এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দাপুটে সিপিএম নেতার নৃশংস হত্যার পিছনে পরকীয়ার “ঢাল” পুলিশের! মানতে নারাজ এলাকাবাসী

দাপুটে সিপিএম নেতার নৃশংস হত্যার পিছনে পরকীয়ার “ঢাল” পুলিশের! মানতে নারাজ এলাকাবাসী

রাজ্যের মাটিতে তৃণমূল এবং সিপিএমের সংঘর্ষ নতুন কিছু নয়। এককালে সিপিএমের আমলে যেমন পুলিশকে আলিমুদ্দিনের কথামতো কাজ করার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলেন তৎকালীন বিরোধী দল তথা আজকের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, তেমনই তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকে বারবার সিপিএমের তরফ থেকে পুলিশকে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। আর এরকমই একটা ঘটনা সামনে আসল নানুর এলাকায়।

যেখানে প্রাক্তন সিপিএম নেতা সুভাষচন্দ্র দের খুনের পেছনে পরকীয়ার সম্পর্কের খবর উঠে আসে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে। কিন্তু পুলিশের পরকীয়া তত্ত্বকে কার্যত সম্পূর্ণ অস্বীকার করে নিহত সুভাষবাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।

পারিবারিক লোকজনের পাশাপাশি এলাকার প্রতিবেশীদের দাবি, এককালীন সিপিআইএমের দাপুটে নেতা সুভাষচন্দ্র দে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে দাঁড়ালেও পরবর্তীতে এলাকায় বিভিন্ন রকম সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন। পরকীয়া তত্বকে অস্বীকার করে তাদের দাবি, সুভাষবাবুর খুনের পেছনে অন্য কোনো গুরুতর কারণ রয়েছে। পুলিশ যদি প্রকৃত তদন্ত করে, তাহলে সেই তথ্য উঠে আসবে।

এদিন পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের অনুমানকে উড়িয়ে দিয়ে পরিবার এবং এলাকাবাসীরা দাবি করেন, দোষীদের পূর্ণ শাস্তি দিতে হবে। বস্তুত, গত শুক্রবার 18 অক্টোবর সকাল বেলা বাড়ি থেকে বেরিয়ে ইলামবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন সুভাষচন্দ্র দে। জানা যায়, শুক্রবার দিন সন্ধ্যার পর থেকেই আর সুভাষবাবুর সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ করা যায়নি। এতে করে চিন্তিত হয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হলে পুলিশ তদন্তে নামে।

জানা যায়, সুভাষবাবুর মোবাইল ফোনের শেষ টাওয়ার কানেকশন পাওয়া গিয়েছিল দুবরাজপুরের খোজমামুদপুর গ্রামে। তদন্তে নামার পর পুলিশ সকলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মতিউর রহমান এবং তার স্ত্রী সোনালী বিবিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে খুনের কথা স্বীকার করে নেন তারা।

আর এরপরেই খুনের কারণ অন্বেষণ করে পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত সোনালি বিবির সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রাক্তন সিপিএম নেতা সুভাষচন্দ্র দে। ঘটনার দিন সুভাষবাবু এবং মতিউর রহমানের স্ত্রী সোনালি বিবিকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে মতিউর রহমান। আর এর পরেই ক্রোধবশত সুভাষবাবুকে খুন করে মতিউর রহমান বলে খবর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কিন্তু পুলিশের প্রকাশ করা খুনের এই তত্ত্বকে সুভাষবাবুর পরিবারের তরফ থেকে বারবার অস্বীকার করা হয়েছে। পরিবারের পাশাপাশি বন্ধু ও প্রতিবেশীরাও দাবি করেন, বিবাহ বহির্ভূত যে সম্পর্কের কথা সুভাষবাবু সম্পর্কে রটানো হচ্ছে, তা সত্য নয়। ঘটনা প্রসঙ্গে তারা মনে করেন, সুভাষবাবুকে যে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে, তার থেকেই বোঝা যাচ্ছে এর পিছনে কোনো গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।

এদিন এই প্রসঙ্গে সুভাষচন্দ্র দের জামাই সুখেন্দু প্রামাণিক বলেন, “উনি অত্যন্ত ভালো ও সরল মনের মানুষ ছিলেন। রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পর সম্পূর্ণভাবে সমাজ সেবার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। কারও সঙ্গে কোনদিন শত্রুতা হয়নি। পুলিশ যে দাবি করেছে, তা সঠিক নয়। তদন্ত করলেই আসল সত্য সামনে আসবে।”

অন্যদিকে প্রতিবেশীদের তরফ থেকে কোহিনুর বেগম বলেন, “যেভাবে ওকে খুন করা হয়েছে, ভাবলে শিউরে উঠছি। আমরা সকলেই একসঙ্গে ভালোভাবেই থাকতাম। কোনদিন অসুবিধা হয়নি। যারা এই খুনের ঘটনায় জড়িত, তাদের শাস্তি চাই।”

তাই বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, পরিবার সহ পাড়া-প্রতিবেশী এবং বন্ধুবান্ধবরাও যখন সুভাষবাবুর এই ধরনের কোনো বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক সম্পর্কে জানতেন না, তাহলে খুনের পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য থাকলেও থাকতে পারে। আর প্রশাসনের তরফ থেকে যদি একটি তত্ত্ব খাড়া করেই তদন্ত থেকে বিরত থাকা হয়, তাহলে এলাকাবাসীর মনে প্রশাসন সম্পর্কে ভাবমূর্তি নষ্ট হবে বলেই মত বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!