এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > ধর্ম,রাজনীতি কোন্দল সব কিছুর উর্ধে উঠে চোখের জলে শেষ বিদায় নিলেন বাঙালির অপু, ভালো থেকো ফেলুদা!

ধর্ম,রাজনীতি কোন্দল সব কিছুর উর্ধে উঠে চোখের জলে শেষ বিদায় নিলেন বাঙালির অপু, ভালো থেকো ফেলুদা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গতকাল ১৫ ই নভেম্বর দুপুর ১২ টা বেজে ১৫, মরণের পারে চলে গেলেন বাঙালির অপু, ফেলুদা। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ৪০ দিনের যে তীব্র লড়াই চলছিল, গতকাল তার সমাপ্তি হল। হারিয়ে গেলেন বাঙালির স্বর্ণযুগের শেষ প্রতিনিধি। একসময় মৃত্যুকে স্মরণ করে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় লিখেছিলেন, ” মৃত্যু আয় তিনপাত্তি খেলি আয়।” গতকাল সেই মৃত্যুর কাছেই চলে গেলেন তিনি।

পরিসমাপ্তি ঘটলো তাঁর ৮৬ বছরের স্বর্ণময় অধ্যায়ের। কিন্তু, প্রিয় নায়কের বিদায় বাঙালি যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। বাঙালির কণ্ঠ তখন ছিল ” যেতে নাহি দিব “। কেওড়াতলা শ্মশান মুখে চলছে তাঁর মৃতদেহ। করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে রাজপথে নেমেছে মানুষের ঢল। রাজপথে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী থেকে সাধারণ মানুষ। রাজনীতি, ধর্ম, করোনা সবকিছু ভুলে সমবেত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ।

প্রিয় ফেলুদাকে দেখতে পথে নেমে পড়েছেন অনেকেই। যেখানে হুইল চেয়ার নিয়ে পৌঢ়া যেমন এসেছেন, তেমনি এসেছে ছোট শিশু। গতকাল শীতের বাতাস বিদায়ের ক্ষনে যেন আরো ভারী হয়ে যাচ্ছে। বাজছে রবীন্দ্র সংগীত, রাজনীতি, ধর্ম ভুলে ভেসে আসছে মানুষ। সকলে যেন গাইছে, ” আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে, এ জীবন পুণ্য করো…”। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। মরণব্যাধি ক্যান্সারকে নিয়েও হাসিমুখে একাধিক সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। করোনাকেও তিনি জয় করেছিলেন। তাই তাঁর চলে যাওয়া, কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না বাঙালি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

গত শুক্রবার থেকেই তাঁর উপর আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। অলৌকিক শক্তির শরণাপন্ন হওয়ার কথা বলছিলেন চিকিৎসকেরা। গতকাল তাঁদের আশঙ্কাই সত্য হলো। গতকাল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এর মৃতদেহ প্রথমে তাঁর গলফ গ্রিনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারপর সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হল টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে, তারপরও তাঁর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হলো রবীন্দ্র সদনে।

অভিনেতাকে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান, বহু পরিচিত ও অপরিচিত মানুষ। রাজনীতি, ধর্ম, দূরত্ব কোন কিছুই মানা হয়নি তখন। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে দেবশ্রী চট্টোপাধ্যায় কাঁদছিলেন তখন। সকলেই বলছিলেন যে, একেবারে হাতে ধরে শিখিয়েছিলেন, পিতৃপ্র্রতিম এই মানুষটি। অপর্ণা সেন তাঁকে পলিম্যাথের মর্যাদা দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন এমন এক মানুষ যিনি সারাক্ষণ কাজের পাশাপাশি লিখতেন, আবৃত্তি করতেন।

গতকাল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এর শেষ যাত্রায় সূর্যকান্ত মিশ্ররও উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল। অন্যদিকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের হাসপাতালে ভর্তির সময় থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা গেল তার মৃত্যুর দিনেও। রবীন্দ্রনাথের, উত্তম কুমারের মৃত্যুর দিনের কথা গতকাল বাঙালির স্মরণে এলো। গতকালের দিনটিও একটা দুঃখের দিন হিসেবে বাঙালির স্মৃতিতে বিরাজ করবে। গতকাল বেলাশেষে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে যেন বলতে শোনা গেল,
” হে বন্ধু বিদায়।
মোর লাগি করিয় না শোক-
আমার রয়েছে কর্ম, রয়েছে বিশ্বলোক।
মোর পাত্র রিক্ত হয় নাই,
শুন্যেরে করিব পূর্ণো, এই ব্রত বহিব সদাই।”

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!