এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > করোনা আবহে হাত ধরাধরি কংগ্রেস-তৃণমূলে! মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা করতে চান দুই দলের কর্মীরাই

করোনা আবহে হাত ধরাধরি কংগ্রেস-তৃণমূলে! মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা করতে চান দুই দলের কর্মীরাই


করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশজুড়ে মার্চের শেষ দিক থেকে শুরু হয় লকডাউন। দফায় দফায় এই লকডাউন বাড়তে বাড়তে এই মুহূর্তে দেশ লকডাউন এর চতুর্থ পর্যায়ের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। লকডাউন চলাকালীন দেশের সমস্ত অফিস কাছারি, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। আর এর ফলে সবথেকে সমস্যায় পড়েন দিন আনা দিন খাওয়া গরিব মানুষগুলি। তাঁদের মধ্যেই পরে পরিযায়ী শ্রমিকের দল। কর্মসূত্রে নিজের বাড়ি নিজের রাজ্য ছেড়ে তিন রাজ্যে গিয়ে কাজ করতেন তাঁরা।

পরিস্থিতির ফলেই তাঁরা কাজ হারান। হাতে টাকা পয়সাও শেষের দিকে চলে আসে। এর ফলে প্রত্যেকেই অস্থির হয়ে পড়েন বাড়ি ফেরার জন্য। এই অবস্থায় বিভিন্ন জায়গা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা হাঁটতে শুরু করেন। তাঁরা যেনতেন প্রকারেণ নিজ বাসভূমে ফেরার চেষ্টা চালিয়ে যান। এই অবস্থায় ক্লান্তিতে রাস্তাতেই মৃত্যু হচ্ছে অনেকের বলে জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ভিন রাজ্য থেকে এসে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ করেন। তাঁরাও পড়েছেন চরম সমস্যায়।

এরকমই সমস্যায় পড়েছিলেন ইছাপুর এ কাজ করতে আসা প্রায় 50 জন পরিযায়ী শ্রমিকদের একটি দল। কিন্তু এক্ষেত্রে রাজনৈতিক হানাহানি ভুলে সমস্ত রাজনৈতিক দল একজোট হয়ে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের দায়িত্ব তুলে নেয় নিজেদের কাঁধে। এবং তাঁদের নিজেদের রাজ্যে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক সহযোগিতায় এরকমই ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে কাজ করতে আসা 50 জন পরিযায়ী শ্রমিককে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন সংস্থার বাসে করে তাঁদের রাজ্য বিহার, ঝাড়খন্ড পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জানা গেছে উক্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা লকডাউন এর মধ্যেই কাজ হারিয়েছিলেন এবং আটকে পড়েছিলেন। জমানো টাকাও শেষ হয়ে গিয়েছিল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অনাহারেই প্রায় দিন কাটছিল তাঁদের। তাঁদের কথা জানতে পেরে নোয়াপাড়া তৃণমূল কংগ্রেস এবং নোয়াপাড়া যুব কংগ্রেসের কর্মীরা একজোট হয়ে তাঁদের পাশে এসে দাঁড়ান। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে তাঁদেরকে দুবেলা-দুমুঠো খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। তবে ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের সুস্থভাবে বাড়ি ফেরানোর জন্য উঠেপড়ে লাগে দুই রাজনৈতিক দলের কর্মীরা। তাঁরাই প্রশাসনের সঙ্গে গিয়ে কথা বলেন। অন্যদিকে প্রশাসনও তাঁদের সাথে হাত মিলিয়ে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার দুটি বাসের মাধ্যমে ঐ শ্রমিকদের নিজ রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, শ্রমিকরা নিজেদের রাজ্যে, নিজেদের বাড়িতে ফিরতে পারবে জেনে অত্যন্ত খুশি হয়ে বলেন, “আমাদের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে ঠিকমত খেতেও পাচ্ছিলাম না। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ও কংগ্রেসের কর্মী দাদারা আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন। আর পুলিশ প্রশাসনকেও অনেক ধন্যবাদ জানাই আমাদেরকে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।” অন্যদিকে শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর পর তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী এবং কংগ্রেস কর্মীরা একযোগে বলেন, “এখন যা পরিস্থিতি তাতে রাজনীতিকে দূরে রেখে মানবিকতা কে সামনে রেখে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমরা সবাই মিলে তাই করেছি। আমরা চাই পরিযায়ী শ্রমিকরা নিরাপদে তাদের বাড়ি ফিরে যান।”

অন্যদিকে যেভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে এসে দাঁড়িয়ে ভেদাভেদ ভুলে রাজনৈতিক কর্মীরা তাঁদের বাড়ি ফেরানোর চেষ্টা চালিয়েছেন এবং সেই চেষ্টা যেভাবে ফল লাভ করেছে তা পর্যবেক্ষণ করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনায় প্রমাণ হচ্ছে যদি কেউ ইচ্ছা করে তাহলে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতেই পারে। তাতে কোনো দলই বাধা সৃষ্টি করবে না। শাসক-বিরোধী দল মিলে যে কাজ করেছে তা নিয়ে উচ্ছ্বসিত দুই রাজনৈতিক দল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!