এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > তৃণমূলী হলেই অবাধে ত্রাণ বিলিতে অনুমতি, বিজেপি হলেই আটকে দেবে প্রশাসন? শুরু তীব্র বিতর্ক

তৃণমূলী হলেই অবাধে ত্রাণ বিলিতে অনুমতি, বিজেপি হলেই আটকে দেবে প্রশাসন? শুরু তীব্র বিতর্ক

করোনা মহামারীতে রাজনীতির প্রভাব এসে পড়ল শান্ত শহর বলে পরিচিত বালুরঘাটে। নাটকের শহর বালুরঘাট সংস্কৃতি মনোভাবাপন্ন মানুষের বাস বলেই পরিচিত। বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ উঠছে যে, তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা ত্রাণ বিলি করার সুযোগ পেলেও, বিজেপির জনপ্রতিনিধি হয়ে তার সুযোগ পাচ্ছেন না অনেকে। আর এবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় হিলি সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হল বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে।

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার সকাল দশটার সময় সুকান্তবাবু নিজের দুই সঙ্গীকে নিয়ে হিলির গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। কিন্তু তার গাড়ি মঙ্গলপুর 512 নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে কেজি স্কুলের সামনে যেতেই পুলিশের নাকা চেকিং শুরু হয়। আটকে যায় বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদের গাড়ি। পরবর্তীতে থেকে গাড়ি নেমে কেন তাকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না! তার ব্যাপারে পুলিশকে প্রশ্ন করলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এখন এভাবে যেতে দেওয়ার নিয়ম নেই।

আর এতেই শুরু হয়ে যায় চাঞ্চল্য। কেজি স্কুলের সামনে গাড়ি রেখে রাস্তায় চেয়ার নিয়ে সেখানে বসে পড়েন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। তিনি অভিযোগ করেন, বুধবার হিলি সীমান্তের বর্ডার এলাকায় গিয়ে ত্রাণ বিলি করে এসেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। তাহলে তিনি বালুরঘাটের জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের ভোটে জিতে কেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবেন না! জানা যায়, এদিন এই গোটা ঘটনা রাজ্যপালকে জানান সুকান্ত মজুমদার।

সুকান্তবাবু বলেন, “পুলিশ প্রশাসন তৃণমূলের নির্দেশেই এই ধরনের ভূমিকা পালন করল। তৃণমূল মহিলা বাহিনী পাঠিয়েছিল আমাকে হেনস্থা করতে। জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ আগেরদিন বর্ডারে গিয়েছিলেন। তাকে কিভাবে যেতে দেওয়া হল! আমি বিস্তারিত রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়েছি।” এদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, সুকান্ত মজুমদার কিছুদিন আগেই দিল্লি থেকে বালুরঘাটে এসেছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সরকারি নিয়মাবলী অনুযায়ী তার চৌদ্দদিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা উচিত। কিন্তু তিনি তা না করে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এদিন এরও জবাব দেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, “23 মার্চ দিল্লি থেকে আসার পর আমার 14 দিন শেষ হয়েছে। তার পরেও মহকুমাশাসক একটি চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন, আমাকে আবার 14 দিনে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। প্রশাসন অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমি এই নিয়ে আইনি জবাব দেব।”

তবে প্রশ্ন একটা উঠছে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি যেখানে সীমান্ত এলাকায় ত্রাণ বিলি করার সুযোগ পান, সেখানে বিজেপি সাংসদ কেন তা পাচ্ছেন না? এদিন এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, “আমি বর্ডারের গ্রামগুলিতে গিয়েছিলাম জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে। সেই অনুমতি চিঠি আমার কাছে আছে। সুকান্তবাবু লিখিত আবেদন জানিয়ে অনুমতি নিয়ে বর্ডারে যেতে পারবেন। সাংসদ বলেই তিনি যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারেন না কিংবা যা খুশি করতে পারেন না।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বালুরঘাট নয়, জলপাইগুড়ি থেকে শুরু করে ব্যারাকপুর, বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা ত্রাণ বিলি করতে গেলে তাদেরকে পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। আর বিজেপি নেতারা এখানেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন – তাহলে কি তৃণমূলের ক্ষেত্রে আইন এক এবং বিরোধীদের ক্ষেত্রে আইন আরেক? কেন এইভাবে লাগাতার বেছে বেছে বিজেপির জনপ্রতিনিধিদেরই আটকানো হচ্ছে?

অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান সময়টা একেবারেই রাজনীতির সময় নয়। কিন্তু সেখানে যদি বারবার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বেশি উঠে আসতে শুরু করে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, সেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। আর এদিন সেই প্রশ্ন তুলে ধরেই সোচ্চার হলেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। এখন গোটা ঘটনা কোথায় গিয়ে মোড় নেয়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!