এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > টাকা না দিলে মঞ্জুর হচ্ছে না ঋণ, কাটমানি অসন্তোষে সরগরম রায়গঞ্জ

টাকা না দিলে মঞ্জুর হচ্ছে না ঋণ, কাটমানি অসন্তোষে সরগরম রায়গঞ্জ

রাজ্যজুড়ে এমনিতেই কাটমানি কাণ্ডে লেজেগোবরে দশা হয়েছিল শাসকদলের। আর সেই দশা থেকে দলের হাল ফেরাতে মাঠে নামতে হয় খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। রীতিমত দলীয় কর্মী সমর্থকরা যদি কেউ কাটমানি নিয়ে থাকে, তাহলে তাদেরকে তা দিয়ে দিতে নির্দেশ দেন দলনেত্রী।

এমতাবস্থায় দলনেত্রীর এই হুঁশিয়ারিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী শিবির। বিভিন্ন প্রকারের শাসকদলের বিরুদ্ধে নানারকম কাটমানির অভিযোগ এনেছেন ভারতীয় জনতা পার্টি থেকে শুরু করে কংগ্রেস সহ বামদলগুলো। কিন্তু ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে ছড়িয়ে পড়া কাটমানি রেওয়াজ যে কতটা জাল বিস্তার করেছে, তার প্রমাণ পাওয়া গেল উত্তর দিনাজপুরে। উত্তর দিনাজপুর জেলা স্বনির্ভর দলের মহিলার কাছে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বনির্ভর দলের সংঘের প্রধানের উপরে।

রামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপসংঘের এক নেত্রী দলীয় মহিলাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে গেলে কাঠমানি নেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বনির্ভর দলের সদস্যরা। এই নিয়ে কয়েকশো মহিলা সোমবার স্থানীয় সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের দ্বারস্থ হন। তারা ঘটনার তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। আন্দোলনকারী মহিলাদের অভিযোগ, কাটমানি না দিলে ঋণ মঞ্জুর হচ্ছে না।

বিভিন্ন উপায়ে শনিবার দলগুলির সদস্যদের কাছ থেকে কাটমানি আদায় করা হত। এই বিষয়ে রায়গঞ্জের বিডিও রাজু লামা জানান, মহিলারা এদিন বেশকিছু বিষয় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগগুলি আগে খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে প্রশাসন। যদিও উপসংঘের অভিযুক্ত নেত্রী জানিয়েছেন, তিনি কারও কাছ থেকে কোনো কাটমানি নেননি। কেউ ষড়যন্ত্র করে এই ধরনের অপপ্রচার করছে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আবার এই প্রসঙ্গে রামপুর পঞ্চায়েত তৃণমূল কংগ্রেস সদস্য মলয় সরকার বলেন, “মহিলারা যে হিসাব দিচ্ছেন তাতে করে মনে হচ্ছে বহু টাকা তাদের কাছ থেকে কাটমানি হিসাবে নেওয়া হয়েছে। দলের মহিলাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা দিচ্ছেন। তাদের প্রাপ্য টাকা থেকে যদি কেউ কাটমানি নিয়ে থাকেন, সেটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তদন্ত চেয়েছি।”

বস্তুত, সব মিলিয়ে 292 টি স্বনির্ভর দল ওই পঞ্চায়েত এলাকায় রয়েছে। স্বনির্ভর দলগুলির সদস্যরা জানিয়েছেন, এলাকায় 100 দিনের প্রকল্পে নারকেল গাছ দেখভালের জন্য তাদের হাজিরা দেওয়া হয়। স্বনির্ভর দলের মহিলারা আমার কাছে অভিযোগ করেন, সেই হাজিরার টাকা উপসংঘের এক নেত্রী অনেকের কাছে হাতিয়েছেন। অন্যদিকে আন্দোলন কারীদের পক্ষে লহন্ডা নিবেদিতা স্বনির্ভর মহিলা দলের সভানেত্রী মুনমুন দাস বলেন, “আমার কাছে ঋণ দেওয়ার জন্য সংঘের নেত্রী দুই হাজার টাকা চেয়েছিলেন। টাকা না দেওয়ায় ঋণ পাব না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।”

এদিকে এই ব্যাপারে রামপুর ভারতমাতা স্বনির্ভর দলের দলনেত্রী গীতা বর্মন বলেন, “1 লক্ষ 25 হাজার টাকা ঋণ পেতে আমাকে 2 হাজার টাকা কাটমানি দিতে হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার পেতে 700 টাকা কাটমানি দিতে হয়েছে।” যদিও উপসংঘের ওই নেত্রী জানিয়েছেন, তিনি কারো কাছ থেকে কোনো কাটমানি নেননি। তাকে ফাঁসানোর জন্য এই ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। প্রশাসন তদন্ত করলেই ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যাবে।

যদিও আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি, প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে তারা পথ অবরোধ সহ একাধিক ভাবে বড় আন্দোলন গড়ে তুলবেন। এছাড়াও অভিযোগকারীরা থানায় এই ঘটনা নিয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ করেছেন এবং থানা এলাকায় বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সবকিছু মিলিয়ে স্বনির্ভর দলের মধ্যে এই ধরনের অভিযোগ উসকে দিচ্ছে নানান প্রশ্ন। আর যদি প্রকৃত প্রশাসনিক তদন্ত হয়, তাহলে তার রিপোর্টে কি আসে! এখন সেদিকেই তাকিয়ে বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!