খাতায়-কলমে কংগ্রেস বিধায়ক দলের শীর্ষে! মানতে পারছেন না তৃণমূল কর্মী- সমর্থকরাই! বাড়ছে জল্পনা উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য July 24, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –2016 সালে কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে গঙ্গারামপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছিলেন তিনি। পরবর্তীতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তৎকালীন জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্রের হাত ধরে ঘাসফুলে নাম লেখান গৌতম দাস। তবে তৃণমূলে থাকলেও এখনও পর্যন্ত খাতায়-কলমে তিনি কংগ্রেসের বিধায়ক। আর এবার সেই গৌতমবাবুকেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর খাতায় কলমে কংগ্রেস বিধায়ক থেকে কেন তিনি জেলার সভাপতি হলেন, এখন তা নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের অন্দর মহলে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বস্তুত, লোকসভা নির্বাচনের পর বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের খারাপ ফলাফল হলে বিপ্লব মিত্রকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। দায়িত্ব দেওয়া হয় বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে। কিছুদিন আগেই অর্পিতাদেবীর হাত ধরে জেলা কার্যকরী সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হওয়া দেবাশিস মজুমদার এবং শুভাশিস পালকে সরিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় এই গৌতম দাসকে। আর তারপর থেকেই জল্পনা চলছিল, তাহলে কি এবার অর্পিতা ঘোষকে চাপে রাখতে গৌতম দাসকে সামনের সারিতে নিয়ে আসা হল? তবে এত তাড়াতাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সাংগঠনিক রদবদল হবে, তা কেউ কল্পনাও করতে পারেননি। অবশেষে বৃহস্পতিবার সাংগঠনিক বৈঠক থেকে গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সেই গৌতম দাসকে জেলা তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাভাবিক ভাবেই অর্পিতা ঘোষকে সরিয়ে দিয়ে গৌতমবাবুকে জেলার সংগঠনের একদম শীর্ষে রাখা নিয়ে এখন তৃণমূলে ব্যাপক চাপানোউতোর সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, গৌতমবাবু তৃণমূলে যোগদান করেছেন ঠিকই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত খাতায়-কলমে তিনি কংগ্রেসের বিধায়ক। ফলে কংগ্রেসের বিধায়ক হয়ে সিপিএমের ভোটে জিতে এখন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। যা কিছুটা হলেও মানতে দ্বিধা বোধ হচ্ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। অনেকে আবার বলছেন, হাতে আর মাত্র এক বছরের কম সময় বিধানসভা নির্বাচন। যেভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত, তাতে এখন সভাপতি পরিবর্তন করে দিলে গৌতমবাবু আদৌ সামাল দিতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, “যিনি খাতায়-কলমে এখনও কংগ্রেসের বিধায়ক, যিনি তৃণমূল দলকে এখনও চিনতে পারলেন না, যিনি দলের সংগঠন বুঝলেন না, তার মত নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, জেলায় তৃণমূলকে বিজেপির হাতে তুলে দেওয়া।” তবে গৌতম দাসকে সভাপতি করা হলেও তার মাথায় চেয়ারম্যান হিসেবে রাখা হয়েছে জেলা তৃণমূলের বর্ষিয়ান নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শংকর চক্রবর্তীকে। কিন্তু অর্পিতা ঘোষ ধীরে ধীরে জেলাটাকে সাজিয়ে নিয়েছিলেন। তাই বিধানসভা নির্বাচনের যখন আর কিছুদিন বাকি, তখন সেই অর্পিতাদেবীকে সরিয়ে নবাগত গৌতম দাসকে দায়িত্ব দেওয়ায় নতুন করে জেলায় বিরম্বনা বাড়বে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও বা এই প্রসঙ্গে নতুন দায়িত্ব পাওয়া গৌতম দাস বলেন, “বড় পরিবারের ছোটখাটো সমস্যা থাকেই। তৃণমূল বড় পরিবার। সব সমস্যা কাটিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাব। মাথার উপরে চেয়ারম্যান হিসেবে শংকর চক্রবর্তী রয়েছেন। অর্পিতাদি রয়েছেন। সবার পরামর্শ মেনে কাজ করব।” সব মিলিয়ে খাতায়-কলমে এখনও কংগ্রেসের বিধায়ক থাকা গৌতম দাস তৃণমূলের জেলা সভাপতি হওয়ায় তাকে নেতাকর্মীরা কতটা মেনে নেন আর যদিও বা মেনে নেন তাহলে গৌতম দাস কতটা সাফল্যের সঙ্গে জেলায় পরিচালনা করতে পারেন! সেদিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। আপনার মতামত জানান -