এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > বর্ধমান > ডিসেম্বরের মাইনে-পেনশন ১৫ দিন পেরিয়ে জানুয়ারিতে, আগামী দিনে আদৌ হবে কিনা চিন্তায় পুরকর্মী ও পেনশনভোগীরা

ডিসেম্বরের মাইনে-পেনশন ১৫ দিন পেরিয়ে জানুয়ারিতে, আগামী দিনে আদৌ হবে কিনা চিন্তায় পুরকর্মী ও পেনশনভোগীরা

নতুন সংকটে বর্ধমান পুরসভা! চলতি বছরে আয় ব্যায়ের কোনো সমতাই নেই পুরসভার কোষাগারে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে কীভাবে অস্থায়ী কর্মীদের মাইনে দেওয়া সম্ভব হবে তা নিয়ে চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে পুরসভা কর্তৃপক্ষের। একইভাবে ভবিষ্যত নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন অস্থায়ী কর্মীরাও। গত ডিসেম্বরের বেতন পেতে পেতেই জানুয়ারির ১৪-১৫ তারিখ হয়ে গিয়েছে।

এই প্রেক্ষিতে আগামী মাইনেগুলো আদৌ ঠিক সময়ে পাবে কিনা তা নিয়েই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বর্ধমান পুরসভার অস্থায়ী কর্মীশিবিরে। পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার অমিতকুমার গুহ এ প্রসঙ্গে জানালেন,”পুরসভার আয় বাড়ানোর জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ব্যয় সংকোচের জন্য প্রতিটি বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

 

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত,চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মীদের পারিশ্রমিক দিতে প্রতি মাসে পুরসভার কোষাগার থেকে খরচ হচ্ছে ৮২ লক্ষ টাকা। আর বিদ্যুৎ বিল,অবসরপ্রাপ্তদের পেনশন অন্যান্য খাতে খরচের পরিমান আরো ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। সব হিসাব করলে দাঁড়াল,মাস পিছু বর্ধমান পুরসভার তহবিল থেকে ২ কোটি ২২ লক্ষ টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে। অথচ ব্যায়ের তুলনায় আয় সেভাবে নেই।

জানা গিয়েছে,বিগত পাঁচ বছরের হাজারেরও বেশি অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করেছে বর্ধমান পুরসভা। মেয়াদ শেষের মুহূর্তেও ৯২ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। তবে এমন বেশ কিছু কর্মী পুরসভা চত্বরে ঘোরাফেরা করেন যারা কী কাজ করেন,কোথায় বসেন সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য নেই পুরসভার কাছে। এসব ভূতু্ড়ে কর্মীদের পুষতেই গচ্ছা গচ্ছা টাকা বেরিয়ে যাচ্ছে পুরসভার। কোষাগার শূন্য হয়ে যাচ্ছে।

এখন এই প্রেক্ষিতে প্রকৃত কাজ করেন যেসব অস্থায়ী কর্মীরা তাঁদের মাসের মাইনে কীভাবে দেওয়া হবে তা নিয়েই উদ্বিগ্ন বর্ধমান পুরসভার পরিচালনা কমিটির কর্তাব্যক্তিরা। আবার অপ্রয়োজনীয় এবং উদ্বৃত্ত কর্মীদের বরখাস্তও করতে পারছে না পুরসভা। কারণ এলাকার রাজনৈতিক নেতাদের সুপারিশেই অনেকেই নিয়োগপত্র পেয়েছেন। ফলত এটাও একটা মাথাব্যাথার কারণ হয়েছে বর্ধমান পুরসভা কর্তৃপক্ষের।

 

গত ১৪ জানুয়ারি এই সমস্যার সমাধানকল্পে দু’পাতার নির্দেশিকা জারি করে পুরসভার প্রতিটি বিভাগে পাঠিয়েছেন পুরসভার একজিকিউটিভ অফিসার অমিত কুমার গুহ। তাতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে,প্রতিটি বিভাগের খরচ কমানোর জন্যে বিভাগীয় প্রধানদেরই এগিয়ে আসতে হবে। প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল বাবদ ৪৫লক্ষ টাকা, পেনশন বাবদ ৪৬লক্ষ টাকা, চুক্তি ভিত্তিতে নিযুক্ত কর্মীদের মাইনে বাবদ ৮২লক্ষ টাকা এবং অন্যান্য খাতে আরও ৯লক্ষ টাকার যে বড়সড় অ্যামাউন্ট খরচ হয় তার পরিমান কমাতে হবে। এরজন্যে পুরসভার নিজস্ব তহবিলের(ওন ফান্ড) আদায় ঠিকমতো করতে নজরদারি কড়া করার নির্দেশ দেন প্রতিটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং কর্মচারীদের। এছাড়া,১ ফেব্রুয়ারি থেকে শহরজুড়ে কর আদায়ের জন্যে ক্যাম্প করার নির্দেশও দেওয়া হয় কর আদায়কারী বিভাগের প্রধানকে।

পাশাপাশি,নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে প্ল্যান পাশ করানোর উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্ল্যানিং বিভাগের আধিকারিকদের। অনুমোদন প্রক্রিয়াতেও গতি আনতে বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মিটার রিডিং চেক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভার বিদ্যুৎ বিভাগকে। পাশাপাশি, হাইমাস্ট লাইটের বিলের সত্যতা যাচাই করাও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাইসেন্স বিভাগকে নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, বর্ধমান শহরের সমস্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স সঠিকভাবে আছে কি না এবং সময়মতো রিনিউ করা হচ্ছে কি না তার জন্য অভিযান চালাতে হবে।

অনাদায়ী কর আদায়ে বিশেষ অভিযান চালাতে হবে। রাস্তার ধারের যে দোকানঘরগুলো৷ নিয়মিত কর দেয় না তাদের থেকে অবিলম্বে কর আদায় করতে হবে। এছাড়া,খোসবাগানের প্যাথলজি সেন্টার থেকে আয় বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধানকে। এখন বর্ধমান পুরসভার একজিকিউটিভ অফিসারের ফতোয়া জারির পর কোষাগারের আয়-ব্যয়ের সাম্যতা ফিরে আসে কিনা সেটাই দেখার!

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!