এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত তৃণমূলের কাউন্সিলররা, ফের ট্রাই বিজেপিমুখী উঠছে প্রশ্ন

শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত তৃণমূলের কাউন্সিলররা, ফের ট্রাই বিজেপিমুখী উঠছে প্রশ্ন

লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তী সময়ে রাজ্যের অনেক পৌরসভায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে আসে। যার মধ্যে একদম প্রথম সারিতে ছিল উত্তর 24 পরগনা জেলা। গারুলিয়া থেকে কাঁচরাপাড়া, হালিশহর থেকে নৈহাটি বিভিন্ন পৌরসভার তৃণমূল কাউন্সিলররা ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে নাম লেখানোয় সেখানে কর্তৃত্ব শুরু করে গেরুয়া শিবির। তবে কিছুদিনের মধ্যেই অবশ্য অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে।

সম্প্রতি উত্তর 24 পরগনা জেলার একাধিক পৌরসভার কাউন্সিলররা ফের বিজেপি ছেড়ে নিজেদের প্রাক্তন দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে আসেন। যার ফলে বিজেপির দখলে চলে যাওয়া একাধিক পৌরসভায় অনাস্থা এনে তা দখল করে নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। তবে গাড়ুলিয়া পৌরসভার অনাস্থা এনে তৃনমূল জয়লাভ করলেও বোর্ড গঠনের দিন যেন অস্বস্তি বজায় রইল শাসকদলের।

বস্তুত, নোয়াপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা গাড়ুলিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান সুনিল সিংহ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই সেই গারুলিয়া পৌরসভার একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলর বিজেপিতে নাম লেখান। তবে কিছুদিন আগেই তারা ফের তৃণমূলে নাম লিখিয়ে সেই পৌরসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন।

যেখানে বিজেপিকে হারিয়ে জয়লাভ করে সেই গাড়ুলিয়া পৌরসভার নতুন বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান 15 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সঞ্জয় সিং। আর বৃহস্পতিবার এই পুরবোর্ডের উপপৌরপ্রধান এবং তিনজন পুর পারিষদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান ছিল।

যেখানে উপ পৌরপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন 20 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রমেন দাস এবং পুর পারিষদ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন 5 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দীপা সিং, 7 নম্বর ওয়ার্ডের সোফিয়া খাতুন এবং 1 নম্বর ওয়ার্ডের অনন্যা সাহা। তবে আশ্চর্যজনকভাবে তৃণমূলের 13 জন কাউন্সিলরের মধ্যে এদিন দুইজন কাউন্সিলারের অনুপস্থিতি প্রবল অস্বস্তিতে ফেলেছে শাসক দলকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা যায়, এদিন বোর্ড গঠনের সময় 1 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা সাহা এবং 6 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুব্রত মুখোপাধ্যায় অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু বিজেপির কাছ থেকে যে বোর্ডকে ছিনিয়ে নিয়ে তৃণমূল শক্তি প্রদর্শনের খেলায় নেমেছে, সেখানে প্রথম দিনই এইভাবে তারা কেন ধাক্কা খেল! কেন দুইজন কাউন্সিলর অনুপস্থিত থাকল পৌরসভার এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে! তাহলে কি ফের এখানে বিজেপির দিকে ঘুরতে শুরু করল খেলা!

এদিন এই প্রসঙ্গে পুরো পারিষদ পদের দায়িত্ব পাওয়া অনন্যা সাহাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, “আমি পুর পারিষদের চিঠি গ্রহণ করিনি। যার কারণ দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। সেই কারণ সংবাদমাধ্যমের সামনে বিশ্লেষণ করব না।” এদিকে বোর্ডের বৈঠকে অনুপস্থিত তৃণমূল কাউন্সিলর সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি বেড়াতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দিল্লি যাব। আমি দীর্ঘদিন এই পৌরসভার উপপৌরপ্রধান হিসেবে কাজ করেছি। বিজেপিতে গিয়ে ফিরে এসেছি। নতুন উপ পুরপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন, সে ভালো কাজ করবে, তার আশা রাখি। তবে আমার দুঃখ কে উপ পৌরপ্রধান হবে, সেটা একবার আমাকে আগেই জানাতে পারত। আমি দলের সঙ্গেই আছি, আগামী দিনেও থাকব‌।”

আর গাড়ুলিয়া পৌরসভার 2 কাউন্সিলরের প্রথম বোর্ডের বৈঠকে এই অনুপস্থিতি নিয়ে এখন বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। পাশাপাশি তাদের কথায় অভিমানের সুর রয়েছে বলেও মনে করছেন একাংশ। আর যা দেখে অনেকেই বলছেন, তৃণমূলী এই পৌরসভায় বোর্ড গঠন করলেও তা ফের বিজেপির দখলেই আসবে।

এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে নোয়াপাড়ার বিজেপি বিধায়ক সুনীল সিংহ বলেন, “ওরা প্রথম দিনেই হোঁচট খেয়েছে। মাত্র চার মাস বোর্ড চালাবে। আগামী দিনে 21 টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল এখানে 17 থেকে 18 টা ওয়ার্ডে পরাজিত হবে। এখানে ভারতীয় জনতা পার্টি ক্ষমতায় আসবে।”

তবে দুই তৃণমূল কাউন্সিলরের অনুপস্থিতি নিয়ে সমালোচকদের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ গাড়ুলিয়া পৌরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্যান সঞ্জয় সিং। তিনি বলেন, “অনন্যাদেবী শারীরিক অসুস্থতার কারণে আসতে পারেননি। তবে আমাদের বোর্ডের সমর্থনে এখন 13 জন কাউন্সিলর আছেন। সুব্রতবাবু ব্যক্তিগত কারণে আজ এই অনুষ্ঠানে আসেননি। আমরা সবাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে দলে থেকে উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাব।”

তবে সঞ্জয়বাবু যে কথাই বলুন না কেন, 2 কাউন্সিলরের অনুপস্থিতি এখানে যে তৃণমূলের অস্বস্তিকে অনেকটাই বাড়িয়ে দিচ্ছে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। এখন তৃণমূলের দুই কাউন্সিলরের প্রথম দিনেই অনুপস্থিতি ভবিষ্যতে কোনো প্রভাব ফেলে কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!