এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > গতকালের হাইকোর্টের রায়ের পরে ডিও/বিএলও ডিউটি নিয়ে জরুরি বার্তা – কি করবেন আর কি করবেন না?

গতকালের হাইকোর্টের রায়ের পরে ডিও/বিএলও ডিউটি নিয়ে জরুরি বার্তা – কি করবেন আর কি করবেন না?


গতকাল কলকাতা হাইকোর্টে এক ঐতিহাসিক রায়ে মহামান্য বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে, গত ২০ ই আগস্টের নির্বাচন কমিশনের ডিও, বিএলও ও সুপারভাইজারের ডিউটির নির্দেশিকা বাতিল করে নতুন করে নির্দেশিকা জারি করতে হবে। এই ডিউটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের মনে ক্ষোভ ছিল আর সেই ক্ষোভ আকাশ ছুঁতেই প্রতিবাদী শিক্ষক মইদুল ইসলামের সেনাপতিত্ত্বে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ সংগঠন, শিক্ষকদের ও শিক্ষার স্বাধিকার রক্ষার্থে কলকাতা হাইকোর্টে এক মামলা করে, যার জেরেই এই রায়।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, আদালতের গতকালের রায়ের পরে বর্তমানে ডিও, বিএলও ও সুপারভাইজারের ডিউটি করা শিক্ষকরা কি করবেন আর কি করবেন না? কবে থেকে এই ডিউটি থেকে অব্যাহতি পাওয়া যাবে? অথবা, কিভাবে সেই অব্যাহতি আসবে? এখনই এই ডিউটি বন্ধ করলে প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেবে? বা যদি প্রশাসনিক কোন শাস্তির খাঁড়া নেমে আসে এই ডিউটি বন্ধ করার ‘অপরাধে’ – তাহলে আশু কর্তব্য কি হবে? আর রাজ্যের হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের মনের এই সকল প্রশ্ন নিয়ে আমরা যোগাযোগ করি এই মামলার অন্যতম স্থপতি মইদুল ইসলামের সঙ্গে।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না – তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এই সকল প্রশ্নের উত্তরে মইদুলবাবু যা জানালেন তা হল –

১. এতো দিন যে নির্দেশের ফলে এসডিও বা বিডিওরা শিক্ষকদের দিয়ে ‘জোর’ করে ডিও, বিএলও ও সুপারভাইজারের ডিউটি করাচ্ছিলেন তা মহামান্য আদালত বাতিল করলেন

২. যে সমস্ত শিক্ষকরা ভোটার তালিকা সংশোধন বা বিয়োজনের কাজে অনিচ্ছুক ছিলেন, আর তারফলে যাঁদের শো-কজ চিঠি ধরিয়েছিলেন প্রশাসনিক কর্তারা হাইকোর্টের রায়ের পরে তা মুল্যহীন হল। অর্থাৎ, এই প্রসঙ্গে প্রশাসন আর কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবে না সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে

৩. এখন, রাজ্য নির্বাচন কমিশন নতুন নির্দেশিকা দিলে কিভাবে কোন পরিস্থিতিতে ছুটির দিনে কাজ করতে হবে তা বিস্তারিতভাবে জানাতে হবে

৪. ছুটির দিনে শিক্ষকদের কাজ করাতে চাইলে তা শ্রমিক আইনের পরিপন্থী হবে, সেক্ষেত্রে একজন শ্রমিকের অবসরকালীন ভাতা দিতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্য, বিশেষ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে কিনা ব্যাখ্যা করতে হবে অর্থাৎ অন্য সরকারী কর্মী নিয়োগ করেও নির্বাচন সংক্রান্ত এই কাজের জন্য তা অপ্রতুল হচ্ছে কিনা তা জানাতে হবে। তাই, সরাসরি এই ডিও, বিএলও ও সুপারভাইজারের ডিউটি করার জন্য শিক্ষকদের নিয়োগ করা এখন আর আগের মত সহজ হবে না

৫. বিশেষ পরিস্থিতিতে ছুটির দিনে শিক্ষকদের কাজ করাতে চাইলে তাদের সমসংখ্যক বাড়তি ছুটি হবে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুয়ারী যা কার্যত অসম্ভব। অর্থাৎ, আসন্ন দুর্গাপূজার ছুটিতে শিক্ষকদের এই ডিউটি করতে হলে, যে কদিন এই এই কাজ হবে সেই সংখ্যক ছুটি সংশ্লিষ্ট শিক্ষক দিতে হবে।

মইদুলবাবু আরো জানান, এজন্য শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের পক্ষ থেকে রাজ্যের সকল শিক্ষকদের কাছে আমাদের আবেদন যে – আজ, ২৯ শে সেপ্টেম্বর, শনিবার থেকে আপনারা আপনাদের শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষা ব্যতীত আর অন্য কোনো কাজ করবেন না। আপনার উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়ে দেবেন আপনি আর এই ডিও, বিএলও ও সুপারভাইজারের ডিউটির কাজ করবেন না। শিক্ষকরা নিজের নিজের সংশ্লিষ্ট ফাইল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দেবেন।

এর সাথেই মইদুল ইসলামের বড় মন্তব্য, এরপরও প্রশাসন কিছু বললে আমাদের (শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চকে) জানাবেন, আর আপনার প্রতিবাদটাও করবেন। কারণ, কোর্টের নির্দেশ আসার আগে সংবাদমাধ্যমদ্বারা এতক্ষনে প্রশাসনিক কর্তারা সবাই এই বিষয়ে অবগত হয়েছেন যে এই ডিও, বিএলও ও সুপারভাইজারের ডিউটি করানো আইনত সঠিক নয়। আমরা রাজ্যের সমস্ত শিক্ষকের ও সার্বিকভাবে শিক্ষার অধিকার রক্ষায় পাশে আছি ও থাকব। এর সঙ্গেই মইদুলবাবু রাজ্যের সমস্ত শিক্ষকদের প্রতি আবেদন জানান, আপনারা প্রতিবাদটা করুন – আপনাদের জন্য “শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চ” রাস্তার লড়াই এর সাথে সাথেই বিনামুল্যে আইনি লড়াই চালাবে। এই অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে আপনি আর এক নন – পাশে সবসময়েই শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের বৃহত্তর প্রেক্ষাপট আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!