প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বর্তমানে করোনার প্রতিষেধকের আশায় দিন গুনছেন বিশ্ববাসী। সারাবিশ্ব এমনিতেই করোনার তাণ্ডবে রীতিমতো দিশাহারা। এই অবস্থাকে সামাল দিতে এখন প্রথম প্রয়োজন করোনার প্রতিষেধকের। আর সেদিকে নজর দিয়ে ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারে চেষ্টায় রত। কিন্তু নিশ্চিতভাবে এখনো করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কারের কোন খবর পাওয়া যায়নি। কিন্তু প্রতিষেধক আবিষ্কারের আগেই এবার বৃটেনের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা মানবজাতির সামনে নিয়ে এলো একটি অত্যন্ত সুখবর। জানা যাচ্ছে, বৃটেনের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি গবেষণা চলছিল।

সেই গবেষণায় দেখা গেছে মাউথওয়াশ দিয়ে 30 সেকেন্ডের মধ্যেই করোনার জীবাণুকে হত্যা করা যায়। গত সপ্তাহে দীর্ঘ গবেষণার পর একটি রিপোর্ট সামনে এসেছে। কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা হাসপাতলে একটি সমীক্ষা চালাচ্ছেন করোনা রোগীদের ওপর। আর সেই সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, যে কোন সাধারণ over-the-counter মাউথওয়াশ করোনার জীবাণু ধ্বংস করতে সক্ষম। বিজ্ঞানীদের দাবি, মাউথ ওয়াশে সিটিপাইরিডিনিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করা হয়। আর সেই রাসায়নিকটি করোনার জীবাণুকে মেরে ফেলতে সক্ষম এবং তা পরীক্ষাগারে রীতিমতো হাতে কলমে পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন।

তবে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় মাউথ ওয়াশ কিভাবে ব্যবহার করা হবে তা নিয়ে এখন রীতিমতো চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। কারণ মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে গেলে তা সরাসরি রোগীদের ফুসফুসে যাতে পৌঁছায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু প্রাকৃতিক ভাবে মাউথওয়াশ কখনোই ফুসফুসে যাওয়া সম্ভব নয় সে কথা সবার জানা। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, পরীক্ষাগারে সিটিপাইরিডিনিয়াম ক্লোরাইডযুক্ত দুটি রিঞ্জ ও ইথানল করোনার জীবাণু্র উপর প্রয়োগ করে দেখা গিয়েছে, মাত্র 30 সেকেন্ডের মধ্যেই জীবাণুর মৃত্যু ঘটেছে। আর সে কারণেই আপাতত দেখা হচ্ছে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের ওপর মাউথওয়াশ কতটা কাজ করে।

ইতিমধ্যে কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই নিয়ে দীর্ঘ পরীক্ষা নিরীক্ষার আবশ্যক। আর তা সম্পূর্ণ হলে ফলাফল আগামী বছরের গোড়ায় সামনে আসবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের সমীক্ষার রিপোর্ট এমন সময় সামনে এসেছে, যখন গোটা বিশ্ব করোনা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার রাস্তা খুঁজে চলেছে। সেক্ষেত্রে মাউথওয়াশের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পরীক্ষার ফলাফল কিন্তু যথেষ্ট আশার আলো দেখাচ্ছে। আগামী দিনে এটি কিন্তু শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে করোনার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে করোনা পরিস্থিতি এখন এমন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে যে প্রতিষেধক ছাড়া আর বাঁচার উপায় নেই বলেই জানিয়ে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই কথা অনুযায়ী প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের সাহায্যে করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে বলে জানা গেছে। কিন্তু তার মধ্যেই যেভাবে মাউথওয়াশ নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এলো, তা যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক বলে মনে করা হচ্ছে। শুধুমাত্র মাউথওয়াশ সরাসরি ব্যবহার নয়, মাউথওয়াশের উপকরণ দিয়ে ওষুধ প্রস্তুত করা যায় কিনা সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।