কলকাতায় গঙ্গার ভাঙন ক্রমশ তীব্র হচ্ছে! কিন্তু আটকাবে কে? পুরসভা-বন্দর তরজায় বাড়ছে বিপদ? কলকাতা রাজ্য September 27, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ভাঙন যে কি সর্বগ্রাসী হতে পারে, তা এতদিনে মর্মে মর্মে বুঝেছেন মুর্শিদাবাদ, মালদাবাসীরা। গঙ্গা ভাঙনের হাত ধরে তলিয়ে গেছে কত শত জমি, বাড়ি, স্কুল ইত্যাদি। কিন্তু এবার গঙ্গা ভাঙন এর ছবি ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে কলকাতায়। ইতিমধ্যে গঙ্গার জলে তলিয়ে গেছে কলকাতার বহু ঘাট। নজরে এসেছে গঙ্গার ধারের বেশ কয়েকটি ওয়ারহাউজ, গোডাউন প্রায় নদীগর্ভে যাওয়ার আগের মুহূর্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অন্যদিকে অনেকগুলি ঘাটের সিঁড়ি ভেঙে যাওয়ায় জোয়ারের সময় স্নান করতে নেমে অনেকেই পড়ছেন বিপদে। এই অবস্থায় পাড় বাঁধানো যে সবথেকে বেশী জরুরী তা প্রত্যেকেই বুঝেছেন। কিন্তু কাজের দায়িত্ব কে নেবে তাই নিয়ে কলকাতা পুরসভা এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে চলছে টানাপোড়েন। পুরসভা গঙ্গার পাড় বাঁধানোর কাজে এগিয়ে এলেও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো রকম সাড়া দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত পাঁচ-ছয় বছর ধরে গঙ্গা ক্রমশ এগিয়ে আসছে পাড়ের দিকে। ইতিমধ্যে মায়ের ঘাট, কুমারটুলি ঘাট, নিমতলা ঘাট, জগন্নাথ ঘাট পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার রাস্তার উপরেই ছিল আরও একাধিক ছোট ছোট ঘাট, যেগুলির আজ আর কোন অস্তিত্ব নেই। গঙ্গার ঢেউয়ের ধাক্কায় ভাঙতে ভাঙতে রীতিমতো ভাঙনের কিনারায় চলে এসেছে বেশ কয়েকটি গুদামঘর এবং ওয়্যারহাউস। স্থানীয়রা অভিযোগ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনকে বলেও কোন লাভ হয়নি। একদিকে যেমন বাবুঘাট, প্রিন্সেপ ঘাট, কাশী মিত্র ঘাট, আহিরীটোলা, নিমতলা, বাগবাজার ঘাটসহ কলকাতার একাধিক জায়গায় গঙ্গার পাড় বাঁধানো হচ্ছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ঠিক সেভাবেই আলোর বিপরীত অন্ধকারে রয়েছে কুমোরটুলি ঘাট থেকে নিমতলা ঘাট হয়ে জগন্নাথ ঘাট। এই প্রসঙ্গে স্থানীয়রা ঘাট সংস্কারের দিকেই গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি, পুরসভা এবং পোর্ট ট্রাস্টের চাপানউতোরকে নয়। গঙ্গার পাড় ভাঙনের পাশাপাশি উত্তর কলকাতার বেশ কিছু অঞ্চল আবর্জনার আস্তাকুঁড় হয়ে রয়েছে। নদীর পাড়ের একাধিক গুদাম এবং ওয়্যারহাউসের ময়লা-আবর্জনা সরাসরি গিয়ে পড়ছে গঙ্গার বুকে। যেমন- পোস্তা অঞ্চলের স্থানীয় কারখানার জঞ্জাল নিয়মিতভাবে ফেলা হয় গঙ্গায়। শুধু তাই নয়, ওয়্যারহাউস সংলগ্ন ও রেললাইনের পাশ থেকেও ক্রমাগত গৃহস্থালী আবর্জনা সরাসরি গঙ্গায় ফেলা হয়। এলাকায় কোনো ডাস্টবিন নেই, কোনো ভ্যাট নেই। ফলে একদিকে নদীর দূষণ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে, তেমনি ঘাটগুলিতেও জঞ্জাল পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। যদিও কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষ সমস্ত অভিযোগ একপাশে সরিয়ে দেখে জানিয়েছে, প্রত্যেকটি ঘাটে প্রতিনিয়ত নজর রাখা হয়। যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কলকাতার গঙ্গা ভাঙন নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তায় এলাকাবাসীরা। এবং দীর্ঘদিন ধরে অপরিষ্কার পরিবেশে থাকতে থাকতে এলাকাবাসীরা হয়ে উঠেছে ক্ষিপ্ত। গঙ্গার ভাঙন প্রতিরোধ করতে না পারলে এবং সেখানকার অধিবাসীদের দিকে নজর না দিলে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখনই সামাল না দিলে পরবর্তীতে এই ভাঙন যে আরো সর্বগ্রাসী হবে, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কলকাতা পুরসভার অবশ্যই এ দিকে নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। আপনার মতামত জানান -