এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > এবার কি গৃহযুদ্ধ লাগলো বিজেপির অন্দরে, শরিক দলের মন্তব্যে জল্পনা

এবার কি গৃহযুদ্ধ লাগলো বিজেপির অন্দরে, শরিক দলের মন্তব্যে জল্পনা

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, জাতীয় নাগরিক পঞ্জী এবং জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ চলছে এখনো পর্যন্ত। বিক্ষোভের ঝড় ক্রমশ সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। এই তিনটি ইস্যু নিয়ে দেশের আপামর জনগণ কেন্দ্রীয় সরকার অর্থাৎ মোদি সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া হয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের একাংশ থেকে রাজনৈতিক অবিজেপি দলগুলোও রয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিরোধীরা শুধু নয়, আন্দোলন চালাচ্ছে সাধারণ মানুষও।

তবে এদিন বিহার বিধানসভায় সিএএ নিয়ে অন্য মত প্রকাশ করলেন জেডিইউ এর নিতিশ কুমার। উল্লেখ্য, নাগরিকত্ব আইন যখন লোকসভায় পাস হয়েছিল, তখন আরজেডি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ নিয়ে এই বিল পাসের ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দিয়েছিল। কিন্তু এই আইন পাস হওয়ার পর থেকেই সারা দেশজুড়ে বিক্ষোভের আগুন আরও তীব্র হয়েছে। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে এবার নিজেদের অবস্থান পাল্টে ফেললেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ সভাপতি নীতিশ কুমার। এদিন তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, এ নিয়ে অবশ্যই নতুন করে চিন্তা ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে।

সোমবার বিহার বিধানসভার যখন অধিবেশন চলছিল, তখন জেডিইউ তথা নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শুরু করে আরজেডি বিধায়করা। এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে মূলত এই বিক্ষোভ। কিন্তু বিধানসভায় অবাক হওয়ার বাকী ছিল। এই আক্রমণের পরেই নিতিশ কুমার সম্পূর্ণ ঘুরে গিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন সিএএ প্রসঙ্গে। তিনি পরিষ্কার করে জানিয়ে দেন এ নিয়ে এখনো আরো আলোচনা হওয়ার অবশ্যই প্রয়োজন। সবাই যদি রাজী থাকে তাহলে বিধানসভা কক্ষেও তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। পাশাপাশি এদিন নিতিশ কুমার আরো বলেন, “এরাজ্যে এনআরসি করার প্রশ্নই ওঠে না। এর কোনো যৌক্তিকতা নেই।”

প্রসঙ্গত জেডিইউ-এর কমান্ডার প্রশান্ত কিশোর প্রথম থেকেই এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে রীতিমতো সরব হয়েছিলেন প্রকাশ্যে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায়। সংশোধনী নাগরিক আইন পাস হওয়ার জন্য সমর্থন দেওয়ায় প্রশান্ত কিশোর তীব্র সমালোচনা করেছিলেন জেডিইউ-এর। তাঁর পক্ষ থেকেও বিরোধী সমস্ত দলকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একত্রিত হতে আহ্বান জানানো হয়। সুতরাং এদিন নীতীশ কুমারের মুখ খোলার পেছনে আগের বেশ কয়েকটি ঘটনা যথেষ্ট তাৎপর্য বহন করে এনেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

উপরন্তু, সামনেই বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই এখন বিজেপি এবং জেডিইউ দু’দলের মধ্যে যথারীতি আসন সমঝোতা নিয়ে বিরোধিতা সৃষ্টি হয়েছে। সেসময় নিতীশ কুমারের মুখ খোলা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। শুধু তাই নয়, এই ঘটনা যে বিজেপি শিবিরের যথেষ্ট অস্বস্তি বাড়াবে সে কথা বলাই বাহুল্য। ইতিমধ্যে এনআরসি নিয়ে বিরোধিতা করলেও সিএএ নিয়ে ইতিপূর্বে নিতিশ কুমার কোন কথা বলেননি।

এমনকি সংসদে তিনি ভোটাভুটিতে অংশ নিলেও এ প্রসঙ্গে কোন শব্দ তাঁকে খরচ করতে দেখা যায়নি। তাই এই প্রথম সিএএ নিয়ে ভাবনাচিন্তার কথা বলায় যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অন্যদিকে, সিএএ এর বিরোধিতায় এবার মুখ খুলেছে শিরোমণি আকালি দল। শিরোমণি আকালি বিজেপির আরেক শরিক দল। তাঁদের মতে, তাঁরা শুধু শিখ সম্প্রদায়ের নয়, সর্বধর্মের কল্যাণ হেতু মুসলমানদেরও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এর যুক্ত হওয়া দেখতে চায়। অতএব এবার ধীরে ধীরে প্রত্যেকেই সিএএ এর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে।

অন্যদিকে, তড়িঘড়ি সিএএ কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গেজেটের মাধ্যমে আইন রূপে বলবৎ করা হয় সারাদেশে সম্প্রতি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন নাগরিকত্ব আইন এবং প্রস্তাবিত নাগরিক পঞ্জির বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলনের প্রভাব পড়েছে কেন্দ্রীয় মহলে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এই আইন বলবৎ হল। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এনআরসি নিয়ে যেভাবে সারাদেশে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে, তাতে দেশের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব স্বাভাবিকভাবেই একটু কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। আপাতত সিএএ নিয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিতে চলেছে, সেদিকে নজর রাখছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!