এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > মৃৎশিল্পীদের তৈরি ভবন এখন বিয়েবাড়িতে ভাড়া খাটছে! প্রশ্ন সরকারের উন্নয়ন নিয়ে!

মৃৎশিল্পীদের তৈরি ভবন এখন বিয়েবাড়িতে ভাড়া খাটছে! প্রশ্ন সরকারের উন্নয়ন নিয়ে!


কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি বরাবরই মৃৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত। রাজ্য এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, বিশ্বের অনেক জায়গা থেকেও শিল্প অনুরাগী মানুষ মৃৎশিল্পের টানে ভিড় জমায় এই ঘূর্ণিতে। তাই মৃৎশিল্পীদের কাজের সংগ্রহশালা নির্মাণের উদ্দেশ্যে এবং কৃষ্ণনগরের পর্যটনকে বিখ্যাত করার লক্ষ্যে 2013 সালের 17 ডিসেম্বর কৃষ্ণনগরে মৃত্তিকা ভবন নির্মাণের শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই খাতে সরকারের তরফ থেকে 2 কোটি 30 লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।

পরবর্তীতে 2015 সালে 18 মে কাজ সম্পন্ন হয়ে মৃত্তিকা ভবনের উদ্বোধন করেন তদানীন্তন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যদিও সেই সময় উদ্বোধন হলেও মৃত্তিকা ভবন চালু হয়নি। বরং দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলতে থাকে। ভবন থেকে শুরু করে শিশু উদ্যান, ফুডকোর্ট প্রভিতি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে সেই কাজ শেষ হয়েছে। যথারীতি ভবনের সংগ্রহশালাকে রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের তরফ থেকে জেলা পরিষদকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পর্যটন দপ্তরের মহতী যোজনার অন্তর্গত মৃত্তিকা ভবন সম্প্রতি বিয়ে বাড়িতে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।

যা নিয়ে জোরালো বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে কৃষ্ণনগরে। জেলার মৃত্তিকা শিল্পীদের পক্ষ থেকে এবং সাধারণের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে জেলা পরিষদকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। যদিও জেলা পরিষদের বক্তব্য, বিয়ে বাড়ির জন্য ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী রবিবার সেখানে একটি বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছিল। 30000 টাকার বিনিময়ে বিয়েবাড়িতে মৃত্তিকা ভবন ভাড়া দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে জেলা পরিষদ। তবে মৃত্তিকা ভবন উদ্বোধন হলেও অনেক সময় সেই ভবন বন্ধ থাকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কাজেই সম্পূর্ণ বন্ধ থাকার থেকে সুন্দর এই ভবনকে বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়ার মধ্যে কোনরকম অনৈতিকতা দেখতে পাচ্ছেন না জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। বরং টাকার বিনিময়ে অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দিলে ভবনে রক্ষণাবেক্ষণের টাকাটা অন্ততপক্ষে উঠে আসবে বলে মনে করছে একাংশ। এদিন এই বিষয়ে জেলা পরিষদের একজন অধিকর্তা জানিয়েছেন, “অহেতুক সমালোচনা না করে আমাদের উদ্দেশ্যটা বুঝতে হবে। নতুন করে এই জায়গাটার জন্য কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি।

ফলে গেস্টহাউস বা বিয়ে বাড়ির জন্য ভাড়া দিয়ে টাকা পাওয়া যাচ্ছে। তা দিয়ে নানান কাজ করা হচ্ছে।” বস্তুত, মৃত্তিকা ভবন নির্মাণের সময় সেখানে মৃৎশিল্পীদের জন্য সংগ্রহশালা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু জেলা পরিষদের তরফ থেকে স্থল ঘূর্ণির মৃত্তিকা শিল্পীদের কাছে বিতরণ করা হলেও, সেখানে কোনো মৃত্তিকা শিল্পী আসার আগ্রহ দেখায়নি বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদ। তবে মৃত্তিকা ভবনকে সুচারুভাবে চালাতে পুনরায় মৃৎশিল্পীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদ আধিকারিক।

এই বিষয়ে বলতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি সম্মানপ্রাপ্ত মৃৎশিল্পী সুবীর পাল বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে খুবই কষ্ট পেয়েছি। এখনও সংগ্রহশালা হয়নি। কিন্তু যার জন্য এই সবকিছু, তাই হয়ে ওঠেনি। শিল্পের কোনো চিহ্ন নেই। ওখানে যে টাকা দিয়ে বিল্ডিং হয়েছে, তার বিনিময়ে শিল্প সামগ্রী সংগ্রহ করা উচিত ছিল।” একাংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা হস্তশিল্পকে বিশ্বদরবারে সামনে নিয়ে এসে রাজ্যকে সবথেকে শ্রেষ্ঠ করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন।

কৃষ্ণনগর ঘূর্ণিতে নির্মিত মৃত্তিকা ভবন মুখ্যমন্ত্রীর সেই চেষ্টার একটি অঙ্গ। কিন্তু কাদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য রাজ্য সরকারের এত টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবন এবং সংগ্রহশালা প্রকৃত কাজে না লেগে মূলত উৎসব ভবনের মত বিয়ে বাড়িতে ভাড়ার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে! তা নিয়ে তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। এখন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় কিনা! সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!