প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল ভালো ফল না করার পর থেকেই দলের রাজনৈতিক রননীতিকারের দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রশান্ত কিশোরকে। আর প্রশান্ত কিশোর দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু এবার দলের কর্মসূচি করতে গিয়েই তৃণমূল কর্মীর এক অদ্ভুত প্রশ্নের মুখে পড়ল প্রশান্ত কিশোরের টিম।

সুখের খবর, দলের কর্মসূচি রূপায়নের জন্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এক তৃণমূল কর্মীকে ফোন করা হয়েছিল। যেখানে তৃণমূল কর্মী প্রশান্ত কিশোরের টিমকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, “আমার কি হবে! এই যে দুদিন কাজ করব, এর জন্য কি কোনো টাকা পাব! প্রশান্ত কিশোর তো বলেছেন, রাজনীতিকে যদি কর্মক্ষেত্র বাড়াতে চান, তাহলে যোগ দিন। আমি তাহলে কর্মক্ষেত্র বানাতে চাই।”

স্বাভাবিকভাবেই দলের কর্মসূচির জন্য প্রশান্ত কিশোরের টিমের তরফ থেকে এই রকম কথা বলার সাথে সাথেই যেভাবে তৃণমূল কর্মী বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন, তাতে রীতিমত চাপে প্রশান্ত কিশোর এবং তৃণমূল কংগ্রেস। যদি এইভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের জন্য প্রশান্ত কিশোরের টিমের তরফ থেকে ফোন করা হয় এবং তার উত্তরে তৃণমূল কর্মীরা এইরকম কথা বলেন, তাহলে তা যে শাসক দলের কাছে বড়সড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুরে তপশিলি সংলাপ কর্মসূচির অংশ হিসেবে একটি ফোন করা হয়। যেখানে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার কর্মী এক তৃণমূল কর্মীকে ফোন করেন।যেখানে তিনি বলেন, “আইপ্যাক থেকে ফোন করছিলাম। শুনেছেন তো একটা এসসি ক্যাম্পেইন চলছে, তফসিলি সংলাপ বলে!” তখন সেই তৃণমূল কর্মী বলেন, “আমি তো এসসি নই। কি করে জানব;” আর তারপরেই সেই কর্মসূচি সম্পর্কে সেই তৃণমূল কর্মীকে বোঝানোর চেষ্টা করেন প্রশান্ত কিশোরের টিমের সেই সদস্য। আর এরপরই তৃণমূল কর্মী এই কাজ করলে তিনি কি পাবেন বলে জানতে চান! আর তা শুনেই কিছুটা চাপে পড়ে যান আইপ্যাকের সদস্য‌‌। উল্টে তিনি বলেন, “কিভাবে সেটা দরকার!” তখন তিনি বলেন, “দল জানে, তাহলে দলকে ফোন করতে বলুন। আইপ্যাক কেন ফোন করবে!” স্বভাবতই তৃনমূলের এক সাধারণ কর্মীর কাছ থেকে এই ধরনের কথা প্রশান্ত কিশোরের টিম শোনায় রীতিমত ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

অনেকে বলছেন, যে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার দাপটে প্রায় সকলেই তটস্থ হয়ে রয়েছেন, সেই প্রশান্ত কিশোরের টিমের এক কর্মীর মুখের উপর যেভাবে জবাব দিয়ে দিলেন এক তৃণমূল কর্মী, তাতে নিঃসন্দেহে গুঞ্জন বাড়াটাই স্বাভাবিক। যেখানে প্রশান্ত কিশোরের টিমের প্রতি তৃণমূল নেতার ঠিকুজি কুষ্ঠি বের করে আনা হচ্ছে এবং তাদের কাছে জবাব দেওয়া হচ্ছে, সেখানে এক তৃণমূল কর্মীর এইভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা নিঃসন্দেহে শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেবে। অনেকে বলছেন, এই ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার। যেখানে শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক জল্পনা শুরু করেছে।

ফলে সেই শুভেন্দু অধিকারী নিরব অবস্থায় থাকায় তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলেও জল্পনা তৈরি হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে সেই তৃণমূল কর্মী শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী কিনা, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও বা এই ব্যাপারে প্রশান্ত কিশোরের টিমের এক কর্মী বলেন, “মনে হচ্ছে শুভেন্দু অনুগামীদের কাছ থেকে এখন আর তেমন কোনো সহযোগিতা পাব না।” সব মিলিয়ে তৃণমূলের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা টিমের এক কর্মীর মুখের উপর তৃণমূল কর্মীর জবাব ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।