প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ধারালো ছুরি দেখিয়ে, খুন করে ফেলার ভয় দেখিয়ে মালদহের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে তার দিদিরই প্রেমিক। ধর্ষণের সময় তার নগ্ন ছবি পর্যন্ত তোলার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু প্রাণের ভয়ে ধর্ষণের কথা গোপন করেছিল সেই কিশোরী। ধর্ষণের পর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরেছে সে। এরপর বিষয়টি জানতে পেরেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। সেই যুবকের নামে থানায় অভিযোগ করলেও অভিযুক্তর পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে। এমনকি অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দেয়া হয়েছে। গ্রামের সালিশি সভায় সম্পূর্ণ বিষয় মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নাহলে পরিবারকে একঘরে করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। যে ঘটনায় তীব্র চাপানউতোর স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে।

মালদহ জেলার চাঁচল মহাকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ভয় দেখিয়ে জোর করে ধর্ষণ করেছে এক যুবক। যে তৃণমূলের এক সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত। সে আবার ধর্ষিতার দিদির প্রেমিক। তাই বাড়িতে তার যথেষ্ট যাতায়াত ছিল। একদিন বাড়িতে যখন কেউ ছিল না, তখন প্রাণের ভয় দেখিয়ে জোর করে ধর্ষণ করা হয় এই নাবালিকাকে। তাকে ভয় দেখানো হয়, এ কথা প্রকাশ করলে তার নগ্ন ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেয়া হবে। কিন্তু এরপর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরেছে এই নাবালিকা।

এই ঘটনার পর পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে তার পরিবার। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল নেতারা দাবি করেছেন যে, এখানে কোন ধর্ষণের ঘটনাই ঘটেনি। যুবকের সঙ্গে এই মেয়ের সম্পর্ক ছিল বলেই, সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরেছে। গ্রামের মোড়লেরা সালিশি সভার মাধ্যমে সবকিছু মিটিয়ে নেবার হুমকি দিয়েছেন। এর সঙ্গে সঙ্গেই ওই যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেওয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। না হলে পরিবারকে একঘরে করে দেবার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে। অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতাদের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠতা আছে, এ কারণে বিষয়টি নিয়ে একদম চুপচাপ তৃণমূল নেতৃত্ব।

আর এ কারণেই পুলিশ এখনো পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারিনি সেই যুবককে। অভিযোগ উঠেছে, এখনো অবাধে গ্রামে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে সেই যুবককে। তবে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্বু রহমান জানালেন যে, এই যুবক তৃণমূলের কর্মী নয়। তার সঙ্গে তৃণমূলের কোন সম্পর্ক নেই। এই যুবক আসলে বিজেপির কর্মী। এই বুথের সকলে বিজেপির সমর্থক। ইচ্ছে করে তৃণমূলের নাম জড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলকে বদনাম করা হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনাকে তৃণমূল কখনোই প্রশ্রয় দেয় না। তবে, তৃণমূল নেতা এই দাবি করলেও গ্রামের মোড়ল ও স্থানীয় তৃণমূলের নেতারা যেভাবে যুবকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন, যেভাবে ধর্ষিতার পরিবারকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার ও একঘরে করার হুমকি দেয়া হয়েছে, তাতে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট চাপানউতোরের সৃষ্টি হয়েছে।