এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > দুই শীর্ষনেতার তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই কি প্রাণ গেল প্রভাশালী তৃণমূল নেতার? আতঙ্কে কর্মীরা!

দুই শীর্ষনেতার তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই কি প্রাণ গেল প্রভাশালী তৃণমূল নেতার? আতঙ্কে কর্মীরা!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যজুড়ে তৃণমূল শিবিরের নিয়মিত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর বর্তমানে সংবাদ শিরোনামে। এবং এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলীয় সুপ্রীমোর অন্যতম চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সে ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদ এলাকা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অন্যতম আখড়া হয়ে উঠছে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন মুর্শিদাবাদের রাণীনগরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ফলে জখম হয়ে মৃত্যু হয়েছে সিরাজুল ইসলাম নামক এলাকার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার। আর তাই নিয়ে সামনে এসেছে তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতার তীব্র মতানৈক্য।

বর্তমানে তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পরিমাণ এতটাই বেড়ে গেছে যে, দলের নেতাকর্মীরা এখন বিরোধী শিবির কে নয়, দলের অন্দরেই ভয় পাচ্ছেন বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের অনেকেরই। এ প্রসঙ্গে জেলা সভাপতি আবু তাহের খান এবং রানীনগর ব্লক সভাপতি শাহ আলমের সম্পর্কের সমীকরণ সামনে এসেছে। আর এবার বোমার ঘায়ে তৃণমূল নেতা সিরাজুল ইসলামের মৃত্যুর সঙ্গে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও চরমে পৌঁছাল বলে জানা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত শাহ আলম দলের অন্যতম জেলা কো-অর্ডিনেটর সৌমিক হোসেনের ঘনিষ্ঠ। অন্যদিকে সিরাজুল ইসলাম এর মৃত্যুতে দলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান এদিন রানীনগর ব্লক সভাপতি শাহ আলমের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ এনেছেন।

পাল্টা শাহ আলমও আবু তাহের খানকে কংগ্রেসের দালাল বলে সম্মোধন করে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন ক্ষমতা প্রদর্শন করার। আর এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পেছনে নাম ভেসে উঠছে সৌমিক হোসেনের। তৃণমূল সূত্রে জানা যাচ্ছে, রানীনগর এলাকায় মূলত ক্ষমতার লড়াই সৌমিক হোসেনের সঙ্গে আবু তাহের খানের। শাহ আলম যেহেতু সৌমিক ঘনিষ্ঠ তাই প্রত্যক্ষভাবে সামনে আসছে শাহ আলম ভার্সেস আবু তাহের খানের বাকবিতন্ডা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, একদিকে আবু তাহের খান জেলা সভাপতি হিসেবে তাঁর আধিপত্য যেমন ধরে রাখতে চাইছেন, ঠিক একইভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে জেলায় ছড়ি ঘোরাতে চাইছেন সৌমিক।

খুব স্বাভাবিকভাবেই এর ফলে শুরু হচ্ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বৃহস্পতিবার সকালে রাণীনগরের গোধনপাড়া এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় তীব্র বোমার লড়াই। এই ঘটনায় রানীনগর ব্লক তৃণমূল সভাপতি শাহ আলম সরকার কংগ্রেসের দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেও তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান কিন্তু সরাসরি দায়ী করেছেন এই ঘটনার জন্য শাহ আলমকে। পাল্টা তিনি মৃত সিরাজুল ইসলামকে শাহ আলম সরকারের লেঠেল বাহিনীর সর্দার বলে দাবি করেছেন। অন্যদিকে মৃত তৃণমূল নেতাকে হাসপাতালের মর্গে দেখতে যাওয়া নিয়েও এদিন আবু তাহের খান স্পষ্ট করেন তাঁর দায়বদ্ধতা তীব্র কটাক্ষের মধ্য দিয়ে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

উপরন্তু তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল ভালো মানুষের দল। তাই ভালো মানুষকে নিয়ে তৃণমূল চলবে। অন্যদিকে রাণীনগরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাহ আলম সরকার সরাসরি জেলা সভাপতি আবু তাহের খানকে কংগ্রেসের দালাল বলে আক্রমণ তো করেইছেন, উপরন্তু তাঁর প্রতি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, যে এলাকার মানুষের হাজার হাজার ভোটে আবু তাহের খান ক্ষমতায় এসেছেন, সেই এলাকায় তিনি আসেন না। অন্যদিকে তৃণমূল শিবিরের একাংশের দাবি, শুভেন্দু অধিকারী জেলার পর্যবেক্ষক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পরেই সৌমিক হোসেন নতুন করে কো-অর্ডিনেটর এর দায়িত্ব পান।

আর তারপর থেকেই শুভেন্দু শিবির ছেড়ে ক্রমশ শাহ আলম সরকার সৌমিকের দলে ভিড়েছেন। আর তখন থেকেই জেলা সভাপতি আবু তাহের খানের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছে। যথারীতি সৌমিকের বার্তাতেও সেই ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এই মুহূর্তে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সব থেকে বড় বাধা রাজ্যের শাসকদলের। হাতে গুনে মাত্র আর কয়েক মাস বাকি বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের।

কিন্তু তার আগে যেভাবে মুর্শিদাবাদ এলাকায় দুই শীর্ষ নেতৃত্বের গন্ডগোলের কারণে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ক্রমশ তীব্র আকার ধারণ করছে, তা কিন্তু অবশ্যই রাজ্যের শাসক দলকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলতে পারে বলে বিশ্বাস রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তবে রানীনগর এলাকার এই ঘটনায় খুব স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের অন্দরেও তুলেছে ঝড়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার মৃত্যু কিন্তু অনেকগুলি প্রশ্নের সম্মুখে দাঁড় করিয়ে দিল রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বকে।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!