এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ডিএ ও ষষ্ঠ বেতন কমিশন লাগুর দাবিতে এবার বড়সড় আন্দোলনে নামছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা

ডিএ ও ষষ্ঠ বেতন কমিশন লাগুর দাবিতে এবার বড়সড় আন্দোলনে নামছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা


২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে ক্ষমতা হারাবার পর থেকেই বামশিবিরের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। কিন্তু, তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনে বামেদের প্রভাব ও প্রতিপত্তি এখনও যে কোন অন্য রাজনৈতিক দলের সংগঠনের থেকে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে তা মেনে নেন রাজ্য-রাজনীতির সংশ্লিষ্ট সকলেই। আর এবার, লোকসভা নির্বাচনের দামামা বাজতে না বাজতেই রাজ্য সরকারের ঘুম নতুন করে উড়তে চলছে বামদের কর্মচারী সংগঠনের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বলে সূত্রের খবর।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই এই রাজ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বিপুল পরিমান মহার্ঘ ভাতা বকেয়া রয়েছে। যা নিয়ে সরকারের কাছে আবেদন-নিবেদন বা প্রতিবাদ করলেও, কার্যত রাজ্য সেই ব্যাপারে কোনো কর্ণপাতই করছে না বলে অভিযোগ রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত কর্মচারীদের। আর এহেন একটা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এবার, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিলেন বাম সরকারি কর্মচারী সংগঠন – রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যরা।

সূত্রের খবর, বকেয়া মহার্ঘ ভাতা ও অবিলম্বে ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালুর দাবিতে আগামী ৮ ও ৯ ই জানুয়ারি দু’দিনব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। আর সেই ব্যাপারে এবার আগাম রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দেকে জানিয়ে বাম সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সদস্যরা সরকারকে একটি চিঠি দিলেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এর পেছনে বামেদের সুকৌশলী রাজনীতি রয়েছে। কেননা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই যখনই বিরোধী দল থেকে বিভিন্ন বিরোধী সংগঠন ধর্মঘট ডেকেছে ঠিক তখনই সেই ধর্মঘটকে রুখে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।

এমনকি সেই ধর্মঘটের দিন যদি কোনো সরকারি কর্মচারী দপ্তরে অনুপস্থিত থাকেন, তবে সেদিনের বেতন কাটার পাশাপাশি তাঁর চাকরি জীবন থেকে একদিন ছেঁটে ফেলা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে নবান্ন। তাই, এবারে যাতে সেই ধর্মঘটের ব্যাপারে আর কোনোরূপ হুঁশিয়ারি আগেভাগে দিতে না পারে রাজ্য, সেজন্য আগেভাগেই বামেদের কর্মচারী সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির পক্ষ থেকে সরকারকে সেই ধর্মঘটের কথা জানিয়ে একটি চিঠি দেওয়া হল।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বস্তুত, বকেয়া মহার্ঘভাতা আদায় ও ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করছেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা। গত ২৯ শে নভেম্বর নবান্নে টিফিন আওয়ারে এই ব্যাপারে তাঁরা স্লোগান দিয়ে আন্দোলন চালালে – প্রথমে আন্দোলনকারীদের কলার ধরে ধাক্কা মেরে পুলিশ তাঁদের নবান্নের বাইরে বের করে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরে, সেই কে-অর্ডিনেশনের সাধারণ সম্পাদক বিজয় শঙ্কর সিনহা সহ অধিকাংশ প্রতিনিধিকেই সেদিন গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সম্মিলিত প্রতিবাদের সামনে চাপে পরে তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পুলিশ।

কিন্তু, এরপরেই সেদিনের আন্দোলনে নেতৃত্ত্ব দেওয়া প্রায় ১৫ জন সদস্যকে – সুদূর দার্জিলিং, কালিম্পঙ বা মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায় বদলি করে দেওয়া হয়। যার মধ্যে বাদ যাননি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিজয়বাবুও! নিজেদের দাবি জানিয়ে কোনো সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদককে এইভাবে বদলি – হতে হচ্ছে, রাজ্য-রাজনীতিতে এ ঘটনা নজিরবিহীন! এদিকে, বিজয়বাবুকে কলকাতা থেকে সুদূর উত্তরবঙ্গের খাদ্য দপ্তরে বদলি করে দেয় সরকার। কিন্তু বাস্তবে সেই উত্তরবঙ্গের উত্তরকন্যায় খাদ্য দপ্তরে যোগ দিতে গিয়ে বিজয়বাবু দেখেন যে সেখানে খাদ্য দপ্তরের কোনো শাখাই নেই!

পরবর্তীকালে, অবশ্য প্রযুক্তি দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি রিলিজ অর্ডার পান তিনি। স্বাভাবিকভাবেই, এই ঘটনাকে সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ বলে অভিহিত করছেন দলমত নির্বিশেষে সকল রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও কর্মচারী সংগঠনের শীর্ষনেতারা। তাই, রাজ্য সরকারের এই ‘বদলি সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে, এবার রাজ্য সরকারের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা ও ষষ্ঠ বেতন কমিশন অবিলম্বে চালুর দাবিতে ফের আন্দোলনে নামার পাশাপাশি আগামী ৮ ও ৯ ই জানুয়ারি দুই দিনের ধর্মঘটের ডাক দিল বাম-মনোভাবাপন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠন ক-অর্ডিনেশন কমিটি। দুদিন ব্যাপী এই ধর্মঘটে যে তীব্র সাড়া পড়বে রাজ্য সরকারি কর্মচারী মহলে, সে ব্যাপারে প্রায় সকলেই নিশ্চিত। আর তাই, শেষ পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীদের এই ধর্মঘটকে ঠেকাতে রাজ্য সরকার ঠিক কি পদক্ষেপ নেয় – এখন সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!