এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > জঙ্গলমহল ফিরে পেতে তৃণমূলের “প্ল্যান ফাঁস” করে বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ

জঙ্গলমহল ফিরে পেতে তৃণমূলের “প্ল্যান ফাঁস” করে বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ


পশ্চিম মেদিনীপুর এলাকায় ঘাসফুল শিবিরকে লোকসভা নির্বাচনে পর্যুদস্ত করে এলাকার দখল নিয়েছে গেরুয়া শিবির। এলাকায় অস্তিত্ব সংকট এসে উপস্থিত হয়েছে ঘাসফুল শিবিরের পক্ষে। যদিও নিজেদের পালে হাওয়া টানতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস এবং তার শীর্ষ নেতৃত্ব।

মিছিল, মিটিং থেকে শুরু করে সভা-সমিতির মধ্যে দিয়ে এলাকায় নিজেদের জমি ফিরিয়ে পেতে নানানভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তবুও এলাকায় পদ্মফুলের ব্যাপক উত্থানকে অস্বীকার করতে পারছে না শাসক দলের নেতৃত্ব বলে মত বিশেষজ্ঞদের। আর এরই মাঝে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পশ্চিম মেদিনীপুরে সংগঠন উদ্ধারে তৃণমূলের কায়দাকে কটাক্ষ করে গুরুতর অভিযোগ আনেন রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে।

সূত্রের খবর, রবিবার মেদিনীপুর শহরে ভারতীয় জনতা পার্টির লিগাল সেলূর এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। আর সেই অনুষ্ঠান থেকেই শাসকদলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দীলিপবাবু উল্লেখ করেন, “জঙ্গলমহলের মানুষ পরিবর্তন হয়ে গেছে। এখানকার মানুষ বিজেপির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। তাই এখানকার যেসব নকশাল মাওবাদীরা আত্মসমর্পণ করেছিলেন, তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাদেরকে নিয়ে গোপনে বৈঠক করা হচ্ছে। সমস্ত খবরই আমার কাছে আছে। মাওবাদীদের দিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখিয়ে ভোট টানার ওরা ব্যর্থ চেষ্টা করছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিনের এই দলীয় কর্মসূচি থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে এক হাত নিয়ে দীলিপ ঘোষ বলেন, “ছত্রধর মাহাতো মাওবাদী জানার পরও তার বাইকের পিছনে মুখ্যমন্ত্রী ঘুরেছিলেন। পরে ক্ষমতায় ফিরিয়ে তাকে জেলে ঢুকিয়ে দিলেন। এখন নির্বাচনে জেতার জন্য তাকে বের করার তোড়জোড় চলছে।”

এদিনের সভা থেকে এনআরসি প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থানকেও তীব্র প্রশ্নবানে আবদ্ধ করেন মেদিনীপুরের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপবাবু উল্লেখ করেন, এক সময় রাজ্যে অনুপ্রবেশকারীদের বিরোধিতা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। কারণ তখন অনুপ্রবেশকারীরা সিপিএমকে ভোট দিতেন‌। আর তাই অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য লোকসভায় সরব হয়েছিলেন তিনি।

এখন নিজেদের ভোটব্যাংক বাঁচাতে তিনি এনআরসির বিরোধিতা করছেন। কিন্তু আমরা এটা জোর দিয়ে বলছি বাংলায় এনআরসি হবেই। আর হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ফলে তাদের ভয় পাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আমরা বিল নিয়ে আসছি। তবে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপি তার নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এনআরসি প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থানকে কেন্দ্র করে তীব্র আক্রমণ চালাচ্ছে। অপরদিকে তৃণমূল কংগ্রেস নিজেদের রাজনৈতিক এজেন্ডা অনুসারে কেন্দ্রীয় সরকারের এনআরসি নীতির বিরোধিতা করছেন। দুই দলই অবগত আছেন, বাংলায় এই মুহূর্তে এনআরসির কোনো সম্ভাবনা নেই। তবুও নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ময়দানে অনড় দুই পক্ষই।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি কয়েক দিন আগে ডেবরাতে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নবানের মুখে পড়েন পুলিশ অফিসাররা। ওই বৈঠকে পুলিশ অফিসারদেরকে কড়া সমালোচনা করেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। দীলিপবাবু এদিনের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সেই পুলিশ সমালোচনার প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এবং পৌরসভা নির্বাচনে ওরা ভোট লুট করেছিল। যেসব গুন্ডারা রয়েছে, তাদের দিয়ে কাজ যে হবে না, তার নেত্রী বুঝে গিয়েছেন। কারণ এখন গুন্ডারা ভোট লুট করার চেষ্টা করলে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদ করবে। এই রাজ্যের সাধারণ মানুষ বদলে গিয়েছে। আদিবাসী থেকে শুরু করে গরিব মানুষ সকলেই তৃণমূলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর তাই গত লোকসভায় আমরা রাজ্যে এতগুলো আসন পেয়েছি। আওয়াজ বদলাতে শুরু করেছে, তা বুঝতে পেরেছেন পুলিশকর্তারাও। আর তাই মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন পুলিশ অফিসাররা দলের ক্যাডারের মত কাজ করবেন না। আর সেটা না করায় প্রশাসনিক বৈঠকে এসে তিনি পুলিশ অফিসারদেরকে মনোবল বাড়ানোর বদলে তা দুর্বল করে দিচ্ছেন।”

দীলিপবাবু এদিনের সভা থেকে রাজ্য সরকারের একাধিক নীতিকেও সমালোচনা করেন। পাশাপাশি মুকুল রায়ের সিবিআই হাজিরার প্রসঙ্গে দীলিপবাবুকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “তদন্তের স্বার্থে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে সকলের সহযোগিতা করা উচিত।” তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, 2021 সালে রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, রাজ্যের তৃণমূল-বিজেপি তরজা তত বেশি করে বৃদ্ধি পাবে। শাসক দলকে আক্রমণ করার কোনো সুযোগ যে ভারতীয় জনতা পার্টি ছেড়ে দেবে না, তা ইতিমধ্যেই তার নেতা-নেত্রীদের বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে।

অপরদিকে কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে রাজ্য বিজেপির যেকোনো জায়গা থেকে কড়ায়-গণ্ডায় বুঝে নিতে প্রস্তুত রাজ্যের শাসক দল। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, 21 সালের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে সাজো সাজো রব ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। সেই কারণে নিজের মতো করে প্রস্তুত হচ্ছে শাসক-বিরোধী সব পক্ষ।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!