এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > ভাঙবেন তবু মচকাবেন না! উপনির্বাচনের হারের পর নাকি নতুন “ওষুধ” বের করে ফেলেছেন দিলীপ ঘোষ!

ভাঙবেন তবু মচকাবেন না! উপনির্বাচনের হারের পর নাকি নতুন “ওষুধ” বের করে ফেলেছেন দিলীপ ঘোষ!


খড়গপুর থেকে শুরু করে কালিয়াগঞ্জ, সবখানেই জেতার ব্যাপারে আত্মপ্রত্যয়ী ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি এবং বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এমনকি ষষ্ঠ রাউন্ড শেষে যখন খড়্গপুরে রীতিমতো বড় ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস, তখনও পর্যন্ত একটি বেসরকারি নিউজ চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে দিলীপবাবু বলেছিলেন, “শেষ পর্যন্ত ভারতীয় জনতা পার্টি জিতবে।” কিন্তু তা শেষ হতে হতে বিজেপির সব আশার মুখে জল ঢেলে দিল 3 কেন্দ্রের উপনির্বাচন।

যার ফলাফলে যেখানে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস হ্যাটট্রিক করেছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। আর সেখানেই কার্যত শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে রাজ্যের গেরুয়া শিবিরকে। তাই নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরে যখন একটি সংবাদমাধ্যমের তরফ থেকে বঙ্গ বিজেপির সভাপতির কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাহলে কি এনআরসি নিয়ে বিজেপির অতি সক্রিয়তা মানুষ অন্যভাবে নিল! জবাবে এনআরসির বিরূপ প্রভাবের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

পাশাপাশি শাসকদল মানুষকে ভুল বুঝিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন দিলীপবাবু। সূত্রের খবর, এদিন একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যম থেকে যখন তাকে প্রশ্ন করা হয় যে, তাহলে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি মানুষের মধ্যে কি প্রভাব ফেলেছে! তার জবাবে তিনি বলেন, “এনআরসি নিয়ে ভুল ব্যাখ্যা করে রাস্তায় নেমেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মন্ত্রীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেছেন। কাকা আপনারা কবে এসেছেন, আপনাকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে।” আর প্রশাসন এবং সরকারের প্রচারে প্রভাব পড়তে পারে বলে মত দিলীপ ঘোষের।

একদিকে যেমন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এনআরসি কুপ্রভাবের কথা দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে মানুষের কাছে বুঝিয়ে বলতে সক্ষম হচ্ছে, তখন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে নিজেদের অবস্থান কি স্পষ্ট করতে ঘাটতি থেকে গেছে ভারতীয় জনতা পার্টির! সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল নিয়ে তারা কি মানুষকে সঠিক ভাবে বোঝাতে সক্ষম হয়নি! এর জবাবে দীলিপবাবু বলেন, “অবশ্যই এনআরসি নিয়ে মানুষকে বোঝাতে ঘাটতি থেকে গিয়েছে। তবে আমরা ওষুধ বার করছি।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বস্তুত, যে খড়গপুর আসনে এবার তৃণমূল কংগ্রেস জয়যুক্ত হয়েছে, সেই খড়গপুর আসনে ইতিপূর্বের বিধায়ক ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে ব্যাপক ভোট পেয়েছিল বিজেপি। তবে কেন এই কেন্দ্রে এবার জয় ধরে রাখতে পারল না ভারতীয় জনতা পার্টি! জবাবে তিনি বলেন, “আগের বার তৃণমূল কংগ্রেস বুঝতে পারেনি। তবে এবার আগে থেকে বুঝতে পেরে জেল থেকে সব মাফিয়াদেরকে ছেড়ে দিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় ভয় দেখিয়ে ভোট করানো হয়েছে। রাত্রিবেলায় গিয়ে হুমকি দেখানো হয়েছে।”

তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছিল, দিলীপ ঘোষ বিধায়ক হিসেবে এলাকায় কাজ করেনি। এদিন তার জবাবে বঙ্গ বিজেপি সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, “যদি কাজ না করে থাকি, তাহলে তিন বছর বিধায়ক থাকার পরে লোকসভা ভোটে 45000 লিড পেলাম কি করে! এবার কাজও করব এবং সংগঠনও করব।” সমগ্র নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে মত প্রকাশ করতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি জানিয়েছেন, উপনির্বাচনের ফলে বিজেপির সম্ভাবনায় কোনো প্রভাব পড়বে না।

তার মতে, উপনির্বাচন আলাদা পরিবেশে হয়। উপনির্বাচনে নিজের কেন্দ্রে হেরে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তবে লোকসভা ভোটে আবার সেখানে বিজেপি জিতেছে । একটা-দুটো ছোটখাটো নির্বাচন দেখে সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা উচিত নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রকৃত অর্থেই কার্যত এনআরসি প্রভাবেই ভারতীয় জনতা পার্টির জনসমর্থন অনেকটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এনআরসি প্রয়োগের ক্ষেত্রে যেভাবে ভারতীয় জনতা পার্টির তরফ থেকে শোরগোল হচ্ছিল, তাতে মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়েছে।

তাই আগামী দিনে নিজেদের নীতি পরিবর্তনের মাধ্যমে ভারতীয় জনতা পার্টি জনগণকে পুনরায় নিজেদের দিকে ফিরিয়ে আনতে পারে কিনা! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। কিন্তু, খড়্গপুর-সদর কেন্দ্রে নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর, নিজের ঘনিষ্ঠ নেতা প্রেমচাঁদ ঝাকে প্রার্থী করতে উঠে পরে লেগেছিলেন তিনি। এমনকি দলীয়স্তরে এমন বার্তাও দেন যে প্রেমচাঁদ ঝাকে প্রার্থী না করলে খড়্গপুরে বিজেপিকে হারতে হবে! কিন্তু দিনের শেষে তাঁকে ও তাঁর প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝাকে কার্যত ঘোল খাইয়ে ছেড়েছে তৃণমূল।

লোকসভার ৪৫ হাজারের লিড পূরণ করে সেখানে প্রায় ২১ হাজার ভোটে জিতে গেছে তৃণমূল। অর্থাৎ প্রায় ৬৬ হাজার ভোট হারালো বিজেপি, মাত্র ৬ মাসের ব্যবধানে! যা কার্যত বিজেপি রাজ্য সভাপতির ব্যক্তিগত হার বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু তিনি ভাঙবেন তবু মচকাবেন না! এরপরেও বলছেন ওষুধ বের করে ফেলেছেন! তবে এই ভরাডুবির পরে সেই ওষুধ প্রয়োগ করার জন্য তিনি আদৌ থাকেন কিনা সেই প্রশ্নই কিন্তু উঠে গেছে গেরুয়া শিবিরের অভ্যন্তরে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!