এখনও হয়নি দলীয় কমিটি, পৌরভোটে কি করে লড়াই করবে তৃণমূল, উঠছে প্রশ্ন! কলকাতা রাজ্য February 19, 2020 দলীয় সংগঠন শক্তিশালী না হলে যে কোনো নির্বাচনেই সাফল্য পাওয়া অত্যন্ত সমস্যা। যে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো কোনো একটি নির্দিষ্ট মুখের উপর ভরসা করে নির্বাচনী বৈতরণী পার করে, তারা কিছু সময়ের জন্য তাতে সাফল্য পায়। কিন্তু সব নির্বাচনে যে মুখের উপর ভরসা করে বৈতরণী পার হওয়া যায় না, তা যেমন টের পেয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি, ঠিক তেমনই টের পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। বর্তমানে রাজ্যের বিরোধী শক্তি হিসেবে মাথাচাড়া দেওয়া ভারতীয় জনতা পার্টির সংগঠন নেই, তাই তারা ঠিকমতো পাবে না বলে দাবি করছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু রাজ্যে 9 বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা তৃণমূল কংগ্রেস এখনও কেন তাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করতে পারল না, তা নিয়ে আসন্ন পৌরভোটের আগে নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। জানা গেছে, বর্ধমান শহরে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের কোনো কমিটি নেই। হয়ত অনেকেরই এই কথা শুনে চোখ কপালে উঠবে। কিন্তু বাস্তব তাই। কেননা প্রায় অনেকদিন আগেই একটি প্রস্তাবিত কমিটি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলেও, এখনও পর্যন্ত তার অনুমতি মেলেনি। যার ফলে কমিটি ছাড়াই এখানে চলছে তৃণমূলের কার্যসূচি। কিন্তু কমিটি ছাড়া কিভাবে পৌরসভা নির্বাচনে লড়াই করবে শাসকদলের মত রাজনৈতিক দল! এখন তা নিয়েই নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। সূত্রের খবর সোমবার সন্ধ্যায় বর্ধমান ভবনে দলের কর্মী-সমর্থক এবং নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর সেখানেই শহর তৃণমূল সভাপতি অরূপ দাস জানান, গত তিন বছরে দুবার শহরের সব স্তরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে কমিটি তৈরি করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে জমা দেওয়া হলেও, এখনও পর্যন্ত তাতে অনুমোদন দেয়নি রাজ্য। যার ফলে এখানে কোনরকম কমিটি ছাড়াই সকলকে কাজ করতে হচ্ছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বর্ধমান শহর তৃণমূলের দায়িত্ব এই অরূপ দাসের উপর তুলে দেওয়া হয়। তারপর অরূপবাবু শহর কমিটির ব্যাপারে 58 জনের একটি কমিটি গঠন করে তা নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু তারপর সেই কমিটির অনুমোদন না পাওয়ায় লোকসভা ভোটের পর একটি কমিটি তৈরি করে তিনি জমা দেন। কিন্তু সেটিরও অনুমোদন মেলেনি। যার ফলেই তৈরি হয়েছে সমস্যা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - একাংশের দাবি, এই কমিটি না হওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল শুরু হয়েছে। শুধু তাই নয়, একই দিনে বেশ কিছু জায়গায় দলের মিছিল, মিটিং চলছে। যা নিঃসন্দেহে পৌরসভা নির্বাচনের আগে দলের অন্তর্কোন্দলকে বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে দাবি একাংশের। আর জেলা পর্যবেক্ষকের সামনে এই সমস্যার কথা শহরের নেতারা তুলে ধরায় ফিরহাদ হাকিম যে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে পড়লেন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। কিন্তু কেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের পক্ষ থেকে এই কমিটির ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না! তাহলে কি রাজ্য নেতৃত্ব চাইছে না জেলার সংগঠনের উন্নতি করতে। আর যদি তারা তা চেয়েই থাকবেন, তাহলে কেন তারা এই ব্যাপারে এত গা ঢিলেমি করছেন! জানা গেছে এদিনের এই বৈঠকে জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম নির্দেশ দিয়েছেন যে, কোনোভাবেই শহর সভাপতি এবং বিধায়কের অনুমতি ছাড়া কোনো সভা এবং মিছিল করা যাবে না। এদিন এই প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “বর্ধমানে আমাদের সংগঠন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। কাউন্সিলরদের কিছু সমস্যা আছে, সে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মানুষ উন্নয়ন দেখে ভোট দেন, দিল্লিতে তা প্রমাণিত। বর্ধমানে আমরা উন্নয়নে ভর করেই সব আসনে জিতব।” কিন্তু ফিরহাদ হাকিম যে কথাই বলুন না কেন, কমিটি ছাড়া এভাবে দেখভালের জন্য নেতা তৈরি করলে কি দ্বন্দ্ব আরও বাড়বে না, এই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে। আপনার মতামত জানান -