বনধ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিকায় তীব্র ক্ষোভ সরকারি কর্মীদের, সঙ্গে বিস্ফোরক অভিযোগ বিশেষ খবর রাজ্য April 12, 2018 আগামীকাল বামেদের ডাকা ৬ ঘন্টার বনধের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করে (Govt.Order No.2364 Dt.12.04.2018) জানানো হয়েছে আগামীকাল কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া কোনো ছুটি (অর্ধদিবস বা পূর্ণদিবস) রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা নিতে পারবেন না। কোন কোন ক্ষেত্রে ছুটি নিতে পারবেন সরকারি কর্মীরা? নির্দেশিকা অনুযায়ী – ১. কর্মচারী হাসপাতালে ভর্তি হলে বা ভর্তি থাকলে ২. বাড়িতে কেউ মারা গেলে ৩. ১২ এপ্রিলের আগে থেকে গুরুতর অসুস্থ থাকলে এবং অসুস্থতার জন্য আগে থেকেই অনুপস্থিত থাকলে ৪. ২ এপ্রিলের আগেই চাইল্ড কেয়ার লিভ, মাতৃত্বকালীন ছুটি, মেডিক্যাল লিভ বা ইএল মঞ্জুর হয়ে থাকলে অর্থ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিবের জারি করা এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ক্যাজুয়াল লিভও নেওয়া যাবে না। যে সব কর্মচারী ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটিতে আছেন, তারাও ছুটি বাড়াতে পারবেন না। যানবাহন চলাচল করছিল না বা বিঘ্ন ঘটেছিল- এই অজুহাতেও ছুটি নেওয়া যাবে না। সেই দিন উপস্থিত না থাকলে বেতন তো কাটা যাবেই, চাকরির রেকর্ডেও ছেদ পড়বে। আর এই নির্দেশিকা জারি হতেই তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে। এমনকি সাধারণ মানুষের ধর্মাচরণে বাধা দেওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগও উঠেছে রাজ্য সরকার বা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। আর তাই মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সরাসরি আন্দোলনে নামার কথা ভাবছে বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠন। আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে এই প্রসঙ্গে বিজেপি প্রভাবিত সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি রীতিমত ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে তোষন করতে গিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী দিনদিন বাংলার সংস্কৃতি কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? আগামীকাল ‘নীলষষ্ঠী’, যা হিন্দু বিবাহিত নারীদের কাছে একটি অতি আবেগের পুণ্যতিথি। এইদিন ঐতিহাসিকভাবেই হিন্দু বিবাহিত নারীরা স্বামী-সন্তান-পরিবারের মঙ্গল কামনায় উপবাস করেন ও ভগবান শিবের মাথায় জল ঢেলে প্রসাদ খেয়ে ও খাইয়ে উপবাস ভঙ্গ করেন। ফলে সবসময়েই কর্মরত নারীরা নিজেদের কাজ সামলে অর্ধদিবস ছুটি নিয়ে তাঁদের ধর্মাচরণ করে থাকেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই জোর করে চাপিয়ে দেওয়া নির্দেশনামা বাংলার নারীদের নিজেদের ধর্মাচারণে বাধা সৃষ্টিকারী। কোনো সাধারণ মানুষের ধর্মাচরণে এইভাবে জোর করে বাধা সৃষ্টি করা তো ভারতীয় সংবিধানেরও পরিপন্থী। শাসকের চেয়ারে বসে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে দিনের পর দিন তোষন করতে গিয়ে উনি রাজধর্ম কি সেটাই ভুলে গেছেন। এইভাবে অন্যায় নির্দেশনামা চাপিয়ে দেওয়া সরকারি কর্মচারীরা কিছুতেই মেনে নেবেন না। শাসকের আসনে বসে ওনার যা কাজ, সেই বকেয়া ডিএ বা কেন্দ্রীয় হারে বেতন দেওয়ার কোনো নাম নেই, উল্টে বাংলার সংস্কৃতির পরিপন্থী ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি করে যাচ্ছেন। সবথেকে বড় কথা, আগামীকালের বনধ কিন্তু সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত, ফলে কেউ যদি অর্ধদিবস (দুপুর ২ টোর পর) ছুটি নিতে চায় তখন পরিবহনের সমস্যাও নেই, তাহলে কেন কোনো মানুষকে তাঁর ধর্মাচরণে বাধা দেবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত একটি সরকার? আর তাই সরকারের এই অন্যায় নির্দেশনামার বিরুদ্ধে আমরা সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিবাদের পথে যেতে চলেছি। আপনার মতামত জানান -