এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > করোনা-আমপানের জোড়া ধাক্কার মাঝেও খুশখবর বাংলার জন্য! বেঁচে যাচ্ছে এই বিপদের হাত থেকে?

করোনা-আমপানের জোড়া ধাক্কার মাঝেও খুশখবর বাংলার জন্য! বেঁচে যাচ্ছে এই বিপদের হাত থেকে?


সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন অংশে হানা দিয়েছে পঙ্গপালের ঝাঁক। সূত্রের খবর ভারতবর্ষে এর আগে ১৯৯৩ সালে ব্যাপকভাবে পঙ্গপালের আক্রমন হয়েছিল। ঘটনার ২৭ বছর পর ফের দেশের পঙ্গপাল নামক শস্যখাদক পতঙ্গের আক্রমণ দেখা গেল। ছোটবেলায় রবি ঠাকুরের সহজপাঠে পঙ্গপালের কিছু বিবরণ পাওয়া যায়। জানা গেছে ১৯৬১ সালে দেশে পঙ্গপাল আক্রমণের বিবরণ থাকলেও সরকারি ভাবে প্রমাণ করা যায় এমন কোন নথি এই বিবরণের পক্ষে পাওয়া যায়নি।

কিন্তু ফের এত বছর পর পঙ্গপালের হানা দেখা যায় দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে। একেই করোনার প্রকোপ তার ওপর বাংলায় ঘটে গেছে সর্বনাশা ঘূর্ণিঝড় আমফানের ধ্বংসলীলা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বহু চাষী। এরইমধ্যে বাংলায় পঙ্গপাল আক্রমণের দুশ্চিন্তায় কাটাচ্ছেন চাষীরা। তবে জানা গেছে গত বৃহস্পতিবার কৃষি দপ্তরের পতঙ্গ বিদ এবং উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিভাগের কর্তারা বাংলায় পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণের বিষয় একটি বৈঠকে বসেন।

সূত্রের খবর বৈঠকের পর তারা জানিয়েছেন বাংলায় বর্ষা ঢুকতে দেরি করলে এবং মধ্য প্রদেশ ও উত্তর প্রদেশে খাবার না পেলে বাংলায় হানা দিতে পারে পঙ্গপালের ঝাঁক। যদিও ইতিমধ্যেই কৃষি মন্ত্রকের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন পঙ্গপালের আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রক সংস্থা আলোচনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের কৃষি কর্তারা।

প্রাপ্ত সূত্রের তথ্য অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের অধীন ‘লোকাস্ট ওয়ার্নিং অর্গানাইজেশন’-এর ডেপুটি ডিরেক্টর (প্ল্যান্ট প্রোটেকশন) কে এল গুর্জর এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘’এই মুহূর্তে যে ভাবে হাওয়া বইছে, তাতে পঙ্গপালের পশ্চিমবঙ্গে বা পূর্ব ভারতে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, হাওয়া সে দিকে বইছে না। বাংলায় গত তিন-চার দশকে পঙ্গপাল হানা দেয়নি।‘’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এমনকি এই সমস্ত তরফে জানানো হয়েছে গোটা দেশে পঙ্গপাল আক্রমণের বিষয়ের উপর কড়া নজরদারি শুরু হয়ে গেছে। জানা গেছে রাজ্যের কৃষি কর্তারা আশ্বাস দিয়ে বলেছেন বাংলার মাঠে ইতিমধ্যেই রবি শস্য তোলা হয়ে গেছে এমনকি আমফানের তাণ্ডবে অন্যান্য শস্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলত পঙ্গপালের দল বাংলা এসে কোন ফসল পাবে না। অন্যদিকে তারা জানিয়েছেন আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে গোটা রাজ্যে বর্ষা শুরু হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। জানা গেছে তাদের মত অনুযায়ী পঙ্গপাল সাধারণত মরু অঞ্চলের শুকনো আবহাওয়ায় অভ্যস্ত। তাই বাংলায় বর্ষা ঢুকে যাওয়ার কারণে উল্টো হওয়ার তাড়া খেয়ে পঙ্গপালের থর মরুভূমির দিকে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাই থেকে যাচ্ছে।

সূত্রের খবর পঙ্গপালের দলটি পশ্চিমা বাতাসের ধাক্কায় রাজস্থান,পাঞ্জাব,গুজরাট এবং উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাংশে ঢুকেছে। সেখান থেকে তারা দক্ষিণ-পশ্চিম মহারাষ্ট্রের পৌঁছেছে। যেহেতু বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে বাংলায় হাওয়া বইছে তাই হাওয়ার গতিপথ অনুযায়ী পঙ্গপাল বাংলায় ঢুকতে পারবে না বলেই মনে করছেন কৃষি কর্তারা।

প্রাপ্ত সূত্র থেকে জানা গেছে পূর্ব আফ্রিকার সোমালিয়া, ইথিওপিয়া হয়ে লোহিত সাগর পেরিয়ে প্রথম ইরানের মরুভূমি এরপর আফগানিস্তান এবং শেষে পাকিস্তান হয়ে পঙ্গপালের দলটি রাজস্থানের থর মরুভূমির মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করেছে। কৃষি কর্তাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে পঙ্গপালের দল মরুভূমির আবহাওয়া পছন্দ করলেও সাধারণত ভিজে আবহাওয়ায় ডিম পাড়ে।

জানা গেছে তাদের ধারণা অনুযায়ী গত বছর শীতের মরসুমের পর বৃষ্টির সময় এই পঙ্গপালের দল থর মরুভূমিতে বংশবৃদ্ধি করে। জানা গেছে যেহেতু পঙ্গপালের দল মরুভূমির পিজে আবহাওয়ায় ডিম পারে তাই পূর্ণবয়স্ক অবস্থায় এগুলি ফের মরু অঞ্চলে ফিরে যেতে শুরু করবে। জন্মানোর দুমাস পর পঙ্গপাল গুলি গোলাপী বর্ণের হয় এরপর ধীরে ধীরে হলুদ রং ধারণ করে এবং পূর্ণ বয়স্ক হলে এগুলি বংশ বৃদ্ধি করার জন্য ডিম পাড়ে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভল্লা দেশের প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিবদের উদ্দেশ্যে লিখিতভাবে নির্দেশ দিয়েছেন পঙ্গপাল দমনের সঙ্গে যুক্ত কৃষি কর্তা এবং কর্মীদের রাজ্যগুলি যেন পূর্ণ ভাবে সহায়তা করে লকডাউন এর কারনে কোনোভাবেই যেন তাদের রাজ্যের সীমানা আটকে না দেওয়া হয়, এমনটাই সূত্রের খবর।

জানা গেছে অন্যদিকে এক কৃষি কর্তা আশ্বাস দিয়ে দেশবাসীকে জানিয়েছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক ও আক্রান্ত রাজ্যগুলি একযোগে রাসায়নিক ছড়িয়ে পঙ্গপাল নিধনে নেমেছে। তার ফলে পূর্ব ভারতে পৌঁছনোর আগেই তাদের নিয়ন্ত্রণ করে ফেলা সম্ভব হবে।’’ যেহেতু বাংলায় এই মুহূর্তে কোন রকম খাদ্য শস্য মাঠ গুলিতে নেই এবং হওয়ার গতিপথ বাংলার উল্টো দিকে চালিত হচ্ছে তাই এই মুহূর্তে এই রাজ্যে পঙ্গপালের আক্রমণের আশঙ্কা নেই বলেই আশ্বাস দিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। ফলত কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে রাজ্যের কৃষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!