এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > এবার বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে! রাজ্য নেতৃত্ব চরম বিড়ম্বনায়

এবার বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে! রাজ্য নেতৃত্ব চরম বিড়ম্বনায়


রাজনৈতিক দলগুলোর সুবাদে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব খুব পরিচিত শব্দ এখন আমাদের কাছে। বরাবরই শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ ওঠে। যার ফলে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলগুলি শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে তাঁদের প্রতিনিয়ত কটাক্ষ করে থাকে। এবার সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব হানা দিয়েছে রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির অন্দরমহলেও।

ইতিমধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে। তা সত্বেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটেই চলেছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে। বর্তমানে বসিরহাটের নানাপ্রান্তে বিজেপির মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্র আকার নিয়েছে। যা নিয়ে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় বিজেপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রতিদিনই ঘটছে ঝগড়া, গালিগালাজ ও মারধরের ঘটনা। সম্প্রতি এই এলাকায় মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল। আর এই নিয়ে এবার বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে।

বসিরহাটে সাংগঠনিক জেলার অধীনে বিজেপির ত্রিশটি মন্ডল আছে। পূর্বপরিকল্পিত অনুযায়ী এইসব মন্ডলীর সভাপতি নির্বাচন শুরু হয়ে গেছে। এবং এই মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরে বিজেপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ শুরু হয়েছে। বসিরহাটের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হয়েছেন গণেশ ঘোষ। আর তারপর থেকেই এই বিরোধ আরো বেশি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বলে সূত্রের খবর। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী জমি হারানোর ভয়ে মন্ডল সভাপতি পদে নিজেদের লোককে দেখতে চাইছেন। উল্টোদিকে বিরোধী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে প্রার্থী দেওয়ায় গন্ডগোল বাঁধছে।

এই ঘটনায় অবশ্য বসিরহাট জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ জানিয়েছেন, “এটা গোষ্ঠী কোন্দল নয়। মানুষের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা। মানুষ এগিয়ে এসে কাজ করে মন্ডল সভাপতি হতে চাইছেন। তিনি আরো বলেছেন, “সামনে পুরভোট। তারপর বিধানসভা ভোট। অনেকেই বিজেপির মন্ডল সভাপতি হতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন।” তবে জেলা সভাপতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেকোন রকম বিশৃংখলাকে বরদাস্ত করা হবে না।

বিজেপি সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, কিছুদিন আগেই হিঙ্গলগঞ্জ গ্রামীণ মন্ডল সভাপতি নির্বাচন ঘিরে ব্যাপক গন্ডগোল লাগে সেখানে। বিজেপির এক গোষ্ঠীর অভিযোগ নির্বাচনে রিগিং হয়েছে। এবং সেই নিয়ে দলের রিটার্নিং অফিসারের সাথে গন্ডগোল হয়। অভিযোগ ওঠে ক্ষমতাসীন দলটি ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন।

অন্যদিকের পাওয়া খবর অনুযায়ী, বিজেপির এক কর্মীর বাড়িতে দলীয় সংগঠনের নির্বাচন ঘিরে ঢালাও খরচ হয়েছে বলে বিরোধী গোষ্ঠী অভিযোগ জানিয়েছে। একইভাবে সন্দেশখালিতেও দুটি গোষ্ঠী বিপ্লব মন্ডল ও শিবু পান্ডার গোষ্ঠীর মধ্যে গন্ডগোল, হাতাহাতি শুরু হয় একই বিষয়ে। শুক্রবার বসিরহাটের সংগ্রামপুরেও একই বিষয় নিয়ে গন্ডগোল হয়। বাদুড়িয়া থেকে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গন্ডগোলের খবর পাওয়া যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

বসিরহাটের টাউন হল এলাকায় মন্ডল সভাপতি নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কয়েক দিনের ধরেই বিজেপির কোন্দল একেবারে প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এমনকি সেখানকার সাংগঠনিক কার্যালয়ের মধ্যেই গন্ডগোল শুরু হয়ে যায়।এই ঘটনা নিয়ে বিজেপির একটি সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা গেছে, মন্ডল সভাপতির নির্বাচন শুরু হয় গোপন ব্যালটে ভোটাভুটির মাধ্যমে।

আর সেই নির্বাচনের শুরুতেই দুই পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়। এক পক্ষ ভোটার তালিকা ছিঁড়ে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। এরমধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি। বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে মন্ডল সভাপতি নির্বাচন স্থগিত করে দেন দলের নেতা রাকেশ মৃধা। আর এরপর জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ দলীয় কার্যালয় ত্যাগ করেন।

যদিও জেলা সভাপতি গণেশ ঘোষ সমস্ত বিষয়টিকে অস্বীকার করে জানিয়েছেন, “ভোটে কোন ঝামেলা হয়নি। বুথ কমিটি গঠন সম্পূর্ণ না হলে মন্ডল সভাপতি নির্বাচন বন্ধ রাখা হয়েছে দলের সংবিধান মেনেই।”

অন্যদিকে, বিজেপির আরেক গোষ্ঠীর দাবি, জেলা সভাপতির অনুগামীরা পরাজিত হবে এটা জেনেই ইচ্ছাকৃতভাবে মন্ডল সভাপতি নির্বাচন বানচাল করা হচ্ছে। পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঝামেলা শুরু করা হচ্ছে। যদিও বিজেপির আরেক গোষ্ঠী এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছে।

সমস্ত ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, রাজনৈতিক দল মাত্রই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দেবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত। ক্ষমতার এক বৃহৎ গোষ্ঠীর মধ্যে বহু গোষ্ঠী গড়ে ওঠে আর এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগে। তাই শুধুমাত্র সাংগঠনিক জোরে যে দল ক্ষমতা দখলের লড়াই লড়ছে, তাদের এই মুহুর্তে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে।

সেই কারণে এই মুহূর্তে বিরোধী রাজনৈতিক দলটির উচিত সাংগঠনিক জোরকে ফিরিয়ে আনা। সমস্ত ঘটনার ওপর নজর রেখেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও এই মুহূর্তে এই বিষয় নিয়ে দলের অন্দরে তীব্র বিতর্ক শুরু হলেও প্রকাশ্যে বিজেপির পক্ষ থেকে এখন কিছুই বলা হচ্ছে না। সমগ্র পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

ট্যাগড
Top
error: Content is protected !!