এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ‘দুর্নীতির’ দায়ে রাজ্যের প্রাক্তন হেভিওয়েট মন্ত্রীকে রাতভর চিরুনি তল্লাশি পুলিশের!

‘দুর্নীতির’ দায়ে রাজ্যের প্রাক্তন হেভিওয়েট মন্ত্রীকে রাতভর চিরুনি তল্লাশি পুলিশের!

সারা দেশজুড়ে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হচ্ছেন প্রাক্তন নেতারা। প্রমাণ সমেত তাঁরা গ্রেপ্তার হচ্ছেন আইনের হাতে। এখনো পর্যন্ত প্রচুর হেভিওয়েট নেতারা আইনের জালে জড়িয়েছেন। এ রাজ্যেও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত শাসক দলের নেতা-নেত্রীদের নাম একের পর এক তদন্তের সূত্র ধরে উঠে আসছে তদন্তকারীদের হাতে। একইভাবে দুর্নীতির অভিযোগ আরেক রাজ্য ত্রিপুরাতেও।

সেখানকার বাম আমলের প্রাক্তন মন্ত্রীরা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। বর্তমানে ত্রিপুরার প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই সূত্রে তাঁকে ধরার জন্য তল্লাশি শুরু হয়েছে। আর তাই নিয়েই শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন বর্ষণ করছেন প্রাক্তন বাম শাসকদল।

বিধানসভার বিরোধী দলের উপনেতা বাদল চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের নামে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ত্রিপুরার বাম নেতাদের। অভিযোগ করা হচ্ছে, বিনা সার্চ ওয়ারেন্টে বাদল বাবুর খোঁজে রবিবার রাতভর তল্লাশি চালায় ত্রিপুরা পুলিশ সিপিএমের বিভিন্ন নেতা-নেত্রীদের বাড়িতে।

সোমবার ত্রিপুরায় সিপিএমের রাজ্য দপ্তর ঘেরাও করা হয় পুলিশ দিয়ে। এদিন আদালত অবশ্য বাদল বাবুর গ্রেফতারিতে স্থগিতাদেশ জারি করেছে। বাদলবাবুর বিরুদ্ধে প্রশাসকের এই অতি সক্রিয়তা জারি করার প্রতিবাদে রাজধানী আগরতলা সহ ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেন বামেরা।

এদিন এই মিছিলে সিপিএমের প্রথম সারির প্রায় সব নেতারাই পথে নামেন। তাঁরা অভিযোগ জানান, সিপিএম নেতা বাদল বাবুর বিরুদ্ধে বিজেপি সরকার ষড়যন্ত্র করছে। জানা গেছে, ত্রিপুরার প্রাক্তন পূর্তমন্ত্রী বাদল চৌধুরী, প্রাক্তন মুখ্য সচিব ওয়াই পি সিং এবং পূর্ত দপ্তরের প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ারিং-ইন-চিফ সুনীল ভৌমিকের বিরুদ্ধে বিজেপি সরকারের ভিজিলেন্স দপ্তর আগরতলা পশ্চিম থানায় অভিযোগ দায়ের করে। এবং এর পরেই গ্রেপ্তার হন সুনীল ভৌমিক।

অন্যদিকে, সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বাদল চৌধুরীকে ধরার জন্য পুলিশি তৎপরতা চোখে পড়ে। বাদল চৌধুরীর সরকারি আবাসন এর পাশাপাশি সিপিএমের পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা সম্পাদক পবিত্র করের বাড়িতেও বাদল চৌধুরীর খোঁজে তল্লাশি করা হয়। কিন্তু সেখানেও বাদল বাবুকে পাওয়া যায়না। আর তারপরেই বাদল বাবুর উদ্দেশ্যে সিপিএমের সদরদপ্তরে পৌঁছে যায় ত্রিপুরার বিশাল পুলিশবাহিনী।

এদিন ত্রিপুরার সিপিএম নেতারা অভিযোগ জানিয়েছেন, বাদল চৌধুরীর খোঁজে পুলিশ এলে তাঁরা বারেবারে পুলিশের কাছে সার্চ ওয়ারেন্ট দেখতে চান। কিন্তু পুলিশ তা দেখাতে পারেননি। বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ ত্রিপুরা আদালতের নির্দেশে পুলিশি তৎপরতা বন্ধ হয়। কারণ, বাদল চৌধুরীর ওপর গ্রেপ্তারিতে স্থগিতাদেশ জারি করে আদালত।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

অন্যদিকে, বিজেপি ভিজিলেন্স দপ্তরের অভিযোগ 2008-2009 আর্থিক বছরে বেশ কয়েকটি প্রকল্পকে একসঙ্গে করে কস্ট প্লাস পদ্ধতিতে ত্রিপুরা সরকার বেশ কয়েকটি কোম্পানিকে বরাত দেয়। যার বেশিরভাগই পায় বেশকিছু রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। এই অভিযোগেই বাদল চৌধুরীর বিরুদ্ধে পুলিশি তৎপরতা। যদিও সিপিএমের দাবি, ভিজিলেন্স তদন্ত চলাকালীন বাদল চৌধুরী সব রকম সহযোগিতা করেছেন।

সাংবাদিক সম্মেলন করেও বাদল চৌধুরি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় দুর্নীতির অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। এবং তারপরেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে যে পুলিশী তৎপরতা চলছে, তার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে বিরোধীদল। অভিযোগ ত্রিপুরার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশকে ব্যবহার করছেন সিপিএমের প্রাক্তন প্রবীণ নেতাকে কালিমালিপ্ত করতে।

এদিন ঘটনার নিন্দা করে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি গোপাল রায় বলেন, দুর্নীতির তদন্ত হোক স্বচ্ছভাবে। আইন-আদালত আছে। এফআইআর হলেই যে সে দোষী হবে তার কোন ভিত্তি নেই। এই সঙ্গে গোপাল রায় আরো বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে এই মুহূর্তে আইনের কোন শাসন নেই। অন্যদিকে, বাদল বাবুদের আমলে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করলেও বর্তমানে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধেও তিনি বলেন, তদন্তের নামে বিজেপি সরকার প্রহসন চালাচ্ছে।

সমস্ত বিষয় পরিলক্ষণ করে বিজেপি দলের মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন, ত্রিপুরা রাজ্যে এই মুহূর্তে গণতন্ত্র রয়েছে। পুলিশ ও আদালত আইন মেনেই কাজ করছেন। শুধু বাদল বাবুই নন, বিভিন্ন দুর্নীতিতে যুক্ত অভিযুক্তরা শাস্তি পাক সেটা রাজ্যবাসী চায়। অতএব আইন আইনের পথে গিয়ে এই সমস্ত ব্যবস্থা করবে বলে জানান তিনি।

সমস্ত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে বিরোধীদলের দাবি, রাজ্য বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি চালাচ্ছে। ত্রিপুরার শাসনভার গ্রহণ করার পরেই বিরোধীদল সিপিএমকে কোণঠাসা করার জন্য বিভিন্ন চক্রান্ত শুরু করেছে বিজেপি সরকার। আর তার জন্য তাঁরা আইনকে হাতের মুঠোয় এনে ব্যবহার করছে। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, দুর্নীতিকে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাই যে দলই দুর্নীতি করুক, তার শাস্তি হওয়া উচিত। আইন মোতাবেক আপাতত সমগ্র ঘটনার দিকে নজর রাখছে ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!