। বালি পাচারের সাথে যুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। উত্তরপ্রদেশের গো-রক্ষার নামে যে ইনস্পেকটর খুন হয়েছেন তাঁর প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, পুলিশকে সবসময় নজর রাখতে হবে যাতে কোথাও কোন হিংসার ঘটনা না ঘটে। তিনি আরও বলেন – কারণ, এক শ্রেনীর লোকেরা হিংসার মধ্যে দিয়ে বাংলায় আগুন জ্বালাতে চাইছে। তাদের মোকাবিলা করুক প্রশাসন।শুধু তাই নয় গ্রামীন রাস্তায় ওভারলোডিং লরি চলাচল নিয়েও বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখমন্ত্রী। জানা গিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিম মেদিনীপুরে পৌছানোর পরেই জেলার এক তৃণমূল নেতা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন যে ভিন রাজ্যের লরি রাজ্যে ঢুকে টোলট্যাক্স ফাঁকি দিতে বেছে নিচ্ছে গ্রামের কাঁচা রাস্তা। সেই কথা শুনেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে ছিলেন এটা বরদাস্ত নয়। সেইমত ঐদিন প্রশানিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশ দেন যে টোল ফাঁকি দিয়ে ওভারলোডেড কোন গাড়ি গ্রামের রাস্তায় যাতে না ঢোকে – সেই বিষয়ে নজর রাখতে হবে। এমনকি টোল ফাঁকি দিলে জরিমানাও করতে হবে। ইতিমধ্যেই, রাজ্য পরিবহন দফতরকেও বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া দাওয়াই জেলার উন্নয়নকে আরো বাড়িয়ে তুলবে বলেই মনে করছে প্রশাসনিক কর্তারা। আপনার মতামত জানান -