এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > দাড়িভিটে পঠনপাঠন নিয়ে বড়সড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের – জানুন বিস্তারিত

দাড়িভিটে পঠনপাঠন নিয়ে বড়সড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের – জানুন বিস্তারিত


দাড়িভিট হাইস্কুলের দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটতে চলেছে এবার। অভিভাবকদের আবেদনে সাড়া দিয়ে কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি শেখর ববি শরাফ। স্কুলের শিক্ষাদান প্রক্রিয়া যাতে আর কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্যে জেলাশাসক,পুলিশ সুপার ও আইসিকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করার কড়া নির্দেশও দিলেন তিনি।

পাশাপাশি যেকোনো ধরণের উত্তেজনামূলক পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যে পুলিশকে সচেতন থাকতে বলা হয়েছে৷ এছাড়া বিদ্যালয় চত্বরে থাকা যাবতীয় হিংসাত্মক পোস্টারও সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

 

প্রসঙ্গত,গত বছর সেপ্টেম্বর নাগাদ শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কারণে অশান্তি শুরু হয় দাড়িভিট হাইস্কুলে। বাংলা শিক্ষকদের পরিবর্তে উর্দু শিক্ষক নিয়োগ করা হলে প্রতিবাদে পথে নামে স্কুল পড়ুয়া এবং প্রাক্তনরা। পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় দুই প্রাক্তন ছাত্র, তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাপস বর্মণ ও আইটিআই শিক্ষার্থী রাজেশ সরকারের।

এরপর থেকেই একের পর এক রাজ্যসরকার এবং পুলিশ প্রশাসন বিরোধী আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ইসলামপুরের দাড়িভিট। তখন থেকেই স্কুলের পঠনপাঠন বন্ধ থাকে। বিদ্যালয়ে প্রায় ১৮০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ের অচলাবস্থার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ৫৪ হন অভিভাবক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।

মামলাকারীদের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য ও অনীশ মজুমদার জানান,প্রাথমিক সমস্যা কাটিয়ে গত নভেম্বর স্কুল সাময়িক ভাবে খোলা হয়েছিল। দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের টেস্ট পরীক্ষাও নেওয়া হয়। কিন্তু তারপর ফের জটিলতা বাড়ে। পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যায় স্কুলের। এই অশান্তির জেরে কোনো শ্রেণীর শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস শেষ হয়নি৷ সবথেকে বেশি ভোগান্তির শিকার হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। এই স্কুল থেকে এবার প্রায় ২৫০ জন পড়ুয়ারা মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে।

পড়ুয়াদের তরফ থেকে জানা গিয়েছে,গত ডিসেম্বরে অশান্তি এতোটাই তীব্র হয় যে বিদ্যালয়ের প্রধান গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। এর জেরে পরীক্ষার ফর্ম ফিল আপ করতেও ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। এরপর এই মাসেই নোটিশ দেওয়া হয় যে, চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ‘রিঅ্যাডমিশন’ এবং ‘নিউ অ্যাডমিশন’ শুরু করা হবে৷ কিন্তু ওই নোটিশ পাওয়ার পরই আন্দোলন আরো তীব্র আকার ধারণ করে। বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির সদস্যদের,এমনকি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারধোর করার হুমকি আসে অজ্ঞাত লোকেদের কাছ থেকে।

এরপর উপায় না পেয়ে বিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনতে আইনি লড়াইয়ের পথে নামেন দাড়িভিট স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবক-অভিভাবিকরা। অভিযোগে জানান,দাড়িভিটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দায়িত্ব ছিল মূলত এসডিও’র। কিন্তু পরিস্থিতি শান্ত করতে এসডিও,জেলাশাসক এবং অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে সাহায্য চাওয়া হলেও তাঁরা নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। এমন কোনো ভূমিকাই তাঁদের নিতে দেখা যায়নি যাতে মামলাকারীদের পড়ুয়াদের শিক্ষা পাওয়ার অধিকার সুরক্ষিত থাকে।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত রাজ্যসরকারের বক্তব্য জানতে চাইলে প্রশাসনের তরফের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান,আদালত এই প্রসঙ্গে যেমন নির্দেশ দেবে,সেটাই পালন করা হবে৷ সেই সূত্রেই এদিন ওই সংশ্লিষ্ট নির্দেশ জারি করল হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত,দাড়িভিটে রাজ্যপুলিশের গুলি ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পর সিবিআই তদন্তের দাবী করেছিল মৃতের পরিবারের সদস্যরা।

সেটা নিয়ে একটা জটিলতা তো ছিলই,পাশাপাশি এই ঘটনার পর জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দাড়িভিটের বিক্ষুব্ধ এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। উক্ত ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠলে আদালতে ওই কমিশনের রিপোর্ট তলব করেছিল। ফলত অন্তত দু’টি মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় এদিন হাইকোর্ট ওই রায় ঘোষণা করল বলেই মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!