এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > এবার কি সাংসদ দেবের সঙ্গে স্থানীয় বিধায়কের দ্বন্দ্ব বাড়ছে? জল্পনা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে!

এবার কি সাংসদ দেবের সঙ্গে স্থানীয় বিধায়কের দ্বন্দ্ব বাড়ছে? জল্পনা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে!


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আগামী বিধানসভা নির্বাচনে দলকে জয়ের মুখ দেখাতে বারবার দলের অন্তদ্বন্দ্ব ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে রোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরও তার টিম ‘আই প্যাক’-ও বারবার চেষ্টা চালাচ্ছে দলের অন্তদ্বন্দ্বর ছিদ্রগুলি ভরাট করতে। কিন্তু এতকিছুর পরেও নানা স্থানে প্রকাশ হয়ে পড়ছেই তৃণমূলের মতান্তর ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। সম্প্রতি এমনি একটি অন্তদ্বন্দ্ব-এর আভাস পাওয়া গেল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে। সূত্রে জানা গেছে, ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব ও ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলুইয়ের অনুগামীদের মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে মতান্তর ও দূরত্ব।

অনেকক্ষেত্রেই তাদের মধ্যেকার এই দূরত্ব তাদেরকে ঠান্ডা লড়াইয়ের কিনারায় এনে ফেলছে। তবে, বেশ কিছু কারণেই এই লড়াইতে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে শঙ্কর দোলুইয়ের অনুগামীরা, যা নিয়ে ক্রমশ বাড়ছে ক্ষোভ। সম্প্রতি, কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন ব্যাঙ্কের ক্ষমতার চাবিকাঠি শঙ্কর দোলুইয়ের শিবিরের হাতছাড়া হয়ে দেবের শিবিরের হাতে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে গতকাল বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুরে একটি বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি।

এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ দেব। তবে, বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলুই। গতকাল দেবের ঘাটালে একটি সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে যাবার পরিকল্পনা থাকলেও, নিজের পরিকল্পনা শেষপর্যন্ত বাতিল করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ” ঘাটালে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু এটা উদ্যাপনের সময় নয়। এ সবের জন্য প্রচুর সময় পড়ে রয়েছে। আমি গেলে ভিড় হত। তাই যাইনি।’’ আর এই বৈঠকে বিধায়ক শঙ্কর দোলুইয়ের প্রতি একাধিক প্রশংসা বার্তা, কৃতজ্ঞতাও তাঁর সঙ্গে গভীর সম্পর্কের কথা ব্যক্ত করেছেন দেব।

দেব জানিয়েছেন যে, শঙ্কর বাবুকে তিনি নিজের বড় দাদার মতো মনে করেন, তাঁর সঙ্গে দেবের কোন রাজনৈতিক দূরত্বের প্রশ্নই ওঠেনা। এই বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দেব জানিয়েছেন, ‘‘শঙ্কর দোলুইয়ের হাত ধরেই আমি রাজনীতিতে এসেছি। আমার দু’টো নির্বাচনেই শঙ্করদা আমার প্রতিনিধি ছিলেন। ওঁর কাছে রাজনীতির অনেক কিছুই শিখেছি। ঘাটালের যে তিন-চারজন আমার খুব কাছের মানুষ, উনি তার মধ্যে একজন। শঙ্করদা আমার খুব কাছের মানুষ। আমার মনে হয় না যে, আমার সঙ্গে শঙ্করদার কোনও দূরত্ব তৈরি হয়েছে।’’

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

শঙ্কর বাবুর প্রতি প্রশংসাসূচক কণ্ঠে দেব আরো জানিয়েছেন, ‘‘উনি বহু বছরের রাজনীতিক। ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করছেন। কলেজে রাজনীতি করেছেন। কংগ্রেসে ছিলেন, সিপিএমে ছিলেন, তারপর তৃণমূলে এসেছেন। ওঁর এত বছরের রাজনীতির অভিজ্ঞতা যে কোনও দলের জন্য বড় পাওনা।’’ এভাবে নিজের ও শঙ্কর বাবুর অনুগামীদের মধ্যে যে ঠান্ডা লড়াইয়ের উপক্রম দেখা যাচ্ছিলো, সেখানে দেবের এই বক্তব্যগুলি অনেকটাই বরফ গলাতে পারবে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

শঙ্কর বাবুও একারণে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ দেবের প্রতি। দেবের প্রতি তাঁকে বলতে শোনা গেছে, ” ‘‘দেব ভাল ছেলে। ওকে কেউ কেউ ভুল বোঝাচ্ছে।’’  অন্যদিকে গতকাল দেব জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অজিত মাইতিকে সঙ্গে নিয়ে জেলার কালেক্টরেটে গিয়ে দেখা করেছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমলের সঙ্গে। এ প্রসঙ্গে দেব জানিয়েছেন, “ঘাটালে বন্যা মোকাবিলায় আমরা কতটা প্রস্তুত আছি, সেই খোঁজখবর নিয়েছি।’’

প্রসঙ্গত, ইতিপূর্বে সাংসদ দেবের ঘোষিত ঘাটালের মাস্টার প্লানের কাজ আশানুরূপ গতি লাভ করতে তেমন একটা সক্ষম হতে পারেনি । এলাকার মাস্টার প্লানের বিষয়ে দেবকে প্রশ্ন করা হলে , তার উত্তরে তিনি জানান, “ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আমি প্রথম দিন থেকেই লড়ে যাচ্ছি। আমি, মানসদা (মানস ভুঁইয়া) সবাই। কেন হচ্ছে না সাধারণ মানুষ বোঝে। ঘাটালের মানুষকে রাজনীতি বোঝানোর দরকার নেই। আমরা যদি সরকারের (কেন্দ্রে) মধ্যে থাকতাম, এটা অনেক আগেই হয়ে যেত।’’

উল্লেক্ষ্য, সাংসদের আসনে থেকেও দেব কিন্তু প্রকৃতপক্ষে একজন অভিনেতা তথা সমাজের মান্যিগণ্যিদের মধ্যে আছেন, তাই নিছক রাজনীতি , গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এসবের কিন্তু অনেকটা উপরেই তাঁর অবস্থান। এমনটাই অনেকে মনে করেন। কিন্তু এই মহাতারকাকে শেষপর্যন্ত এরকম প্রকাশ্যে শঙ্কর দোলুই -এর বিবৃতি কেন দিতে হলো? আর কেনই বা প্রয়োজন হলো এতগুলি প্রসংসা বাক্যের? তাহলে কি দলে কোথাও ছন্দপতন শুরু হয়ে গেছে? তবে কি সত্যিই দুই শিবিরে মতান্তর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বেড়েছে? আর দলের বিভাজন রুখতেই কি দেবের এই প্রয়াস? এমনি একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!