প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2014 সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পত্রে ক্ষমতায় এলে রাম মন্দির তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। আর তখন থেকেই বিজেপিকে খোঁচা দিতে শুরু করেছিল বিরোধীরা‌। যেনতেন প্রকারেন ক্ষমতা দখল করতে বিজেপি সব সময় রাম মন্দিরের ইস্যুকে ব্যবহার করে বলে দাবি করেছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তবে অবশেষে বহু মামলার জটিলতা কাটিয়ে সেই রাম মন্দির গঠনের স্বপ্ন বাস্তব রূপ নেয়। কিন্তু এবার সেই অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ করার ক্ষেত্রে ব্যাপক চাপে পড়ে গেল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।

যেখানে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে রাম মন্দির নির্মাণের জন্য যে ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হল অখিলেশ সিং যাদবের সমাজবাদী পার্টি এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। যাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বহু স্বপ্নের এবং বহু প্রতীক্ষিত এই রাম মন্দির। কিছুদিন আগে মামলার নাগপাশ কাটিয়ে তা গঠন করতে উদ্যত হয় কেন্দ্র। কিন্তু এবার যেভাবে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে গঠন করা ট্রাস্টের বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ উঠল, তাতে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে গিয়েছে গোটা দেশজুড়ে।

সূত্রের খবর, রবিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন সমাজবাদী পার্টির পবন পান্ডে। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ও ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে এই রাম মন্দির গঠনের ক্ষেত্রে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন তিনি। পবনবাবু বলেন, “আবাসন ব্যবসায়ী একজনের কাছ থেকে দু কোটি টাকার জমি কিনে কয়েক মিনিট পরেই সেই জমি সাড়ে 18 কোটি টাকায় রাম মন্দিরকে বিক্রি করে। ওই জমিতে কি এমন সোনা রয়েছে, যাতে কয়েক মিনিটে তার দাম বেড়ে গেল! তারমানে সাড়ে 16 কোটি টাকা লুট হয়েছে। এই ঘটনার সিবিআই তদন্ত হওয়া উচিত।”

পাশাপাশি এই রাম মন্দিরের জমি দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা যায় আম আদমি পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহকে। এদিন তিনি বলেন, “কেউ ভাবতেও পারেননি, ভগবান রামের নাম নিয়ে দুর্নীতি হতে পারে। কিন্তু নথি দেখে বোঝা যাচ্ছে, কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে।” আর দুই বিরোধী নেতার রাম মন্দির নিয়ে এই বিস্ফোরক অভিযোগ যে ভারতীয় জনতা পার্টিকে যথেষ্ট চাপের মুখে ফেলে দিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যেখানে প্রতি মুহূর্তে রাম মন্দির নিয়ে বড়াই করতে দেখা যেত বিজেপি নেতাদের, সেখানে ভগবান রামের নামে মন্দির তৈরি হওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার সাথে সাথে যেভাবে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল, তাতে রীতিমত ব্যাকফুটে গেরুয়া শিবির।

তবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতি নিয়ে এই অভিযোগ উঠলেও, তাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এদিন এই প্রসঙ্গে রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্রের সম্পাদক চম্পত রাই বলেন, “শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অভিযোগের পালা চলছে। মহাত্মা গান্ধী হত্যার জন্যও আমাদেরকে দায়ী করা হয়েছিল। তাই আমরা এই ধরনের কোনো অভিযোগকে গুরুত্ব দিই না।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরোধীদের পক্ষ থেকে যখন প্রশ্ন উঠেছে, তখন ভগবান রামকে নিয়ে তোলা সেই প্রশ্নের বিতর্ক থামানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া উচিত কেন্দ্রীয় সরকারের। এক্ষেত্রে বহুপ্রতীক্ষিত রাম মন্দির হওয়ার পরে দুর্নীতির অভিযোগ বিরোধীদের চাপে ফেলে গোটা ঘটনার তদন্ত করানোতে সায় দেওয়া উচিত কেন্দ্রের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই ব্যাপারে কেন্দ্র কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং বিরোধীদের অভিযোগ কতটা সত্যি হয়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।