এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > ২১ এর আগেই চাপ বাড়ছে, দলের সঙ্গে ফের দূরত্ব বাড়াচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী? অশনি সংকেত তৃণমূলের !

২১ এর আগেই চাপ বাড়ছে, দলের সঙ্গে ফের দূরত্ব বাড়াচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী? অশনি সংকেত তৃণমূলের !


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – একসময় রাজ্যজুড়ে বিতর্কের ঝড় তুলেছিল নেতাই হত্যাকান্ড। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যের তৎকালীন সরকারকে কোণঠাসা করতে তৃণমূল শিবির প্রথম নেতাই কান্ডকেই হাতিয়ার করে বাম শিবিরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। আর সেই প্রবল বিক্ষোভের পুরোধা ছিলেন রাজ্যের বর্তমান পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এহেন শুভেন্দু অধিকারীকে বর্তমানে  তৃণমূল শিবিরে একটু কম দেখা যাচ্ছে বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

যে নেতাই আন্দোলনের মুখ ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, সেই নেতাই দিবসেই অনুপস্থিত রইলেন তিনি। আর তাই নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। একুশে জুলাই তৃণমূলের তরফ থেকে পালন করা হয় শহীদ দিবস হিসেবে। আর তার আগে পালন হয় নেতাই দিবস। এই নেতাই দিবস পালনের এর জন্য শনিবার বিকেলে লালগড়ে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নেতাই কান্ডের নিহতদের পরিজনদের হাতে আর্থিক সাহায্য ও উপঢৌকন তুলে দেওয়া হয় তৃণমূল নেত্রী দোলা সেন এর হাত দিয়ে।

কিন্তু প্রত্যেক বছর এই অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারী হাজির থাকলেও এবছর আসেননি। অন্যদিকে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই দোলা সেন এদিন লালগড়ে আসেন। তবে করোনা পরিস্থিতিতে ভিড় না বাড়ানোর নির্দেশ মেনে এই অনুষ্ঠানে দোলা সেন মাত্র আধঘন্টা উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল মাহাতো ও যুব তৃনমূলের ব্লক সভাপতি তন্ময় রায়।

তবে জানা গেছে, নেতাই শহীদ স্মৃতি রক্ষা কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দ্বারকানাথ পান্ডা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। অন্যদিকে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের একুশে জুলাই এর সভা ভার্চুয়ালি হতে চলেছে। ফলে প্রতিবারের মতো সভামঞ্চ করে নেতাই বা নন্দীগ্রামের ঘটনায় নিহতদের পরিজনদের সম্মানিত করা যাবে না। সেইজন্য এবছর এলাকায় গিয়ে তাঁদের সংবর্ধনা জানানো হচ্ছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে এ ধরনের অনুষ্ঠানে শুভেন্দু অধিকারীর অনুপস্থিতি নিয়ে। আর সেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল দলেরই একাংশ। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে লালগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি শ্যামল মাহাতো জানিয়েছেন, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে দোলা সেন লালগড় আসেন। একুশে জুলাই এর সভামঞ্চে প্রতিবার এই সংবর্ধনা দেওয়ার বিষয়টি দোলা সেন দেখভাল করেন। আর তাই এবার নেত্রীর নির্দেশে তিনি এলাকায় গিয়ে সংবর্ধনা দিয়ে আসলেন। অন্যদিকে জেলা তৃণমূলের আরেক নেতা দাবি করেছেন, শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেই দোলা সেন লালগড়ে এসেছিলেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী বীরবাহা সরেন জানিয়েছেন, তৃণমূলের আইটি সেলের সঙ্গে মিটিং থাকার কারণে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। অন্যদিকে দোলা সেন উপস্থিত হওয়ার খবরও তিনি জানতেন না বলে দাবি করেছেন। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দলীয় দূরত্বের প্রসঙ্গে বহুদিন ধরেই জলঘোলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজনৈতিক মহলের একাংশ জানাচ্ছেন, ঝাড়গ্রাম জেলার দলীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু গত বছর নভেম্বরে শুভেন্দু অধিকারীর সাথে সহ পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে আসেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

আর তারপর থেকেই ঝাড়গ্রামের দলীয় কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারীকে আর প্রত্যক্ষভাবে দেখা যাচ্ছেনা। যদিও ব্যক্তিগত কোনো অনুষ্ঠান হলে তিনি সেখানে উপস্থিত থাকছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে গেরুয়া শিবির ইতিমধ্যেই ঝাড়গ্রামে তাঁদের সংগঠন জোরদার করেছে। যার ফল 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে সবাই দেখেছে। আর তাই এবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে ঝাড়গ্রাম তৃণমূলের দায়িত্ব শুভেন্দু অধিকারীর হাতে দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তৃণমূল দলের একাংশ।

এই পরিস্থিতিতে আবার অনেকেই দাবি তুলেছেন, শুভেন্দু অধিকারীকে ঝাড়গ্রাম জেলার পূর্ণ সংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। তবে সেদিক থেকে সবার নজর এখন একুশে জুলাই দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি সিদ্ধান্ত নেন। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে এ রাজ্যে গেরুয়া শিবির তাঁদের সাংগঠনিক জোর অনেকটাই বাড়িয়ে নিয়েছে। সুতরাং আগামী দিনে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে আবার রাজ্যের মসনদে বসার জন্য তৃণমূল শিবিরের প্রয়োজন সাংগঠনিক জোর বাড়ানো।

আর সাংগঠনিক জোর বাড়ানোর ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারী যে অন্যতম বিশেষ নাম সে কথা মেনে নিচ্ছেন রাজনৈতিক মহলের প্রায় সবাই। তবে যেভাবে শুভেন্দু অধিকারীকে বর্তমানে দলের সাথে কিছুটা দূরত্ব রাখতে দেখা গিয়েছে, তা কিন্তু তৃণমূল দলের জন্য ভবিষ্যতের অশনি সংকেত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশরা। আর তাই এবার নজর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পরিস্থিতিতে কতটা দক্ষতার সঙ্গে এই জটিল পরিস্থিতি সামাল দেন।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!