দীঘা কে গোয়া করার স্বপ্ন আরও উস্কে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, ‘বাঙালি প্রধানমন্ত্রীর’ জল্পনা তীব্রতর করলেন হেভিওয়েট সাংসদ মেদিনীপুর রাজ্য December 7, 2018 পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনিক বৈঠকে এদিন দীঘাকে গোয়া করার রাজ্য সরকারের পরিকল্পনাটির গোড়ায় ফের জল দিলেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, সৌন্দর্যে দীঘা একদিন গোয়াকেও টেক্কা দেবে। সাত কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ তৈরি হচ্ছে দীঘায় – ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, বিশ্ববাংলা পার্ক, নতুন রাস্তা, ব্রীজ তৈরি হচ্ছে। আরো দুটো ব্রিজ নির্মান হয়ে গেলে মুম্বইয়ের মতো মেরিন ড্রাইভ উঠে আসবে দীঘাতেই। আর এই কাজ সম্পন্ন করা হলেই পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে দীঘায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, গত কয়েক বছরে দীঘার ছবিই পাল্টে গিয়েছে – আগের থেকে পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে এখানে। একই সঙ্গে, জেলার বেকার ছেলেমেয়েদের উদ্দেশ্যে বললেন, বর্তমানে দীঘা এবং হলদিয়াকে কেন্দ্র করে প্রচুর কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে – আগামী দিনেও এই সুযোগ আরো বাড়বে। কাজের সন্ধানে ছেলেমেয়েদের আর ভীন রাজ্যে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। সকলে বাড়িতে বসেই কাজের সুযোগ পাবেন। প্রসঙ্গত, বাজকুল কলেজ মাঠের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারি ছাড়াও জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস, দুই সাংসদ সদস্য, বিধায়ক, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, পুরসভার চেয়ারম্যানদের পাশাপাশি পুলিস ও প্রশাসনিক আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। আগামীদিনে রাজ্য সরকারের জনমুখী প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরতে নেত্রী জানান, তমলুক রাজবাড়ি সহ জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রে আরো বেশি করে হোম ট্যুরিজম তৈরি করা হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মন্দারমনিতে বাড়িতে বাড়িতে হোম ট্যুরিজম তৈরি করা হয়েছে। সুন্দর টিভির পাশাপাশি সুন্দর করে বায়ো টয়লেটও লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে দেড় লক্ষ টাকার বাড়িতে। সবটাই পর্যটকদের সুবিধার কথা ভেবেই করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি ‘পিঙ্ক ক্যাবের’ ভূয়সী প্রশংসা করেন। এরপরই বিরোধীদের আক্রমণ করে তৃণমূলনেত্রী জানান, বাম আমলে কপালেশ্বরী, কেলেঘাইয়ের বন্যায় রোজ যখন গ্রামের পর গ্রাম ভাসতো, কী করেছিল পূর্বতন সরকার? ওই কাজ তৃণমূল সরকার করেছে। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে মুখ্যমন্ত্রীর আরও বক্তব্য, স্বাধীনতার পর এখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় দেয়নি ভারত সরকার। তৃণমূলই মহিষাদলে গান্ধীজির নামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছে। তমলুকে মেডিক্যাল কলেজ করা হচ্ছে। হলদিয়ায় ২০ হাজার কোটি টাকা ইনভেস্ট করা হচ্ছে। আরও ইনভেস্ট আসছে। তাজপুর বন্দর অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। এইসব কাজ সম্পূর্ণ হলে আরও অনেক নতুন শিল্প তৈরি করা হবে। রাস্তাঘাট আগের থেকে উন্নত হয়েছে, তৈরি হচ্ছে নতুন ডিগ্রি কলেজ, আইটিআই, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল হয়েছে। ১,১০০ কোটি টাকার জলের প্রকল্পও হাত রয়েছে রাজ্য সরকারের। ২,৩০০ কোটি টাকার পানীয় জলের প্রকল্পও নেওয়া হয়েছে। কাঁথিতে ১৩০ বেডের হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে মা এবং শিশুর সুবিধার কথা ভেবে। এরপর বাজপুরবাসীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবী মেটাতে মাত্র ৯ মাসেই দীঘা-তমলুক রেল লাইন তৈরি করে দিয়েছে তৃণমূল সরকার। এমনকি নন্দীগ্রাম পর্যন্তও লাইন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সুযোগ পেলে আবারও মানুষের প্রয়োজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে এই রাজ্য সরকার – এমনটাই আশ্বাস দিলেন নেত্রী। পাশাপাশি আরো জানালেন, ময়নাকে মডেল করে মাছ চাষের বার্তা সারা রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিনামূল্য হাঁস, মুরগি, ছাগল প্রতিপালনের যে সুযোগ এই রাজ্য সরকার দেয়, তা বামেরা কখনো দিতে পারেনি, এমনটাই দাবী জানান নেত্রী। গ্রামের মানুষকে কর্মসংস্থানের আওতায় আনতে এভাবে সাহায্য করছে রাজ্য সরকার। নেত্রীর ইচ্ছে আরো বেশি করে হাঁস-মুরগির পোলট্রি হোক রাজ্যে। এই কাজে উৎসাহীদের পঞ্চায়েত, বিডিও এবং জেলা পরিষদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করার পরামর্শ দিলেন নেত্রী। এছাড়া বহুদিনের বিতর্কিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে বিঁধতে ছাড়েননি নেত্রী। এছাড়া রাজ্যের রেশন পরিষেবা থেকে শুরু করে মানবিকভাতা, বিধবাভাতা, কিষানভাতা সহ একাধিক সরকারি প্রকল্পের কার্ড সাধারণ মানুষ পেয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন জেলা আধিকারিকদের। এদিনের সভায় শুভেন্দুবাবু বক্তব্যে তুলে ধরেন ঐতিহ্যময়ী পূর্ব মেদিনীপুরের গরিমার কথা। তিনি জানান, এক হাতে শাঁখ, এক হাতে তেরঙ্গা পতাকা, মুখে বন্দেমাতরম ধ্বনি দিতে দিতে হাসি মুখে শহীদ হয়েছেন মাতঙ্গিনী হাজরা। নন্দীগ্রাম গণ আন্দোলনের ভূমি এটি। তাই বিভেদের রাজনীতি করা বিজেপি সরকারকে দিল্লি থেকে হটাতে এবং ভারতবর্ষে সুশাসন এবং বাংলায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে ফের ঝাঁপাতে হবে গন আন্দোলনে – এমনটাই জেলাবাসীকে বার্তা দিলেন মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, বিজেপি সন্ত্রাস এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করে জয় লাভ করতে পারবে না। অন্যদিকে, জেলার মাটিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী করার দাবী তুলতে দেখা গেল হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা শিশির অধিকারীকে। আপনার মতামত জানান -