করোনার ঊর্ধমুখী হারকে আটকানোর ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যাবস্থা স্বাস্থ্যদপ্তরের, উদ্বেগে বিশেষজ্ঞরা কলকাতা রাজ্য শরীর-স্বাস্থ্য April 9, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সময় যত যাচ্ছে, ততই বেড়ে চলেছে করোনার বিস্তৃতি। রাজ্য জুড়ে চলছে আট দফার বিধানসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে আবার দেশে নতুন করে শুরু হয়েছে করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ। যা থেকে বাঁচতে পারেনি এ রাজ্যও। নিত্যদিন বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু ভোট বড় বালাই! এর মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যে অত্যন্ত কঠিন তা মেনে নিচ্ছে সব পক্ষই। তাও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে এবার কোমর বেঁধে নামতে চলেছে রাজ্য সরকার। গত বছরের মতো নিয়মকানুন আবার ফিরে আসতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে সরকারি অফিসে রোস্টার পদ্ধতি চালু হচ্ছে। অন্যদিকে আবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন প্রচারে বেরিয়ে করোনার ভ্যাকসিন না মেলায় কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধোনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যের মানুষকে বিনামূল্যের টিকা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সেই দাবি মানেনি। তবে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা যাচ্ছে, এ রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় প্রকোপ কম রয়েছে অনেকটাই। তবুও পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাতে না যায়, তার জন্য আগামী 48 ঘন্টার মধ্যে পুরনো ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ চলছে। ভোট প্রচার থেকে রাজনৈতিক সভা কোথাও করোনা বিধি বিন্দুবিসর্গ মানা হচ্ছে না বলে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চিকিৎসক মহল। তবে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে রাজ্যের যেসব জায়গায় ভোট ইতিমধ্যে মিটে গেছে, সেই সব জায়গায় বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে। গতকালই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করোনাপ্রবণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বদলে বৈঠকে ছিলেন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সোমবার ভোট মিটে যাওয়া জেলার ডিএম, এসপি এবং সিএমওএইচদের সঙ্গে মুখ্যসচিব আলোচনায় বসতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দেশজুড়ে করোনা বেড়ে ওঠার সাথে সাথে এ রাজ্যেও করোনার প্রকোপ দেখা গিয়েছিল। গতবছর তেইশে মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - গত বছরের অক্টোবর মাস নাগাদ এ রাজ্যে সর্বাধিক হয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। সেসময় আক্রান্তের সংখ্যা পৌছে গেছিল প্রায় 37 হাজারে। যদিও স্বাস্থ্য দপ্তর করোনা মোকাবিলায় কড়া ব্যবস্থা নেওয়ায় পরিস্থিতি হাতের বাইরে যায়নি বলে মনে করা হচ্ছে। এবারেও করোনা যেভাবে ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে প্রত্যেকদিন, তা দেখে আগেভাগেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সরকারি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। একই সাথে বেসরকারি নার্সিংহোমগুলির সঙ্গে চলছে একের পর এক বৈঠক। সেফহোম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল করোনা হ্রাস পাওয়ায়। সেগুলি আবার শুরু হচ্ছে। একই সাথে নতুন করে আবার টেলিমেডিসিন, কল সেন্টার এবং অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা শুরু হয়েছে। করোনা টেস্টের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় গাইডলাইন মেনে প্রায় 70% পরীক্ষা rt-pcr করা হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারি দপ্তরে 50% হাজিরার নির্দেশিকা আগেই বলবৎ হয়েছিল। কাজের প্রয়োজনে তা সামান্য পরিবর্তন হলেও নতুন করে সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী দপ্তরগুলোকে রোস্টার ব্যবস্থা চালু করতে বলা হয়েছে। করোনা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, হাওড়ার রবার পার্ক, উত্তর ২৪ পরগনার সিএনসিআই, দক্ষিণ কলকাতার গীতাঞ্জলি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে চালু হতে চলেছে সেফহোম। স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ হেতু উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং কলকাতায় একটি কোভিড হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন প্রায় সাড়ে 3 লাখের বেশি মানুষের টিকাকরণ হচ্ছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের লক্ষ্য এই দৈনিক টিকাকরণের সংখ্যা 5 লক্ষে নিয়ে যাওয়া। টিকা নিলে করোনার প্রভাব অনেকটাই কম হবে, এমনকি মৃত্যুর সংখ্যাও কম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আপাতত করোনা থেকে বাঁচতে জোর দেওয়া হচ্ছে সচেতনতা এবং সাবধানতায়। তবে নির্বাচনী আবহে কতটা সাবধানতা মানা হচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে বিশেষজ্ঞদের। আপাতত পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে স্বাস্থ্যদপ্তর যে যে ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করছে তাতে কতটা করোনাকে আটকানো যায় সেদিকে নজর থাকবে সবার। আপনার মতামত জানান -