এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দিলীপ নয় মুকুলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেন্দ্রীয় নেতা, বাড়ছে জল্পনা

দিলীপ নয় মুকুলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ কেন্দ্রীয় নেতা, বাড়ছে জল্পনা

তৃণমূল কংগ্রেস দলে একদা সেকেন্ড-ইন-কমান্ডের দায়িত্বে ছিলেন মুকুল রায়‌। ঘাসফুল শিবিরে তার প্রতিপত্তি ছিল প্রচুর। যার ফলে দলের কর্তা-ব্যক্তিরা তৃণমূল কংগ্রেসকে তৃণমুকুল কংগ্রেস বলত। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ আস্থাভাজন ছিলেন প্রবাদপ্রতীম এই নেতা। কিন্তু পরবর্তীতে দলনেত্রীর সঙ্গে বিবাদের জেরে এবং দলীয় পরিস্থিতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন মুকুলবাবু।

অনেকেই মনে করেছিলেন, তিনি হয়ত এবার রাজনৈতিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছেন। তবে তার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দলের ভেতরে-বাইরে তাকে নিয়ে কটাক্ষের শেষ ছিল না। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কখনও চাটনি বলেছেন, কখনও বা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় “কাঁচরাপাড়ার কাঁচাবাবু” বলেছেন। কিন্তু তিনি যে রাজনৈতিক ভাবে কতটা বিচক্ষণ, তার প্রমাণ দিয়েছেন 2018 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, মুকুলবাবুর রাজনৈতিক কৌশলের ফলেই তৃণমূল দলকে একরকম চ্যালেঞ্জে জড়িয়ে দিয়ে কোথাও আসন রক্ষা করতে লাগামহীন সন্ত্রাস করতে হয়, কোথাও বা বিরোধীদেরকে নমিনেশন সাবমিট করতে বাধা দেওয়া হয় শাসকদলের তরফে। যার কারণে তৃণমূল দলের ভাবমূর্তি রাজ্যজুড়ে প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়।

আর এরপরে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজের কথামতো 42 এ 42 লোকসভা আসনের স্বপ্ন দেখা তৃণমূল কংগ্রেসকে মোটে 22 টি আসনেই আটকে দেয় বঙ্গ বিজেপির চাণক্য। তবে এতেও তিনি খুশি হননি। তার টার্গেট ছিল তৃণমূলকে কুড়ির কম আসনে আটকে দেওয়া। কিন্তু মুকুলবাবু খুশি না হলেও কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব ঠিকই বুঝেছিলেন যে মুকুলবাবুকে বঙ্গ বিজেপির লোকসভা নির্বাচনে কমিটির প্রধান করে কোনো রকম ভুল করেননি তারা। আর সেই আত্মপ্রত্যয়ী আওয়াজ এদিন ফুটে উঠল পশ্চিমবাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র গলায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, দিল্লিতে বিজেপির দলীয় কর্মশালায় কৈলাস বিজয়বর্গীয় স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, এর আগে বাংলায় কোনদিন এত সফলতা পায়নি ভারতীয় জনতা পার্টি। এটা সম্ভব হয়েছে মুকুলদার জন্যই। তার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা ভালো কাজ করেছে বলেই তৃণমূলের মতো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে আমরা লড়াই করে সফলতা পেতে সক্ষম হয়েছি। তিনি আরও জানান, আমরা মনে করি ভবিষ্যতে অনেক সাফল্য আসবে এই পথ ধরে। সবেমাত্র সাফল্যতার শুরু। মুকুল রায় যেভাবে সাংগঠনিকভাবে আমাদেরকে শক্তিশালী করেছে, তার সুফল মিলবেই। লোকসভা ভোটের আগে কেউ ভাবেনি আমরা এই সফলতা লাভ করতে পারি, তবে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। আর তাই সেই বিশ্বাসের সুফল পেলাম আমরা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আগামী 2021 সালের নির্বাচন পশ্চিমবাংলায় বিজেপির কাছে প্রধান লড়াই। এই বিষয়ে রণনীতি ঠিক করতে বঙ্গ বিজেপির সকল নেতাদের দিল্লিতে তলব করেন সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ‌। আর সেই বৈঠকেই তিনি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে দেন। কাকে কোন দায়িত্ব দেওয়া হবে, কিভাবে তারা এগোবেন, এছাড়াও তৃণমূলকে বাংলা থেকে উৎখাত করতে সেই পথনির্দেশিকা প্রদান করেন ভারতবর্ষের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি অধ্যক্ষ অমিত শাহ।

অমিতবাবু এক প্রকার জানিয়ে দেন, 2021 সালের নির্বাচনে রাজ্য সভাপতির পদে থাকছেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু নির্বাচনের মূল দায়িত্বে থাকবেন বঙ্গ বিজেপি চাণক্য মুকুল রায়। আর তারই নেতৃত্বে দল লড়াই করবে 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের রণাঙ্গনে। আর কৈলাস বিজয়বর্গীয় থাকবে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে। অপরদিকে অরবিন্দ মেনন উত্তরবঙ্গের বিশেষ দায়িত্বে থাকবেন।

সবকিছু মিলিয়ে একপ্রকার স্পষ্ট বঙ্গ বিজেপির অন্দরে মুকুল রায়কে নিয়ে নানা মুনির নানা মত থাকলেও দিল্লির নেতৃত্ব তার প্রতি যথেষ্ট ভরসা রাখেন। আর মুকুলবাবুর বিচক্ষণ রাজনৈতিক পরামর্শ যে বিজেপির কাছে অক্সিজেনের থেকে কোনো মূল্যে কম নয়, তাও স্পষ্ট এদিনের কৈলাস বিজয়বর্গীয় কথায়।

তাই বলা যায়, 2019 সালের নির্বাচন পশ্চিমবাংলায় যে টিমের নেতৃত্বে গেরুয়া শিবির লড়েছিল, 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনেও সেই টিমের নেতৃত্বে লড়তে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনের মূল দায়িত্বে যদি মুকুলবাবুর মত বিচক্ষণ ব্যক্তি থাকেন, তাহলে আগামী দিনে বিজেপির পক্ষে যেমন পথ মসৃণ হবে, তেমনই চিন্তার ভাঁজ পড়বে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কপালে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!