এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > দুই দলের শহীদ সমাবেশেই কি আগত করোনার তৃতীয় ঢেউ? ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ জনতা!

দুই দলের শহীদ সমাবেশেই কি আগত করোনার তৃতীয় ঢেউ? ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ জনতা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  “করোনা নিয়ে সচেতন থাকতে হবে”, “মানুষকে আরও বেশি করে সচেতন করতে হবে”, এইরকম নানা বিবৃতি দিতে দেখা গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের শাসক থেকে শুরু করে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের। এমনকি করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ আটকানোর জন্য সকলেই বড় বড় কথা শুনিয়েছিলেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা কজন ভাবেন? সত্যিই কি ভাবেন তারা যে, মানুষের কি হবে? যদি তারা একথা কেউ উপলব্ধি করতেন, তাহলে হয়ত বা বুধবার তৃণমূল থেকে শুরু করে বিজেপি দুই দলের ভার্চুয়াল শহীদ সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বাস্থ্যবিধি ভাঙ্গার অভিযোগ উঠে আসত না।

বলা বাহুল্য, গত বারের মতো এবারেও করোনা পরিস্থিতির কারণে ভার্চুয়ালি তৃণমূলের শহীদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কলকাতা থেকে বক্তব্য রাখেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু জেলায় জেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই বক্তব্য কর্মীদের কাছে পৌঁছে দিতে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জায়েন্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয়। আর সেখানেই তৃণমূল কর্মীদের ভিড় দেখে রীতিমতো মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে বিশেষজ্ঞদের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার করে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করছেন। শুধু তাই নয়, দলের একমাত্র বড় কর্মসূচি যে তিনি এই করোনা ভাইরাসের জন্যই ভার্চুয়ালি করছেন, সেই কথাও বারবার করে জানিয়েছেন।

সেদিক থেকে ভার্চুয়ালি এই দলের কর্মসূচি করে আদৌ কতটা লাভ হল, এখন সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে একাংশের মধ্যে। কেননা জেলায় জেলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য দেখানোর জন্য যে জায়েন্ট স্ক্রিনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেখানে যেভাবে ভীড় উপচে পড়েছে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে কোনো দূরত্ববিধি লক্ষ্য করা যায়নি, তাতে তৃণমূলের এই ভার্চুয়াল সমাবেশ যে নতুন করে আবার করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে দিতে শুরু করেছে, তা বলাই যায়।

একইভাবে বিজেপির পক্ষ থেকেও এদিন তাদের রাজ্য দপ্তরে হিংসার ঘটনায় প্রাণ যাওয়া নেতা কর্মীদের স্মরণ করে শহীদ দিবসের আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি ভার্চুয়ালি সেই শহীদ দিবসে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায় বিভিন্ন জেলার বিজেপি নেতৃত্বদের। যেখানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। তৃণমূলের মত বিজেপির এই শহীদ সমাবেশকে কেন্দ্র করেও বিভিন্ন জেলাতে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে কোনো দূরত্ব বিধি না থাকায় উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বারবার প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। এক টানা নির্বাচন করে বাংলায় করোনা ভাইরাসকে নতুন করে স্বাগত জানানো হয়েছে বলে সরব হয়েছেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে বিপুল ক্ষমতা নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন হওয়ার পর এই প্রথম বৈঠক করে করোনা ভাইরাসে লাগাম টানতে একাধিক সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায় তাকে। যেখানে বারবার করে বলে দেওয়া হয়েছে, অত্যাধিক জামায়াত বরদাস্ত করা হবে না।

কিন্তু যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা করা হয়েছে, তার দলের শহীদ সমাবেশের অনুষ্ঠান ভার্চুয়ালি হলেও, বিভিন্ন জেলায় সামাজিক দূরত্ব থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যবিধি না মানার অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে তার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। যার ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধুমাত্র বিতর্ককে দূরে রাখবার জন্য একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ ভার্চুয়ালি করলেও, জেলায় জেলায় যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গাফিলতির অভিযোগ চোখে পড়েছে, তাতে নতুন করে যদি করোনা ভাইরাস মাথাচাড়া দিতে শুরু করে, তাহলে তৃণমূলের এই একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ নিয়ে জনতার মনে প্রশ্ন উঠবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

অনেকে আবার বলছেন, বারবার সরকারের গাফিলতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। এক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, করোনা ভাইরাস আটকাতে আরও কড়া বিধিনিষেধ করা উচিত বলেও দাবি করতে দেখা গিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য নেতাদের। কিন্তু সেই বিজেপির পক্ষ থেকেই একুশে জুলাইয়ে শহীদ সমাবেশ করতে গিয়ে বিভিন্ন জেলায় বিধিনিষেধ মানা হয়নি বলে অভিযোগ। যার ফলে তাদের নিয়েও জনতার মনে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আর এখানেই সাধারন মানুষরা বলতে শুরু করেছেন, কারা মানুষের কথা ভাবে?

যদি রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা সত্যিই মানুষের কথা ভাবতেন, তাহলে কি তারা এই কঠিন সময়ে নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য এইরকম শহীদ সমাবেশ করতে পারতেন? অনেকে আবার এটাও বলতে শুরু করেছেন, রাজনৈতিক নেতাদের কাছে সাধারন মানুষ নয়, তাদের কাছে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা সবথেকে বড় জিনিস। আর সেই কারণে নির্বাচনের সময়ে “করোনা ভাইরাসকে আটকাতে হবে, মানুষকে সচেতন থাকতে হবে” এরকম নানা কথা বলে তারা নির্বাচনে মানুষের মন জয় করেছিলেন। কিন্তু ভোট হয়ে যাওয়ার পর এখন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা তাদের আসল রুপ দেখাতে শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে সাধারন মানুষ গোল্লায় গেলেও এবং তাদের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, শাসক থেকে বিরোধী কোনো রাজনৈতিক দলেরই যে মাথাব্যথা নেই, তা তাদের এই শহীদ সমাবেশই বুঝিয়ে দিল বলেই মনে করছেন সমালোচক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!