লোকসভায় বিজেপির সারাদেশে ভালো ফল করলেও, তারপর থেকে যত রাজ্যে নির্বাচন এসেছে, প্রায় সব কটিতেই পরাজিত হতে হয়েছে পদ্ম শিবিরকে। ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্রের পর এবার দিল্লিতেও শোচনীয় পরাজয় হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির। আম আদমি পার্টিকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বিজেপি সেখানে বহু চেষ্টা করলেও, তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। আর দিল্লিতে বিজেপির পরাজয়ের পর তা নিয়ে প্রবল উচ্ছাস দেখা গেছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে।

ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বিজেপি হারতে শুরু করেছে। তাই বাংলাকে টার্গেট করে তাদের আর কোনো লাভ নেই। তারা বাংলায় রসগোল্লা পাবে। তবে দিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টির পরাজয় নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস উচ্ছ্বসিত হলেও, সেই ঘাসফুল শিবিরকে এবার সতর্ক করে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

সূত্রের খবর, শনিবার কলকাতায় দলের বৈঠকের পর এই ব্যাপারে দিলীপ ঘোষ বলেন, “দিল্লিতে বিজেপির নৈতিক জয় হয়েছে। আমরা দিল্লিতে 40% ভোট পেয়েছি। গতবারের থেকে আসন বেশি পেয়েছি। আমরা বিধানসভার মসনদে না বসতে পারলেও, সম্মানজনক হেরেছি। যারা হার নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করছেন, তারা কি করেছেন! কংগ্রেসের তো জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। সিপিএম নোটার থেকে কম ভোট পেয়েছে। আর দিল্লিতে তৃণমূলের অস্তিত্বই নেই। তারা আবার বিজেপির হার নিয়ে এই রাজ্যে সমালোচনা করছে। দিল্লির ভোটের ফলাফলের কোনো প্রভাব এই রাজ্যে পড়বে না। মানুষ এরাজ্যে পরিবর্তন চাইছে। তাই সকলে বিজেপিকেই ভরসা করছে।”

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দিল্লিতে বিজেপির পরাজয়ের পর বাংলাতেও তাদের পরাজয় ঘটবে বলে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে ব্যাপক প্রচার করা হচ্ছে‌। আর এই পরিস্থিতিতে দলীয় বৈঠকে দিল্লির ফলাফল, আর বাংলার ফলাফল এক হবে না বলে সেই তৃণমূলকেই সতর্ক করে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিকে অনুপ্রবেশ নিয়ে এদিন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ।

তিনি বলেন, “বাংলায় প্রতিদিন অনুপ্রবেশ হচ্ছে। আর তাতে রাজ্য সরকার মদত দিচ্ছে। তবে বিজেপি ক্ষমতায় আসলেই এই ঘটনার পরিবর্তন হবে।” পাশাপাশি এদিনের এই বৈঠক থেকে সাধারণ মানুষের আস্থাভাজন হতে সকল নেতাদের পরামর্শ দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সব মিলিয়ে দিল্লির নির্বাচনে যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, বাংলায় যে পরিবর্তন আসন্ন, দলীয় বৈঠকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়ে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের।