এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > করোনার জেরে মেলা বন্ধ, গন্ডগোলের জেরে বিরোধীদলের গোষ্ঠীদ্বন্দের ইঙ্গিত

করোনার জেরে মেলা বন্ধ, গন্ডগোলের জেরে বিরোধীদলের গোষ্ঠীদ্বন্দের ইঙ্গিত


এবার মতুয়া মেলাকে কেন্দ্র করে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের ছবি সামনে এলো। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের আতঙ্কে এলাকার কয়েকজন মতুয়া মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়েছিল। সেই সূত্রে আবেদনকারীদের ওপর হামলা করা হয় বলে জানা গেছে। তবে মেলা নিয়ে মারপিটের জেরে ঠাকুরনগরের মতুয়াদের বারুনী মেলা এ বছরের জন্য এক প্রকার স্থগিতই হয়ে গেল। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানা গেছে। সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মতুয়া মেলা বন্ধের দাবিতে ঠাকুরবাড়িতে স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার পথে কয়েকজনের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপির কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা ঠাকুরনগর এলাকায়। আহতদের মধ্যে মলয় মন্ডল এর অবস্থা ইতিমধ্যে বেশ আশঙ্কাজনক। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ যাতে না ছড়ায় এলাকায়, তার জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই এলাকার মলয়, লিটন মৈত্র, বাবলু দাস এর মতন কয়েকজন ব্যক্তি সচেতনতার প্রচার চালাচ্ছিল এবং তাঁরা এ বছরের জন্য মতুয়া মেলা বন্ধের আবেদন করেছিলেন। এ ব্যাপারে তাঁরা মানুষের সই সংগ্রহ করে একটি স্মারকলিপি জমা দিতে জান সোমবার সন্ধ্যেবেলা। ঠাকুরবাড়ির মমতাবালা ঠাকুর ও শান্তনু ঠাকুর এর কাছে।

জানা গেছে, মমতাবালা ঠাকুর তাঁদের স্মারকলিপি গ্রহণ করলেও শান্তনু ঠাকুর এর কাছে তাঁরা এ ব্যাপারে অসহযোগিতা পান। ঠাকুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে তাঁরা যখন বাড়ি ফিরছিলেন, সেসময় বেশ কয়েকজন ব্যক্তি তাঁদের ওপর লাঠি, বাঁশ নিয়ে হামলা চালায়। তাঁদের গাড়িও ভাঙচুর করা হয় বলেও জানা গেছে। প্রহৃতদের চিৎকার শুনে এলাকার মানুষ আসার সঙ্গে সঙ্গেই আক্রমণকারীরা পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। এর পরেই আহতরা সোজা গাইঘাটা থানাতে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে। রাতেই অভিযুক্তদের খোঁজে এলাকায় চিরুনি তল্লাশি শুরু করেন বনগাঁর এসডিপিও অশেষ বিক্রম দস্তিদার ও গাইঘাটা থানার ওসি লিটন রক্ষিত।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, ভোররাতে পুলিশ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতরা হলো উৎপল হালদার, নিলয় সাহা, নিধানেন্দু বিশ্বাস, রাহুল বিশ্বাস ও শুকদেব রায়। পুলিশি সূত্রে জানা গেছে, নিলয় ও রাহুল নিমতা এবং ঘোলা থানা এলাকার বাসিন্দা এবং বাকিরা ঠাকুরনগরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ তরোয়াল, রামদা, প্রচুর লাঠি ও বাঁশ উদ্ধার করেছে। অন্যদিকে বিজেপি নেতা শান্তনু ঠাকুর ধৃতদের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি জানিয়েছেন। তবে তাঁরা অভিযুক্ত নয় বলে তিনি দৃঢ় গলায় বলেছেন। খবর, প্রহৃতদের মধ্যে অনেকেই বিজেপির নেতাকর্মী। যেরকম- বাবলু সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা। ফলে এই ঘটনার পেছনে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বের কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

এ ব্যাপারে শান্তনু ঠাকুর বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা অস্বীকার করে তৃণমূলের চক্রান্তের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘‘যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে আমার গাড়ির চালকও রয়েছেন। বাকিরা ঠাকুরবাড়িতে থাকেন। কাজকর্ম দেখাশোনা করেন। ওরা মারধরের ঘটনায় কোনও ভাবে যুক্ত নয়। আমিও চাই, যারা মারধর করেছে তারা গ্রেফতার হোক। পুলিশ কোনও তদন্ত না করেই এদের গ্রেফতার করেছে। ঘটনার পিছনে তৃণমূলের রাজনৈতিক চক্রান্ত আছে।’’ আগামী 22 শে মার্চ ঠাকুরবাড়ির বারুনী মেলা হওয়ার কথা ছিল। এই নিয়ে হাইকোর্টে একটি মামলাও চলছিল বলে জানা গেছে। কিন্তু সম্প্রতি করোনার সংক্রমণের কারণে নতুন করে মেলা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়।

এ ব্যাপারে ঠাকুরনগরের বিজেপির একাংশ নেতাকর্মী করোনার জন্য মেলা বন্ধ রাখার পক্ষেই সওয়াল করেন। কিন্তু জানা গেছে, বিজেপির অন্য গোষ্ঠী আবার মেলা বন্ধ রাখার তীব্র বিরোধিতা করেন। অন্যদিকে, এই ঘটনা গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সংকেত দিলেও এ নিয়ে এখনো পর্যন্ত বিজেপি রাজ‍্য নেতৃত্বের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এই ঘটনার ফলে গাইঘাটা এলাকায় চাঞ্চল‍্য ছড়িয়েছে বলে জানা গেছে। আপাতত পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্হিতি এইমুহুর্তে আয়ত্তে। তবে ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় কিনা, সেদিকে লক্ষ্য রাখবে ওয়াকিবহাল মহল।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!