দলের মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব এবার এই হেভিওয়েট নেতা, ক্রমশ বাড়ছে আশঙ্কা !শোরগোল রাজ্যে ! তৃণমূল মালদা-মুর্শিদাবাদ-বীরভূম রাজনীতি রাজ্য December 15, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আগামী বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বে শাসকদল তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল বারবার প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। দলের একাধিক নেতা, মন্ত্রী, বিধায়ক বারবার প্রকাশ্যে সরব হচ্ছেন দলের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার সকালে আসানসোল পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি দলের বিরুদ্ধে একাধিক ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, এরপর গতকাল সোমবার বিকেলে দলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য। দলের এই হেভিওয়েট নেতা দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। যে কারণে শোরগোল পড়ে গেছে মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে। প্রসঙ্গত বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য দীর্ঘ সময় ধরে কংগ্রেসে ছিলেন। গত ২০১৬ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তিনি যোগদান করেছেন তৃণমূলে। প্রাক্তন পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বেই তিনি কংগ্রেস ছেড়ে সেসময় তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন। কিন্তু তিনি অভিযোগ করেছেন যে, দলের মধ্যে তাঁকে কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। ফলে অনেক দিন ধরেই তিনি গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে আছেন দলে। বহরমপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল সভাপতি আবু তাহের খানের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছেন। আবু তাহের খানের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করেছেন যে, জেলা সভাপতি শুধুমাত্র টাকাটাই বোঝেন। বহরমপুর শহরে বেআইনিভাবে চলছে ফ্ল্যাট নির্মাণ। হাইড্রেন বন্ধ করে দিয়ে স্থানে স্থানে আবাসন নির্মাণ করা হচ্ছে। কোটি কোটি টাকা চলে যাচ্ছে বহরমপুরের পুর এলাকা থেকে। নীলরতন আঢ্য অভিযোগ করেছেন যে, জেলা তৃণমূল সভাপতি আবু তাহের খান তাঁর রাজনৈতিক প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তাঁর রোজগারের সুবন্দোবস্ত করেছেন। মাসিক টাকা তিনি তুলছেন। অবৈধভাবে বহরমপুর শহরে আবাসন, জল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ হচ্ছে । এর ফলে নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে শহরকে। এ কারণেই তিনি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন । আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - নীলরতন বাবু জানালেন যে, একটা সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় উন্নয়নে সামিল হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, এখন মনে করছেন যে, তিনি ভুল কাজ করেছেন। তিনি আরো অভিযোগ করেছেন যে, জেলা সভাপতি আবু তাহের খানের বিরুদ্ধে তোলাবাজির প্রতিবাদ করায় তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। তিনি জানালেন সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আগামী পুরসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে এর উপযুক্ত জবাব মানুষ দেবে। দেখিয়ে দেবে কে ঠিক। এরপর তৃণমূল দলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নীলরতন বাবু। তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি ৩৯ বছরের কাউন্সিলর। ১৮ বছর ধরে তিনি বহরমপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। তিন বছর আগে তৃণমূলে যোগদান করেছেন তিনি। কিন্তু তাঁকে কোন সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানায় না দল। যে বিষয়টি তাঁর আত্মসম্মানে লেগেছে। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেছিলেন বলে, তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে। কিন্তু অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময়ের। তাই তাঁর সঙ্গে তিনি যদি কোন সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার করেন, তবে তার মধ্যে কোন অন্যায় আছে বলে, মনে করছেন না তিনি। জেলা সভাপতি আবু তাহের খানের বিরুদ্ধে নীলরতন বাবুর একাধিক অভিযোগ করার পর, এ বিষয়ে মুখ খুললেন আবু তাহের খান। এ প্রসঙ্গে তিনি জানালেন যে, দু’বছর ধরে দলের কোনো কর্মসূচিতে যোগদান করেননি নীলরতন বাবু। তৃণমূল দলের সঙ্গে যুক্ত থাকেন না তিনি। বহরমপুর শহরের দলীয় কার্যালয়েও তাঁকে দেখা যায় না। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে করা তাঁর অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে তৃণমূল জেলা সভাপতি আবু তাহের খানের দাবি। ইতিপূর্বে দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলের প্রতি একাধিকবার অভিযোগ করেছে বিভিন্ন বিরোধী দল। কিন্তু এবার দলের হেভিওয়েট নেতা প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করায়, তা নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে গেল মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। এমনটাই বিশ্লেষকদের দাবি। আপনার মতামত জানান -