এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > তৃণমূলের অন্দরে চলছে কি ভয়ঙ্কর ‘ডামাডোল’? মমতার ঘুম উড়িয়ে ফাঁস করে দিলেন হেভিওয়েট বিধায়ক?

তৃণমূলের অন্দরে চলছে কি ভয়ঙ্কর ‘ডামাডোল’? মমতার ঘুম উড়িয়ে ফাঁস করে দিলেন হেভিওয়েট বিধায়ক?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – হুগলি জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত। বহু চেষ্টার পরেও যেন রোধ করা যাচ্ছে না দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দলের বিভিন্ন নেতা একাধিকবার সরব হয়েছেন দলের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত হুগলি জেলায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে হস্তক্ষেপ করে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। জেলায় দলের অনৈক্য দূর করতে শীর্ষ নেতৃত্বের পক্ষ থেকে কোর কমিটি গঠন করা হয়। যে কোর কমিটি দলকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে রুখতে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়বার নির্দেশ দিয়েছে।

কিন্তু এতসব কিছুর পরেও গত রবিবার হরিপালে তৃণমূল দলের ব্লক সম্মেলনে উপস্থিত হননি জেলা পরিষদের দুজন তৃনমূল সদস্য। সেদিনের এই সভায় তাঁরা ডাক পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। অনুপস্থিত এই দুজনের মধ্যে একজন হলেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন প্রধান, অপরজন জেলা পরিষদ সদস্য। এদিকে গত রবিবার হুগলি জেলার সিঙ্গুর ব্লকেও দলের এক কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। এই সম্মেলনে দলের ঐক্য নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলতে দেখা গেল সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে।

গতকাল রবিবার সিঙ্গুরের ঘনশ্যামপুরের কর্মী সম্মেলনে দলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুললেন তিনি। প্রসঙ্গত গত ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর সিঙ্গুরের তিনটি পঞ্চায়েতে বিজেপির সমর্থন পঞ্চায়েত বোর্ড গঠিত হয়েছে বলে অভিযোগ জানালেন সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। এই তিনটি পঞ্চায়েতের নির্বাচনের টিকিট পাওয়াকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের অনুগামীদের সঙ্গে হরিপাল বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বেচারাম মান্নার অনুগামীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলেছিল টানাপোড়েন ও দ্বন্দ্ব।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর সিঙ্গুর-২ পঞ্চায়েতের প্রধান করা হয় এক নির্দল প্রার্থীকে। যিনি বেচারাম ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আছেন। আবার মির্জাপুর-বাঁকিপুর ও বারুইপাড়া-পলতাগড় পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানও বেচারাম মান্নার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আছেন। গত রবিবার সিঙ্গুরের এই কর্মী সম্মেলনে এই তিন পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে একাধিক অভিযোগ তুললেন সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। এ প্রসঙ্গে তিনি জানালেন যে, বিজেপির বিরুদ্ধে তারা সবসময় লড়াই করছেন, কিন্তু সিঙ্গুরে এটা কি চলছে?

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এ প্রসঙ্গে তিনি জানালেন যে, এটা খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার যে, যে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করছেন, সেই বিজেপির সমর্থন নিয়েই পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন করা হয়েছে। অথচ জেলার নেতারা বিজেপিকে পরাস্ত করতে মঞ্চে এক হবার কথা বলছেন, বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছেন। কিন্তু সেই সব নেতার প্রচারে বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে পারছেন না তিনি। তার অভিযোগ, মুখে যারা ঐক্যের কথা বলছেন, তারাই বিজেপি, সিপিএম এর সঙ্গে মিশে গিয়ে তাদের মনোনীত ব্যক্তিকেই প্রধান করে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, সর্বত্রই চলছে এমন ব্যাপার।

সিঙ্গুরের এই তিন পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন বিষয়ে অভিযোগ জানাবার পর দলের পূর্বের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ তোলেন সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। এ প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, “আমরা নেতারা যে খেলা খেলছি, তা ঐক্যের নয়। গত বারে প্রার্থী হওয়ায় আমার খড়ের মূর্তি বানিয়ে পুড়িয়েছিল দলের লোকেরাই। এ বারেও যদি সিঙ্গুরে তাঁদের পছন্দের প্রার্থী না হয়, তা হলে এ বারেও খড় পোড়ানো হবে, সে আশঙ্কা রয়েছে।” তবে, সিঙ্গুরের এই তিন পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের বিষয়ে তৃণমূল বিধায়কের এই বক্তব্য মেনে নেয়নি বিজেপি শিবির।

সিঙ্গুরের জনৈক বিজেপি নেতা সঞ্জয় পান্ডে জানিয়েছেন যে, এই তিন পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে বোর্ড গঠনে, প্রধান নির্বাচনে কোনো সমর্থন করেনি বিজেপি। অন্যদিকে গত রবিবারের দলের বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথ বাবুর একাধিক অভিযোগ প্রসঙ্গে হুগলি জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব জানালেন যে, বয়সে প্রবীণ রবীন্দ্রনাথ বাবু তাঁর কথা জানিয়েছেন। তবে তাঁরা আগামী ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের প্রকৃত ঐক্য চাইছেন। কোথাও যদি কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি দেখা যায়, তবে তাঁরা শুধরে নেবেন।

তবে রবীন্দ্রনাথ বাবুর বক্তব্য সম্পর্কে কোনো প্রতিক্রিয়া জানান নি হরিপালের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না। প্রসঙ্গত, হুগলি জেলায় দলের অন্তর্দ্বন্দ্বর বিষয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল তৃণমূল। একাধিকবার দলের বিভিন্ন নেতারা দলের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেই চলেছেন। এমনই পরিস্থিতি যদি চলতে থাকে, তবে আগামী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় যথেষ্ট বেকায়দায় পড়তে পারে শাসকদল তৃণমূল। এমনটাই মনে করছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!