এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > বিজেপির কাছে সব হারানো সিপিএম এখন বিজেপির সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধছে! তীব্র শোরগোল রাজনীতিতে

বিজেপির কাছে সব হারানো সিপিএম এখন বিজেপির সঙ্গেই গাঁটছড়া বাঁধছে! তীব্র শোরগোল রাজনীতিতে

পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি এক সময় ত্রিপুরাতেও একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল সিপিআইএমের। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন সিপিএমের পলিটব্যুরোর অন্যতম সদস্য মানিক সরকার। কিন্তু গত বছরই দেখা যায় ত্রিপুরাতে গেরুয়া ঝড়ের মুখে পড়ে কার্যত ভেঙ্গে গিয়েছে লাল দুর্গ। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ত্রিপুরাতে বিপ্লব দেবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার গঠন হয়েছে। শতাংশের হিসেবেও কার্যত 50 এর গণ্ডি পার করে গিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি।

আর এরপর থেকেই কখনও লেলিনের মূর্তি ভাঙ্গা, কখনও সন্ত্রাসের মধ্যে দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট না করতে দেওয়া, বিরোধীদের নমিনেশন সাবমিট না করতে দেওয়ার মতো নান অভিযোগ সিপিএমের থেকে তোলা হয় ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই ত্রিপুরা থেকে এমন এক খবর আসে, যা একপ্রকার ভাবিয়ে তুলছে বাম ডান সব পক্ষকেই। জানা যাচ্ছে, ত্রিপুরার উনাকোটি জেলার শিবপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে জোট বদ্ধ হিসেবে বোর্ড গঠন করেছে সিপিএম এবং বিজেপি।

এক্ষেত্রে দলের নির্দেশকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করেই গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করেছে সিপিআইএম বলে জানা যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েতের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সিপিএমের টিকিটে জয়ী তাকুম আলী। আবার ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে উপপ্রধান পদে বসেছেন সিরাজ মিয়া। যদিও পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের প্রসঙ্গে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান তাকুম আলি বলেন, “পঞ্চায়েত চালানোর জন্য সাময়িক সময়ের জন্য ভারতীয় জনতা পার্টির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে একজোট হয়েছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পাশাপাশি দলের হুইপ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমি এখনও একজন সিপিএম সদস্য। দলের নেতৃত্বের কোনরকম হুইপ পাইনি।” যদিও সাংবাদিকদের কাছে বলতে গিয়ে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী জানিয়েছেন, বিজেপির সঙ্গে জোট করে যারা বোর্ড গঠন করেছে, তারা দলের হুইপ মানেননি। তিনি এও বলেন, “সংখ্যাগরিষ্ঠতার না থাকায় শ্রীনাথপুরে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলাম। এই বিষয়ে হুইপ জারি করা হয়েছিল।” তবে তাদের দলের চারজন দলের হুইপ না মেনে বিজেপির সঙ্গে একজোট হয়ে বোর্ড গঠন করেছে।

তাই তাদের বিরুদ্ধে দল আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন কৃষ্ণেন্দুবাবু। পাশাপাশি ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে জোট বাধার কোনো প্রশ্ন নেই বলেও স্পষ্ট করেন সিপিআইএম সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু চৌধুরি। আবার ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে দলের মুখপাত্র অশোক সিনহা বলেন, “ওরা দলের হুইপের বিরুদ্ধে গিয়েছে। সিপিএমের সঙ্গে জোট করেনি বিজেপি।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শ্রীনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট 13 জন সদস্য রয়েছে।

যার মধ্যে সিপিএমের তরফ থেকে চারজন এবং বিজেপির তরফ থেকে 5 জন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা মিলে বোর্ড গঠন করেছে বলে খবর। তবে ত্রিপুরায় সিপিএম এবং বিজেপির এই অসম্ভব জোটকে কটাক্ষ করতে ছেড়ে দেয়নি বিরোধী দল কংগ্রেস। এদিন এই বিষয়ে দুই দলকেই প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করে কংগ্রেস সহ-সভাপতি তাপস দে বলেন, “একদল চরম ডানপন্থী, আরেকদল চরম বামপন্থী। তারা বরাবরই একসঙ্গে রয়েছে। সব সুযোগসন্ধানী দল। ওদের কাছে ক্ষমতায় থাকাই আসল লক্ষ্য। মানুষের রায় নিয়ে ওরা মাথা ঘামায় না।”

রাজনৈতিক মহলের মতে, ত্রিপুরায় জোটের যে উলটপুরান দৃশ্য সামনে চলে এসেছে, সেই রকম দৃশ্য ভারতের রাজনীতিতে দেখতে পাওয়া বিরল। যদিও বরাবরই এই অভিযোগ উঠেছে যে, তলায় তলায় পশ্চিমবঙ্গেও পঞ্চায়েত ভোট পরবর্তী অবস্থায় অনেক জায়গাতেই ভারতীয় জনতা পার্টির সমর্থন নিয়ে কোথাও বামফ্রন্ট পঞ্চায়েত গঠন করেছে, আবার কোথাও বামফ্রন্টের সহযোগিতা নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি পঞ্চায়েত গঠন করেছে। কিন্তু ত্রিপুরায় যেখানে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম, সেইখানে এরকম ঘটনা নজর কেড়েছে বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!