এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > রাজীব ব্যানার্জিকে নিয়ে দিলীপ ঘোষ মুখ খুলতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী?

রাজীব ব্যানার্জিকে নিয়ে দিলীপ ঘোষ মুখ খুলতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিগত কয়েকদিন ধরেই রাজ্য-রাজনীতিতে নিজের দলের ‘রাঘববোয়ালদের’ বিরুদ্ধে দুর্নীতি নিয়ে কার্যত ঝড় তুলে দিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা অন্যতম জনপ্রিয় তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আমপান কাণ্ডের বিপর্যয়ের পরে রাজ্য সরকারের দেওয়া ত্রাণের টাকা নয়ছয় করার একের পর এক অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। যা কার্যত শাসকদলের ভাবমূর্তিকে বেশ বড় রকমের কালিমালিপ্ত করেছে বলে অভিমত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

এই অবস্থায় ক্ষিপ্ত তৃণমূল নেত্রী, একদিকে যেমন তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে টাকা ফেরানোর ব্যবস্থা করেছেন, অন্যদিকে তেমনই দলীয়স্তরে তদন্ত করে শাস্তির বিধান দিয়েছেন। সেইমত হাওড়াতেও ৩ তৃণমূল নেতা শাস্তির কোপে পরে। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুক লাইভ থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যম সব জায়গাতেই কার্যত এই নিয়ে সরব হন। তাঁর বক্তব্য, এইভাবে দলের কয়েকজন ‘চুনোপুঁটিকে’ শাস্তি দিয়ে দুর্নীতি দূর করা যাবে না, দলে অনেক ‘রাঘববোয়াল, রুই-কাতলা, ইলিশ’ আছে – তাদেরও শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

যে সব অভিযোগ এতদিন বিরোধীদের মুখে শোনা যেত, তা একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর মুখে প্রকাশ্যে আসায় স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিকমহলে। এদিকে, যেখানে রাজীববাবু দলীয় দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও এই ব্যাপারে নিশ্চুপ কেন? প্রশ্নটা উঠতে শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কেননা কিছুদিন আগেই, আমপান কাণ্ডের পর দলের বিরুদ্ধেই সরব হয়েছিলেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। যা নিয়ে পাল্টা সরব হন বিধায়ক পরেশ পাল।

কেন এইভাবে দলীয় অভিযোগ প্রকাশ্যে বললেন – জানতে চেয়ে সাধনবাবুকে শোকজ করেন দলীয় সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে কম জলঘোলা হয় নি। কিন্তু, এইবার সাধনবাবুর মতোই প্রকাশ্যে রাজীববাবু দলীয় দুর্নীতি ও রাঘববোয়াল প্রশ্নে সরব হলেও, শোকজ বা শাস্তি তো দূরের কথা – উল্টে ‘দলীয় ব্যাপার’ বলে এড়িয়ে যেতে চাইছেন ফিরহাদ হাকিমের মত দাপুটে মন্ত্রীও। ফলে সব মিলিয়ে রাজীব ব্যানার্জি ও তাঁর তোপ নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে, খুব স্বাভাবিকভাবেই, রাজীব ব্যানার্জি এইভাবে দলীয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হতেই – একটা মহল থেকে গুঞ্জন উঠতে থাকে তিনি নাকি বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছেন। সাংবাদিকরাও এই নিয়ে সরাসরি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করেন। দিলীপবাবুও সাংবাদিকদের প্রশ্নে যেন কিছুটা কুশলী ‘খেলেন’। তিনি বলেন, ‘অনেকেই মুখ খুলেছেন, আরো অনেকেই খুলবেন’। তারপরেই সাংবাদিকদের তরফ থেকে প্রশ্ন উঠে আসে যে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কি আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন? দিলীপবাবু সটান জানান ‘না’।

তাহলে তো এখানেই জল্পনার ইতি টেনে দেওয়া উচিৎ। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন রাজনৈতিক গ্রূপ খুঁজে দেখলে পাওয়া যাচ্ছে – জল্পনা বন্ধ হওয়া তো দূরের কথা, উল্টে তা যেন বেড়ে গিয়েছে বহুগুন! অনেক উৎসাহীরই বক্তব্য, রাজনীতিতে কোনো কিছুই কি সোজা-সাপ্টা হয়? বাংলায় নির্বাচন এখনই হচ্ছে না, করোনা আবহে রাজনৈতিক পরিস্থিতিও কিছুটা স্তিমিত। এই অবস্থায় এখনই দলবদল করবেন না কোনো হেভিওয়েট রাজনীতিবিদই। কিন্তু, সেই কথা সামনে এলে পরিস্থিতি জটিল হবে এবং সংশ্লিষ্ট রাজনীতিবিদ অস্বস্তিতে পড়বেন।

ওই মহলের আরও বক্তব্য, এর আগে যেসব তৃণমূল নেতাই বিদ্রোহী হয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে দিলীপবাবু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বলেছেন, বিজেপির দরজা তাঁদের জন্য খোলা আছে। রাজীববাবুর মত নেতা যে কোন দলের ক্ষেত্রেই সম্পদ, সেক্ষেত্রে তাঁকে দলে নেওয়া হবে না – এই ধরনের কোনো ঘোষিত কথা এখনও বিজেপি জানায় নি। তাহলে তাঁর বিজেপি যোগের প্রশ্নে সটান ‘না’ বলে বিজেপি রাজ্য সভাপতি আসলে ব্যাপারটাকে ‘শিল্ড’ করলেন? এই প্রশ্নেই আপাতত বাংলার রাজনৈতিক আকাশ-বাতাস কাঁপছে।

আর এরমাঝেই সামনে এল বড় খবর! বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, রাজীব ব্যানার্জি ‘চ্যাপ্টার’ সামলাতে আসরে নামলেন স্বয়ং তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঐসব সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি ফোন করেন দলনেত্রী। তিনি সরাসরি নাকি বলে দেন, এইভাবে প্রকাশ্যে মুখ খোলা ঠিক হচ্ছে না, যদি কিছু বলার থাকে তাহলে তিনি যেন তা দলের মধ্যেই জানান।

এছাড়াও তাঁদের মধ্যে আরো কিছু আলোচনা হয় বলেও জানানো হয়েছে। আর এরপরেই নাকি আপাতত আর প্রকাশ্যে মুখ না খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজীববাবু। যদিও সরকারিভাবে এই ফোনালাপের কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় – কারোর তরফেই কিছু জানানো হয় নি। তবে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন – বৃক্ষ, কিবা তব নাম? ফলেন পরিচয়তে! অর্থাৎ, রাজীববাবু যেভাবে বিগত কয়েকদিন ধরে ‘বিধ্বংসী’ মেজাজে ‘ব্যাটিং’ করছেন, সেখান থেকে সম্পূর্ণ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে ‘রাঘববোয়াল’ নিয়ে চুপ করে যান – তাহলেই এর সত্যতা প্রমাণিত হবে। নতুবা, তাঁকে ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনার পারদ কিন্তু চড়তেই থাকবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!