এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > কাউন্সিলর না হয়েও নবান্নের ইচ্ছায় পুরবোর্ডে হেভিওয়েট তৃণমূল সাংসদ! বাড়ছে বিতর্ক

কাউন্সিলর না হয়েও নবান্নের ইচ্ছায় পুরবোর্ডে হেভিওয়েট তৃণমূল সাংসদ! বাড়ছে বিতর্ক


করোনা ভাইরাসের কারণে বর্তমানে মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভাগুলো নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না। যার ফলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভাগুলোতে প্রশাসক বোর্ড গঠন করে দেওয়া হবে। সেই মত অতীতে কলকাতা পৌরসভায় এরকম কোনো নিদর্শন না থাকলেও, এবার তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এবং নির্বাচন করানো সম্ভব না হওয়ায় সেখানে প্রশাসক বোর্ড গঠন করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রশাসক করা হয়েছে সেই পৌরসভার বিদায়ী মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে।

শুধু তাই নয়, প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য পদে অনেক তৃণমূল কাউন্সিলরকে রাখা হয়েছে। এদিকে কলকাতা পৌরসভার পাশাপাশি বামেদের দখলে থাকা শিলিগুড়ি পৌরসভাতেও সেখানকার বিদায়ী মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে প্রশাসক করা হয়েছে। তবে এখানে প্রথম দিকে তৃণমূল কাউন্সিলরদের সেই বোর্ডের সদস্য করা হলে তার ব্যাপারে চরম বিরোধিতা করেন অশোক ভট্টাচার্য। পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে বাম প্রতিনিধিদের বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। সরিয়ে দেওয়া হয় তৃণমূল কাউন্সিলরদের।

তবে কাউন্সিলরা সদস্য হলেও এবং এই নিয়ে অতটা বিতর্ক তৈরি না হলেও, এবার কোনো কাউন্সিলর না হওয়া সত্ত্বেও, কেন তৃণমূল সাংসদ একটি পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য হবেন! তা নিয়ে রাজ্যজুড়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। বস্তুত, 20 মে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর পৌরসভার বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ শেষ হবে। হিসেব মত অন্যান্য পৌরসভা যেমন হচ্ছে, ঠিক তেমনই এই গঙ্গারামপুর পৌরসভা প্রশাসকের দায়িত্ব পাচ্ছেন সেখানকার বিদায়ী চেয়ারম্যান অমলেন্দু সরকার। তবে আশ্চর্যজনকভাবে পৌরসভায় বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে কাউন্সিলররা বেশি প্রাধান্য পেলেও, এখানে তৃণমূল সাংসদ সদস্য হওয়ায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গঙ্গারামপুর পৌরসভায় এই প্রশাসক বোর্ড নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি এসে পৌঁছয়। যেখানে দেখা যায় যে, প্রশাসক করা হয়েছে সেই পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান অমলেন্দু ভূষণ সরকারকে। অন্যদিকে বোর্ডের সদস্য হিসেবে রয়েছেন কাউন্সিলর রাকেশ পন্ডিত, অশোক বর্ধন, গঙ্গারামপুরের বিধায়ক গৌতম দাস এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। আর কাউন্সিলর না হওয়া সত্ত্বেও তিনি কেন এই বোর্ডের সদস্য হলেন এবং রাজ্য সরকার কেন তাকে বোর্ডের সদস্য করল! তা নিয়ে এখন ব্যাপক শোরগোল তৈরি হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে।

ইতিমধ্যেই বিরোধীদের তরফে প্রশ্ন করা হচ্ছে যে, অর্পিতাদেবী কাউন্সিলর না হওয়া সত্ত্বেও, তাকে এভাবে পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডে রেখে রাজ্যের শাসক দল পৌরসভাকে নিজেদের ক্ষমতার আঁতুড়ঘর করে তুলতে চাইছে। প্রসঙ্গত, এই গঙ্গারামপুর পৌরসভা নিয়ে অতীতে নানা জটিলতা দেখা গেছে। গঙ্গারামপুর পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা বর্তমান বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্রের ভাই প্রশান্ত মিত্র বিজেপিতে যোগদান করার পরেই তার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। আর এরপর থেকেই তৃণমূল সেখানে বোর্ড দখল করে অমলেন্দু ভূষণ সরকারকে চেয়ারম্যান করে তাদের কাজ চালাতে থাকে।

কিন্তু বর্তমানে সেই বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় করোনা ভাইরাসের কারণে নির্বাচন করা সম্ভব না হওয়ায় সেখানে অন্যান্য পৌরসভার মত প্রশাসক বোর্ড গঠন করে দেওয়া হল। কিন্তু অন্যান্য পৌরসভার মেয়র এবং কাউন্সিলারদের প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য করা হলেও এখানে সাংসদ এবং বিধায়কদের কেন রাখা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

যদিও বা এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী রাজ্যসভার সাংসদ অর্পিতা ঘোষ বলেন, “20 মে গঙ্গারামপুর পৌরসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এটুকু শুধু জানি। পুরো বিষয় রাজ্য সরকারের হাতে। এখানে দলীয় কোনো বিষয় নেই। আমাদের বোর্ড গঙ্গারামপুরকে নতুন করে সাজিয়েছে। আরও অনেক কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে।” তবে অর্পিতাদেবী যে কথাই বলুন না কেন, যেভাবে তাকে প্রশাসক বোর্ডের সদস্য করা হল, তাতে বিরোধীরা এই ব্যাপারে যে আরও সরব হবে এবং তার ফলে যে কিছুটা হলেও চাপে পড়বে রাজ্যের শাসক দল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!