প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  প্রতিমুহূর্তে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিচ্ছেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। যেদিন থেকে রাজ্যপাল হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে পা রেখেছেন তিনি, প্রায় সেদিন থেকেই স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে শিক্ষা, আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে প্রশাসন, বিভিন্ন বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য করতে দেখা গেছে তাকে। যার ফলে অস্বস্তিতে পড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধান নন, বরং তিনি বিজেপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন।

আর তৃতীয় তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই রাজ্যপালের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে আরও বেশি করে বিরোধিতা করার ঘটনা সামনে আসছে। সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্যপালকে অপসারণ করার দাবি তুলে কিভাবে গোটা পদ্ধতি হাসিল করা যায়, তার চেষ্টা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর সেই চেষ্টার অঙ্গ হিসেবে এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হতে চলেছে তারা। যে ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে সরাতে এভাবে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়া বঙ্গ রাজনীতিতে যে শোরগোল তুলে দেবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সূত্রের খবর, সংসদের উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষের তৃণমূলের পাঁচ জন প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির কাছে দেখা করার জন্য সময় চাইলেন। আর তারা রাষ্ট্রপতির দরবারে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকারের অপসারণের বিষয়টি তুলে ধরবেন বলে খবর। মূলত, রাজ্যপালকে বরখাস্ত করার দাবি তুলে তৃণমূলের এই রাষ্ট্রপতি দরবারে যাওয়ার উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দলীয় স্তরে এই বিষয়টি নিয়ে একপ্রস্থ আলোচনা করেছে শাসক দল।

বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, প্রতিমুহূর্তে রাজ্য সরকারকে যেভাবে বিদ্ধ করছেন রাজ্যপাল, তাতে রাজ্যের অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে। যে কোনো বিষয়ে রাজ্যপালের মন্তব্য শাসক দলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। যার জেরে বাড়তি হাতিয়ার পেয়ে যাচ্ছে বিরোধীরা। তাই এই পরিস্থিতিতে এমন সাংবিধানিক প্রধান, যিনি প্রতিমুহূর্তে সরকারের বিরোধিতা করেন, তাকে আটকাতে এখন দেশের সর্বোচ্চ পদ রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। আর সেই কারণেই একদিকে বিজেপি এবং অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে চাপে রাখতে সাংবিধানিক প্রধানকে অপসারণের জন্য এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হতে চলেছে ঘাসফুল শিবির।

সমালোচকদের একাংশ বলছেন, তৃণমূল যদি সত্যি সত্যিই রাজ্যপালকে সরানোর জন্য রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়, তাহলে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কেননা একজন সাংবিধানিক প্রধান, তিনি রাজ্যের ভালো চান। সেক্ষেত্রে রাজ্যের ভালো, মন্দের দিক তিনি তুলে ধরতে গিয়ে যদি সরকারের বিড়ম্বনা বাড়ে এবং তার ফলে যদি সেই শাসকদল রাজ্যপালকে সরাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে তা গণতন্ত্রের পক্ষে খুব একটা শুভ লক্ষণ নয় বলেই দাবি করছেন একাংশ। সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।