প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়ে আগামী দিনে যাতে গোটা দেশের বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে মহাজোট গঠন করা যায়, তার জন্য দিল্লি সফর করছেন তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর তার প্রথম এই দিল্লি সফর। সেদিক থেকে এই দিল্লি সফরে তিনি একদিকে যেমন বিজেপি বিরোধিতার জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করবেন, ঠিক তেমনই বাংলার জন্য কেন্দ্রের কাছে দাবিদাওয়া পেশ করতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ দিল্লির মাটি থেকে এখন নিজের দলকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি আগামী দিনে বিজেপি বিরোধিতায় যাতে তিনি প্রধান মুখ হয়ে উঠতে পারেন, তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই তৎপরতা বলে দাবি করছেন একাংশ।

তবে দিল্লিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের চেষ্টা করলেও, তাকে যাতে পাল্টা চাপে ফেলে দেওয়া যায়, এখন তার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। যেখানে বাংলার অপশাসনের কথা তুলে ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি থাকার সময় রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হতে পারে বাংলার একাধিক বিজেপি বিধায়ক। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন দেশকে বিজেপি মুক্ত করার চেষ্টা দিল্লি থেকে শুরু করবেন, ঠিক তখনই বাংলার পরিস্থিতি যে খুব একটা ভালো নয়, তা তুলে ধরে অন্যান্য বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে গেরুয়া শিবির বলেই মনে করছেন একাংশ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লির উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছেন। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকেই বিভিন্ন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন তিনি‌। আর তারপরেই বিজেপি বিরোধী মহাজোট গঠনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হতে পারে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি পৌঁছে যাওয়ার সাথে সাথেই রাষ্ট্রপতির কাছে বাংলা নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে বাংলার বিজেপি বিধায়করা তৃণমূল নেত্রীকে চাপে ফেলে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে অন্যান্য বিষয়ের কথা তুলে ধরে তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাদের বাংলার প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টি। যার জেরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনেকটাই চাপের মুখে পড়তে ড়তে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

একাংশ বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাকে মডেল করে এখন দিল্লি থেকে বিজেপিকে সরাতে চাইছেন। এক্ষেত্রে একুশে জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশের ভার্চুয়ালি মঞ্চ থেকে বারবার বাংলার কথা তুলে ধরে দেশকে বিজেপি মুক্ত করার বার্তা দিয়েছেন তিনি। যার জেরে মনে করা হচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর অন্যান্য বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা কতটা, তা বুঝে নিতে চাইছেন। এক্ষেত্রে আগামী দিনে বিজেপিকে সরাতে হলে তিনি যে সেই মহাজোটের নির্ণায়ক শক্তি হতে চান, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত একাংশ।

তাই এই পরিস্থিতিতে এই বিজেপি বিরোধী অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যারা সেই বিরোধী মহাজোটে শামিল হওয়ার চিন্তা ভাবনা করছেন, তাদের কাছেও তৃণমূল নেত্রী এবং তার বাংলার প্রশাসন সম্পর্কে যাতে খুব একটা ভালো বার্তা না যায়, তার জন্যই বিজেপির এই পরিকল্পনা বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেই কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে থেকে যখন বিরোধী মহাজোট গঠনের জন্য প্রস্তুতি নেবেন, ঠিক তখনই বাংলা নিয়ে একাধিক অভিযোগ জানিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্বারস্থ হতে পারে ভারতীয় জনতা পার্টির বাংলার বিধায়করা। সব মিলিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে চাপে ফেলতে বিজেপির এই মহা পরিকল্পনা কতটা কাজে দেয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।