প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ নেপালের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে বলে জানা যাচ্ছে। এতদিন পর্যন্ত ভারত এবং নেপাল প্রতিবেশী দেশ হিসেবে যথেষ্ট সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিল নিজেদের মধ্যে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, গালওয়ান সীমান্তে চীন এবং ভারতের যে আন্তর্জাতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তারপর থেকেই নেপালও অন্যরূপ ধরেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে নেপাল ভারতের বেশ কিছু এলাকা নিজেদের এলাকা বলে দাবি তুলে বারবার সংঘাতের রাস্তায় এগিয়ে আসছে।

উপরন্তু সম্প্রতি নেপাল তাঁদের দেশের মানচিত্রে বদল এনেছে। যেখান থেকেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। দেখা যাচ্ছে, নেপালের নতুন মানচিত্রে ভারতের বেশ কিছু জায়গা নেপালের অংশ হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। আর তারপর থেকেই নেপাল ভারত সংঘাত অন্যতম হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে সম্প্রতি জানা যাচ্ছে, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তাঁর নিজের দেশেই তিনি হয়ে পড়েছেন কোণঠাসা। কিন্তু তিনি সম্পূর্ণ ঘটনার পেছনে ভারতের চক্রান্তকেই প্রতিষ্ঠা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

প্রয়াত কমিউনিস্ট নেতা মদন ভান্ডারীর স্মরণসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সম্প্রতি নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন ভারতের প্রতি বলে জানা গেছে। এদিন তিনি বলেন, নেপালের নতুন মানচিত্র প্রকাশের পর থেকেই ভারত নেপালের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বৈঠক চালাচ্ছে। আর তার ফলেই বোঝা যাচ্ছে, তাঁকে তার আসন থেকে পদচ্যুত করার চক্রান্ত চলছে। অন্যদিকে, নতুন মানচিত্র প্রকাশের মধ্যেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে নেপাল সরকারকে।

নেপালের রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, চীনের উস্কানিতেই কি ওলি সরকার ভারতের বিরুদ্ধে গিয়ে এ ধরনের কাজ করছে? সূত্রের খবর, নেপাল চিন সখ্যতা নিয়ে বহু আগে থেকেই চাপা ক্ষোভ ছিল নেপাল সরকারের অন্দরেই। মানচিত্র প্রকাশের পর সেই ক্ষোভ এবার সম্মুখে আসতে শুরু করেছে। সম্প্রতি নেপাল নতুন যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে, সেখানে ভারতের লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখ যেগুলি ভারতের উত্তরাখণ্ডের অংশ বলে পরিচিত, সেগুলিকে নিজেদের বলে দাবি জানিয়েছে।

এবং সেই অনুযায়ী মানচিত্রও তৈরি করে ফেলেছে। তারপর থেকেই নেপালের প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপ বাড়তে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এতদিন পর্যন্ত ভারত নেপাল সখ্যতা বেশ ভালই ছিল। কিন্তু চিনা অনুপ্রবেশ করার পর থেকেই তাল কাটতে শুরু করে। নেপাল সরকার হঠাৎ করেই দাবি তোলে, ভারত নেপালের তিনটি অংশকে জোরজবরদস্তি দখল করে রেখেছে। এমনকি বিহার সীমান্ত এলাকায় সম্প্রতি নেপাল সেনাবাহিনীর গুলিতে একজন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে বলেও খবর।

তবে জানা যাচ্ছে, বর্তমানে নেপাল ভারত সম্পর্ক উন্নতি করার জন্য কূটনৈতিক স্তরে যথেষ্ট আলোচনা চলছে। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে ভারত চীন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে যথেষ্ঠ আলোড়ন চলছে। এর মধ্যেই নেপাল যেভাবে উঠে পড়ে লেগেছে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে যাবার জন্য, তা যথেষ্ট চিন্তার কারণ। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, নেপালে এই মুহূর্তে আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিবাদ চলছে। সেই বিবাদ যদি সামলানো না যায়, তাহলে পরবর্তীতে নেপালের পরিস্থিতি কিন্তু আরো জটিল হবে। অতএব আগামী দিনে নেপাল ভারত সম্পর্ক কোন দিকে যেতে চলেছে তা জানতে গেলে আরও বেশ কিছুদিন নজর রাখতে হবে পুরো বিষয়টির ওপর বলে মনে করা হচ্ছে।