শারদীয় উৎসবের মধ্যেই শাসক-বিরোধী দল একে অপরের প্রতি অভিযোগ করতে থাকে, একটি খুন নিয়ে। উল্লেখ্য, লোকসভা ভোট পরবর্তী সময়ে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ক্রমাগত বেড়েছে খুনোখুনির রাজনীতি। দুর্গাপূজার মধ্যেও এই হানাহানির জেরে বেশ কয়েকটি প্রাণ গেছে। তার মধ্যে ছিলেন, তৃণমূলের দলীয় নেতা কুরবান আলী শাহের মৃত্যুর ঘটনা।

পাঁশকুড়া এলাকায় এই হত্যার ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর শাসক বিরোধী দল একে অন্যের ওপর দোষারোপ করতে শুরু করে। এই দোষারোপের মধ্যেই বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন শাসকদলের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। আর এবার এই হত্যাকাণ্ডে নাম জড়ালো বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষের।

সম্প্রতি পাঁশকুড়ার তৃণমূল পার্টি অফিসের মধ্যেই খুন হয়েছিলেন তৃণমূল দলীয় সমর্থক ও পঞ্চায়েতের সহকারি সভাপতি কুরবান আলী শাহ। এই ঘটনার পর তৃণমূলের তরফ থেকে বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান এর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়। বলা হয়, তিনি এই খুনের ঘটনার সাথে জড়িত।

গত নবমীর রাতে খুন হন পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি কুরবান আলী শাহ। খুব কাছ থেকে এই নেতাকে গুলি করে খুন করা হয়। প্রসঙ্গত এই নিহত তৃণমূল নেতা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ঘটনার দিন কুরবান আলী দলীয় কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এবং ওই সময়ে দুষ্কৃতীরা এসে তাঁকে গুলি করে। ঘটনার প্রথম থেকেই তৃণমূল বিজেপিকে এই ঘটনার জন্য দায়ী করে। ঘটনার পর স্থানীয় বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানকে এই খুনের পেছনে আছে বলে আক্রমণ করা হয় তৃণমূলের তরফ থেকে।

এবার নতুন করে কুরবান আলী শাহের স্ত্রীর একটি অভিযোগের ভিত্তিতে চাঞ্চল্য ছড়ালো রাজনৈতিক মহলে। কুরবান আলির স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, বিজেপি নেত্রী ভারতী ঘোষের বিরুদ্ধে। তাঁর দাবি, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে ভারতী ঘোষ কুরবান আলি শাহকে রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। আর তারপরেই এই হত্যার ঘটনা ঘটে। সুতরাং তিনি সমস্ত ঘটনার পেছনে ভারতী ঘোষের হাত দেখছেন। যদিও ভারতী ঘোষের তরফ থেকে এই অভিযোগটি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা হয়েছে।

যদিও খুনের পর সাত দিন কেটে গেছে। এখনো পর্যন্ত পুলিশের হাতে অভিযুক্ত ধরা পড়েনি। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে, এই ঘটনার সিআইডি তদন্ত করার। কিন্তু মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন যে, জেলা পুলিশ এই ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করবে। সিআইডির কোন প্রয়োজন পড়বে না‌।

এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত পুলিশি তদন্ত চলছে। তবে ঘটনার ওপর কড়া নজর রেখেছে শাসকদল। এই ঘটনায় বিরোধী দলের দাবি, তৃণমূল নেতা কুরবান আলী শাহ এর হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে। সম্পূর্ণ ঘটনাটি বিবেচনা করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, বর্তমানে তৃণমূল দলে যে পরিমাণ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের মাত্রা বেড়ে গেছে, তাতে এরকম খুনোখুনি, হানাহানি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সমগ্র ঘটনাটির ওপর কড়া নজর রেখেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।