এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > করোনা পরিস্থিতিকেও রেয়াত করল না প্রতারকরা, ইঞ্জেকশন দেবার নাম করে হাতিয়ে নিল টাকা

করোনা পরিস্থিতিকেও রেয়াত করল না প্রতারকরা, ইঞ্জেকশন দেবার নাম করে হাতিয়ে নিল টাকা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – চতুর্দিকে এই মুহূর্তে করোনার ভয়াবহ অবস্থা। না পাওয়া যাচ্ছে অক্সিজেন, না পাওয়া যাচ্ছে হাসপাতালের বেড, না পাওয়া যাচ্ছে ভ্যাকসিন। এরইমধ্যে বেশ কিছু ওষুধ নিয়ে এবং অক্সিজেন নিয়ে শুরু হয়েছে কালোবাজারি। কয়েকটি জালিয়াতি চক্র এই সংকটময় পরিস্থিতিতে নিজেদের আখের গোছানোর ব্যাপারে যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ রেমডেসিভির ইনজেকশন দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আর এরকমই একটি ঘটনা সামনে এসেছে সম্প্রতি। জানা গিয়েছে, হুগলির চন্দননগরের এ রকমই একটি জালিয়াতি চক্র রয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশ এই জালিয়াতি চক্রের হদিশ করে দুজনকে গ্রেপ্তারও করেছে।

করোনার প্রাক্কালে যেটির প্রচন্ড চাহিদা বেড়েছে, সেটি হল রেমডেসিভির ইনজেকশন। আর এই রেমডেসিভির ইঞ্জেকশনকে ঘিরে শুরু হয়েছে একটি জালিয়াতি চক্র। মহারাষ্ট্রের একটি পরিবার করোনা আক্রান্ত হয়ে রেমডেসিভির ইনজেকশনের খোঁজ করছিলেন। সেসময় দুই ব্যক্তি এই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং পরিবারের থেকে টাকাও নেয়। কিন্তু প্রয়োজনমতো ওষুধ এবং ইঞ্জেকশন পৌঁছে দেওয়া হয়না। বরং অভিযুক্তরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা বিভা আগরওয়ালের পরিবারের এক করোনা আক্রান্ত সদস্যের জন্য রেমডেসিভির ইঞ্জেকশনের খোঁজে হোয়াটসঅ্যাপে ভুয়ো চিকিৎসক ডাঃ অন্নু মেহেতার খপ্পরে পড়েন।

মহারাষ্ট্রের ওই পরিবার ভুয়ো ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর অন্নু মেহেতার পক্ষ থেকে বলা হয়, টাকা পেলে দু’টি রেমডেসেভির ভায়েল পৌঁছে দেওয়া হবে। সেই মতন মহারাষ্ট্রের ওই বাসিন্দা ফোন পে দিয়ে 6000 টাকা পাঠান। এরপর প্রতারক তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় বলে জানা গিয়েছে। এবং প্রয়োজনমাফিক ওষুধও ওই পরিবারের কাছে পৌঁছায়না। এরপর বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে বিভা আগরওয়াল জানতে পারেন, চন্দননগরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে তাঁর পাঠানো 6000 টাকা জমা পড়েছে। এরপরে মহারাষ্ট্র থেকে ফোন আসে চন্দননগর থানায়। পুরো ব্যাপারটি জানানো হয় পুলিশকে। অভিযোগ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসে চন্দননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা দপ্তরের পুলিশ।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তদন্ত শুরু করে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হাওড়া থেকে প্রথমে মূল অভিযুক্ত প্রতারক আমন সিং ওরফে ডাঃ অন্নু মেহেতা গ্রেপ্তার হয়। আমন সিং কে জিজ্ঞাসাবাদ করে খোঁজ পাওয়া যায় তার এক শাগরেদ সুমন নাথের। এরপর চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ সুমন নাথকে গ্রেফতার করে দ্রুত। সুমন নাথ চন্দননগরের বাসিন্দা। পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে প্রায় 90 হাজার টাকা উদ্ধার করে। পাশাপাশি যে সিম কার্ড এবং মোবাইল ব্যবহার করা হতো প্রতারণার জন্য, সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ধৃতদের একজনের চন্দননগরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট ছিল। সেই অ্যাকাউন্টে 54,000 টাকা ছিল। পুলিশের নির্দেশে অ্যাকাউন্টি ব্লক করে দেয়া হয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মারফত।

বুধবার ধৃত দুই প্রতারককে চন্দননগর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। আদালতে 7 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ অনুমান করছে এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত আছে। একইসাথে জানা গিয়েছে, বিগত 15 দিন যাবত এভাবেই বিভিন্ন করোনা রোগীর পরিবারের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে গেছে এবং টাকা রোজগার করেছে ধৃত দুজন। খুব স্বাভাবিকভাবে ক্রোনা যেখানে মানুষের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনছে, সেখানেই একশ্রেণীর মানুষের জন্য অসৎ রাস্তা খুলে দিয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওষুধ বা ইনজেকশন এর জন্য হসপিটাল কিংবা পরিচিত ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ না করে কখনো অজানা অচেনা ব্যক্তির কাছে ওষুধ কিংবা ইনজেকশনের খোঁজ করা উচিত নয়। তাতে প্রতারণার সম্ভাবনাই বেশি থাকবে।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!