প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃনমূল সংঘবদ্ধ হতে নতুন কমিটি গঠন করতে শুরু করেছে। কিন্তু এর মাঝেই দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করতে দেখা গেছে কোচবিহার দক্ষিণের তৃনমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীকে। যেখানে সমস্ত পদ থেকে অপসারণ করার কথা শোনা গেছে তার গলায়। স্বাভাবিক ভাবেই তৃনমূলের এমন একজন হেভিওয়েট বিধায়ক যদি বিধানসভা নির্বাচনের আগে এইরকম সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তা যে বড় চিন্তার হয়ে দাঁড়াবে শাসকদলের কাছে, তা বলাই যায়।

তাই এমত পরিস্থিতিতে সেই মিহির গোস্বামীর মান ভাঙাতে উদ্যোগী হল জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জানা গেছে, সম্প্রতি মিহির গোস্বামীর বাড়িতে গিয়ে বিজয়ার প্রনাম সেরে এসেছেন পার্থপ্রতীম রায়। যার পরে সেই মিহির গোস্বামীর মান অনেকটাই ভেঙে যাবে বলে মনে করেছিল রাজনৈতিক মহল। তবে এখনও পর্যন্ত মিহিরবাবুর অবস্থা সন্দেহজনক। তবে হেভিওয়েট এই তৃনমূল বিধায়ক দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মন্তব্য করলেও, কেন তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করার সাহস দেখাচ্ছে না শাসকদল!

একাংশের মতে, মিহির গোস্বামী হেভিওয়েট তৃনমূল বিধায়ক। তিনি দীর্ঘদিনের তৃনমূল সৈনিক। তাই আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই মিহির গোস্বামী বিতর্কিত মন্তব্য করলে যদি তাকে দল থেকে বের করে দেওয়ার মত কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তৃনমূল, তাহলে তা তৃনমূলের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক হতে পারে। কেননা তৃনমূল যদি মিহির গোস্বামীর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়, তাহলে সেই মিহির বাবু চলে যেতে পারেন ভারতীয় জনতা পার্টিতে।

আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে যদি এই রকম ঘটনা ঘটে, তাহলে কোচবিহার জেলায় তৃণমূলকে আরও বেকায়দায় পড়ে যেতে হবে। তাই এই সমস্ত সংশয়ের উপর ভিত্তি করে তৃণমূল কংগ্রেস মিহির গোস্বামীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলে দাবি করছেন একাংশ। তাই মিহির গোস্বামী দলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করলেও, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

কিন্তু অনেকে বলছেন, যদি মিহিরবাবু এই ভাবেই দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে শুরু করেনড় তাহলে তো বিজেপি সেটাকে নিয়ে ফায়দা তুলবে! তাহলে কি তৃণমূল কংগ্রেস মিহির গোস্বামীর মান ভাঙানোর জন্য কোনো পাকাপাকি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না? এদিন এই প্রসঙ্গে মিহির গোস্বামী বলেন, “আমার যেটা সঠিক মনে হয়েছে, সেটা আমি বলেছি। দল যা ভাবনা চিন্তা করবে, সেটা দলের বিষয়।”

অন্যদিকে এই ব্যাপারে কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিষয়টি ওনাকে ধরে রাখা বা না রাখা নয়। উনি আমাদের দলের বর্ষিয়ান নেতা। দীর্ঘদিন ধরে দল করছেন। তিনি আমাদের দলের সঙ্গে রয়েছেন। আমাদের সঙ্গেই থাকবেন। বাকি ওনার যে বক্তব্য বা মতামত এই প্রসঙ্গে যা বলার রাজ্য নেতৃত্ব বলবে।”

অর্থাৎ জেলা নেতৃত্ব মিহির গোস্বামী সম্পর্কে এমন কোনো মন্তব্য করে সেই মিহিরবাবুর দল ছেড়ে দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা না ঘটে, সেদিকে নজর রাখতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে এবার মিহির গোস্বামীকে নিয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে জেলা নেতৃত্ব যে কিছুটা হলেও সচেতন, তা তাদের আচার-আচরণেই কার্যত স্পষ্ট বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।