প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখেই এখন যাবতীয় গুটি সাজানোর কাজ করছে রাজনৈতিক শক্তিগুলি। একে অপরকে মাত দেওয়ার পরিকল্পনা চালাচ্ছে প্রত্যেকে। নিজেদের শক্তি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে মেতে উঠেছে শাসক বিরোধী উভয়েই। তবে শক্তি বাড়ানোর কথাই যখন হচ্ছে, তখন উত্তরবঙ্গের কথা বলতেই হয়। বর্তমানে উত্তরবঙ্গে শাসক শিবির তৃণমূল ক্রমশ তাঁদের সংগঠন জোরদার করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

সম্প্রতি কোচবিহার জেলার তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন অভিজিৎ দে ভৌমিক। আর দায়িত্ব পেয়েই এবার রীতিমত ম্যাজিক দেখাতে শুরু করেছেন অভিজিৎ। যারা একসময় সিপিএম করতেন এবং পরবর্তীতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তাঁরাই এবার বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। এই ঘটনাটি ঘটেছে কোচবিহার দু নম্বর ব্লকের 11 নম্বর জেলা পরিষদ মন্ডলের ঢাংডিংগুড়ি এলাকায়।

জানা গিয়েছে, এলাকার প্রায় 50 জন বিজেপি কর্মী এদিন কোচবিহার শহরের স্টেশনমোড় এলাকার তৃণমূল যুব কংগ্রেসের দপ্তরে এসে দলে যোগদান করেন। প্রসঙ্গক্রমে বলা যেতে পারে, 2011 সালে বাংলার মসনদ হাতবদল হওয়ার সাথে সাথেই রাজ্যে সিপিএমের অনেকটাই শক্তিক্ষয় হয়। 2011এর পর যখন 2016 তেও তৃণমূল সরকার শাসন কায়েম রাখে, তখন বামপন্থীরা অনেকেই হতাশায় ভুগতে শুরু করেন। যার ফলস্বরূপ গেরুয়া শিবির রাজ্যে মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করে।

2019 এর লোকসভা নির্বাচনের আগে অনেক বামকর্মী যোগদান করেন বিজেপিতে। আবার অনেকেই নিজের ভোটটাও দিয়ে দেন বিজেপিকে। আর তার ফলস্বরূপ উনিশ এর লোকসভা নির্বাচনে 18 টি সিট নিয়ে জয়যুক্ত হয় বিজেপি। এবার বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে সেই বিজেপি কর্মীরাই এসে যোগদান করছেন তৃণমূলে। যদিও তাঁরা দাবি করছেন, বর্তমানে তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে জেলাজুড়ে উন্নয়ন যজ্ঞ শুরু করেছেন, তাতে অংশ নেওয়ার জন্যই দলবদল।

অন্যদিকে জানা গেছে, এদিন কোচবিহার জেলার দলবদলে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছেন যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক এদিন জানিয়েছেন, কোচবিহার জেলায় ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে উন্নয়ন শুরু হয়েছে। যার ফলে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, এখনো অনেক মানুষই বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসার জন্য তাঁর সাথে যোগাযোগ রাখছেন।

এ প্রসঙ্গে অবশ্য বিশেষজ্ঞদের দাবি, ধীরে ধীরে হলেও তৃণমূল কিন্তু আস্তে আস্তে উত্তরবঙ্গে আবার নিজেদের কর্তৃত্ব কায়েম করার জন্য একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। আর তার ফলও মিলছে। সেদিক থেকে গেরুয়া শিবিরের প্রতি তাঁরা সতর্কবার্তাও দিচ্ছেন। যেভাবে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় দলবদল হচ্ছে, তা কিন্তু গেরুয়া শিবিরের জন্য একটা অশনী সংকেত বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই। তবে এদিন যে দলবদল হলো কোচবিহারে, এখনো পর্যন্ত গেরুয়া শিবির থেকে কিন্তু তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।