‘চাঁদার জুলুম’ শিক্ষামন্ত্রী জানেন না! তবুও সরকারি ছাপানো প্যাডে শিক্ষকদের কাছ থেকে ‘স্পোর্টসের চাঁদার’ নির্দেশিকা! কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য December 4, 2018 একে দেখা নেই বকেয়া ডিএ বা পে-কমিশনের – তার উপরে চার বছরের যোগ্যতা বাড়াতে বাধ্য করেও সরকার গায়ে ‘অযোগ্য’ লেবেল সেঁটে পিআরটি স্কেল দিতে চাইছে না রাজ্য সরকার – আর তাই অভিনব প্রতিবাদ হিসাবে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা এ বছর ক্রীড়ার চাঁদা বয়কটের পথে হাঁটেন। দিনের পর দিন রাজ্যের স্কুল-ক্রীড়া চলে আসছে প্রাথমিক শিক্ষকদের চাঁদার টাকায়। আর তাই এই প্রথার বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ জানাতে – এ বছর চাঁদা বয়কটের পথে হাঁটেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা। এই প্রসঙ্গে প্রতিবাদী শিক্ষক তথা শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের শীর্ষনেতা মইদুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, ১০০ বা ৫০০ – টাকার অঙ্কটা বড় বিষয় নয়। ব্যাপারটা হল নৈতিকতার। মইদুলবাবু বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে একটা অদ্ভুত প্রচার করা হচ্ছে যে শিক্ষকরা নাকি স্কুলক্রীড়ার বিরুদ্ধে! সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা – আমরা স্পষ্ট জানিয়েছি, শারীরিক এবং মানসিক – যেভাবে প্রয়োজন আমরা সাহায্য করে এই স্কুল ক্রীড়া সফল করতে রাজি আছি। কিন্তু, কোনোমতেই কোনো আর্থিক সাহায্য করে নয়। রাজ্য সরকার চারিদিকে খেলা-মেলা-উৎসব-কার্নিভাল করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। তাই, শিশুদের এই ক্রীড়া-উৎসব তো সরকারি অনুদানেই হওয়া উচিত! মইদুলবাবু আরও জানান, আমাদের বিভিন্ন প্রতিবাদ ও আন্দোলন কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমাদের শিক্ষক নেতাদের বিধানসভায় ডেকে পাঠান। সেখানেও, দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকদের চাঁদায় চলা স্কুলক্রীড়া প্রসঙ্গে তাঁকে জানানো হয়। শিক্ষামন্ত্রী সে সময় জানিয়েছিলেন – তিনি এই ব্যাপারে মোটেই অবগত নন এবং তিনি ব্যাপারটা দেখছেন। ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে মইদুলবাবুর বক্তব্য, বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এবং নৈতিকতার প্রশ্নে – আমরা শিক্ষকরা যে স্পোর্টসের চাঁদা বয়কটের পথে হাঁটছি – তা কিন্তু নাড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসনিক মহলকে। বিভিন্ন বৈঠকে শিক্ষকদের এই নিয়ে প্রশাসনিক চাপ দেওয়ার পাশাপাশি, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারা শিক্ষকদের বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন। ধমক-চমকের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নামে কুরুচিকর পোস্টার লাগানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমরা আমাদের প্রতিবাদের মাধ্যমে আলোড়ন তুলতে সমর্থ। এরপরেই মইদুলবাবু জানান, আর শিক্ষামন্ত্রী আমাদের জানিয়েছিলেন স্পোর্টসের এই চাঁদা নিয়ে তিনি নাকি কিছুই জানেন না! অথচ সরকারি এক আধিকারিক, খোদ জেলা প্রাথমিক স্কুল পর্ষদের চেয়ারম্যান রীতিমত সরকারি ছাপানো প্যাডে রেফারেন্স নাম্বার দিয়ে সরকারি নির্দেশিকা পাঠাচ্ছেন এই স্কুল ক্রীড়ার জন্য ৫০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হবে। যা এতদিন বেসরকারিভাবে জোর করে হচ্ছিল – তাতে তো এবার সরকারি সিলমোহর পরে গেল! ডিএ নেই, পে-কমিশন নেই, পিআরটি স্কেলের দেখা নেই – শুধু আছে চাঁদার জুলুমবাজি! মইদুলবাবু স্পষ্ট জানিয়ে দেন, শিক্ষকদের উপর এইভাবে জুলুমবাজি ও চাপ সৃষ্টির প্রতিবাদে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের পক্ষ থেকে আগামী বৃহস্পতিবার আমরা সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক স্কুল পর্ষদের চেয়ারম্যানের অফিসে আমরা প্রতিবাদ আন্দোলন করব ও ডেপুটেশন দেব। আমরা দিনের পর দিন বঞ্চিত – আর তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের আন্দোলন যে প্রশাসনকে নাড়িয়ে দিয়েছে, তা এইসব ঘটনায় স্পষ্ট। কিন্তু, এইভাবে জোড় করে শিক্ষকদের ঐক্য ভাঙা যাবে না – আমাদের প্রতিবাদ যেহেতু ন্যায্য ও নৈতিক – তাই তা আগামীদিনে আরও তীব্র হবে, যতক্ষন পর্যন্ত না সরকার আমাদের ন্যায্য প্রাপ্য মিটিয়ে দেয়। এই সেই সরকারি ‘নির্দেশিকা’ – যাকে ঘিরে রাজ্যের শিক্ষক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। আপনার মতামত জানান -